ইউক্রেনে পশ্চিমা মুখোশ উন্মোচিত
ইউক্রেনে পশ্চিমা মুখোশ উন্মোচিত - ছবি : সংগ্রহ
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পশ্চিমা বিশ্বের মুখোশ উন্মোচিত করে দিয়েছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিলিয়ে যাওয়ার পর মুসলমানদের উত্থান ঠেকাতে তিন তিনটি যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটানো হয়। ইরাককে কুয়েত দখলের উসকানি দিয়ে পরে প্রতিক্রিয়ায় ইরাককে প্রথমবার ধ্বংস করা হলো। উসামা বিন লাদেন নামক এক ব্যক্তির আশ্রয়দানকারী হওয়ার অজুহাতে আফগানিস্তান দখল করা হয় এবং গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক মিথ্যা তথ্য বানিয়ে ‘ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র’ মজুদের অজুহাত দেখিয়ে দ্বিতীয়বার ইরাককে ধ্বংস করা হয়েছিল। এভাবে সন্ত্রাসের নামে মুসলিম দেশগুলোকে ধ্বংসের পর যখন পূর্বদিকের দু’টি শক্তি চীন ও রাশিয়া মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তখন মার্কিন নেতৃত্বের পশ্চিমা শক্তি হকচকিত হয়ে ওঠে এবং তাদেরকে ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত করার জন্য রাশিয়াকে উসকানি দিয়ে যুদ্ধে জড়ানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। ফলে রাশিয়ার মাথা গরম একনায়ক ভ্লাদিমির পুতিন সেই ফাঁদে পা দিয়ে ইউক্রেন আক্রমণ করে বসেন।
সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর ‘ন্যাটো’ জোটের প্রাসঙ্গিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও আমেরিকা এই জোটকে পরিচর্যা দিয়ে পূর্বদিকে প্রসারিত করতে থাকে এবং খোদ রাশিয়ার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে। সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ বা রিপাবলিক ইউক্রেনকেও প্রলুব্ধ করতে থাকে ন্যাটোতে যোগদানের জন্য। এমনকি ২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রুশপন্থী খ্রিষ্টান অর্থডক্স এবং পশ্চিমাঞ্চলের ইউরোপীয়পন্থী ক্যাথলিকদের মধ্যে জাতিগত বিভাজন সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়। এতে গণঅভ্যুত্থানের পরিণতিতে রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়াকোনভিচ রাশিয়ায় পালাতে বাধ্য হন। প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ইউক্রেনের ‘ক্রিমিয়া’ উপদ্বীপ বিনা বাধায় দখল করে নেয়।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ইউক্রেনের নির্বাচনে পশ্চিমাপন্থী ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্ষমতায় আরোহণ করে ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার শর্তে ডনবাস অঞ্চল থেকে রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীদের হটাতে শুরু করেন। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে রাশিয়া ডনবাসের ‘দোনেৎস্ক’ ও ‘লুহানস্ক’ নামক রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী শাসিত অঞ্চল দু’টিকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু জেলেনস্কি ন্যাটোতে যোগ দেয়ার জন্য তোড়জোড় চালাতে থাকেন এবং পশ্চিম ইউরোপীয়রাও আমেরিকার নেতৃত্বে জেলেনস্কিকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিতে থাকে। ইউক্রেনের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব এবং খনিজ ও কৃষিজ সম্পদের বিষয়ে রাশিয়া পশ্চিমাদের মোকাবেলায় নিজেদেরকে অত্যন্ত অনিরাপদ মনে করে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তারা ইউক্রেন দখল অথবা সেখানে অনুগত সরকার বসানোর জন্য সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
গোয়েন্দাদের তথ্যে আক্রমণের পূর্বাভাস পাওয়া সত্ত্বেও মার্কিনিরা ইউক্রেনকে উসকাতে থাকে, কিন্তু রুশ আক্রমণ শুরু হলে সহসাই তারা পিছু হটে। বাস্তবিকই ইউক্রেনের পক্ষে রাশিয়াকে লাগাতার হুমকি ধমকি দেয়া আমেরিকা, ন্যাটো এবং ইইউ জেলেনস্কিকে গাছে তুলে মইটি কেড়ে নিয়েছে।
ভ্লাদিমির পুতিন সাবেক চৌকস গোয়েন্দা হলেও তিনি হিসাবে বেশ কিছু ভুল করে ফেলেছেন। তার হিসাব ছিল, খুবই দ্রুত ইউক্রেন দখল করে তড়িঘড়ি করে একটি পুতুল সরকার গঠন করে ফেলবেন, রাশিয়ান সেনা ইউক্রেনে পৌঁছলে ইউক্রেনিয়ান রুশরা তাদের স্বাগতম জানাবে এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করে জেলেনস্কির বিপক্ষে অবস্থান নেবে। কিন্তু উল্টো ইউক্রেনের সেনাবাহিনী শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলছে এবং সাধারণ জনগণ অস্ত্র হাতে নিয়ে জনযুদ্ধে নেমে পড়েছে। তা ছাড়া বছরের এই সময়টিতে ইউক্রেনে প্রচুর তুষারপাত হয়ে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে যা রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে স্থবির করে দিচ্ছে। অন্যদিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোজোট এবং ‘ইইউ’ যে, এত বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে তা পুতিনের ধারণার বাইরে ছিল। সম্ভবত রাশিয়ার তেল-গ্যাস এবং কৃষিজ দ্রব্যের শক্তির ব্যাপারে পুতিন অতিরিক্ত আস্থাশীল ছিলেন।
অন্যদিকে বাইডেনের হিসাব একেবারে একশতে একশত ভাগ মিলে গেছে। তৃতীয় কোনো দেশে উদীয়মান রাশিয়াকে যুদ্ধে আবদ্ধ করে অর্থনৈতিক কষাঘাতে তাকে ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত এবং অস্ত্র বিক্রির এক বিরাট বাজার উন্মোচিত করার লুকানো উদ্দেশ্য সফলতা লাভ করেছে। জানা যায়, ২০১৪ সালের পর থেকে গত ৮ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্স’ ইউক্রেনের ২৭ হাজারের বেশি সেনাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তিনশ’ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে (প্রথম আলো : ৫ মার্চ ২০২২)।
এই যুদ্ধ বহুমুখী প্রভাব ফেলবে সারা বিশ্বে। ইউরোপ, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার অনেক দেশ তাদের গম আমদানির ৭৫ শতাংশেরও বেশি নির্ভর করে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর। পৃথিবীর খাদ্য বাজারে গম রফতানিতে রাশিয়া শীর্ষে এবং ইউক্রেন চতুর্থ। আবার সার তৈরির মূল উপাদান পটাশ ও ফসফেট রাশিয়ায় উৎপাদিত হয়। ফলে সারের অভাবে বিশ্বের খাদ্য উৎপাদন ৫০ শতাংশ কমে যাবে। সেই সাথে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর রেমিট্যান্স প্রবাহও কমে যাবে। রাশিয়া কিন্তু জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের বাজারেরও প্রধান শক্তি। তারা প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারের এক-চতুর্থাংশ, প্লাটিনামের ১৪ শতাংশ, কয়লার ১৮ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের বাজারের ১১ শতাংশ জোগান দেয় (নয়া দিগন্ত : ১২ মার্চ ২০২২)। রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া ইউরোপ প্রায় অচল হয়ে পড়বে। হাঙ্গেরির ৯০ শতাংশ মানুষের ঘর উত্তপ্ত রাখে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস। ইউরোপে রফতানিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশই যায় রাশিয়া থেকে। কিন্তু ইউরোপের মোট পণ্য বিক্রির মাত্র ৫ শতাংশ যায় রাশিয়ায়। অন্য দিকে, রাশিয়ার এই আক্রমণ বিশ্বের ছোট ছোট ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে তাইওয়ান-চীন চলমান দ্বন্দ্বকে আরো উসকে দিয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ চীনকে তাইওয়ানে অভিযানে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।’ ফলে তাইওয়ান চীনের সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধ সম্পর্কীয় কৌশল বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে তার পরিণতি ভয়াবহতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইউরোপের হাজারখানেক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সাথে তাদের উৎপাদন এবং ব্যবসায়-বাণিজ্যে জড়িত। তাদেরকে গুটিয়ে চলে আসতে হচ্ছে। ফলে সারা বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে যাচ্ছে যদি এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়। এদিকে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে ৫২টি দেশের ২০ হাজারেরও অধিক স্বেচ্ছাসেবক রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেন পৌঁছেছে বলে জানা যায়। আবার রাশিয়াও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ১৬ হাজার ভাড়াটে যোদ্ধা নিয়ে আসছে ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য। খোদ ইউক্রেনে ১৮ হাজার অত্যাধুনিক রাইফেল ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী নাগরিকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ‘জনযুদ্ধ’ পরিচালনার জন্য। একই সাথে আমেরিকা ও ‘ইইউ’ভুক্ত দেশগুলো কাঁধে বহনযোগ্য বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হাজারে হাজারে পাঠাচ্ছে ইউক্রেনে। এসব ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং কাঁধে বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের এক বিশাল অংশ পড়তে যাচ্ছে চোরাকারবারিদের হাতে। হাত বদলে সেগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের হাতে পড়বে অথবা অস্ত্রের সহজলভ্যতা অনেক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সৃষ্টি করবে। এতে সারা বিশ্ব আবারো সন্ত্রাসকবলিত হয়ে পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। এরই মধ্যে ইউক্রেনের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ সাইদ ইসমাইলভ সেনা পোশাক পরে রণাঙ্গনে নেমে এসেছেন এবং ইউক্রেনের প্রতিটি মুসলমানকে দেশ রক্ষার্থে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। এমতাবস্থায় আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতায় জিহাদের নামে আরো একটি নতুন জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। মার্কিনিরা আফগানিস্তানে রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে এই পদ্ধতিই অবলম্বন করেছিল। এমনকি ইউক্রেনের মুসলমানদের পক্ষে ‘আইএস’কেও জড়িত করা হতে পারে।
বর্তমান যুদ্ধ ইউক্রেনে সীমাবদ্ধ থাকলেও যেকোনো সময় যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ন্যাটো জোটের যেকোনো সীমান্তবর্তী দেশ বা জোটের কোনো স্থাপনা রুশদের দ্বারা আক্রান্ত হলে আমেরিকা এবং ইউরোপ এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। পশ্চিমাদের অস্ত্রের চালানের বহরের ওপর হামলা ‘বৈধ’ হবে বলে ইতোমধ্যেই পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন। পোল্যান্ডও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করলে ন্যাটো তা মেনে নেবে না। এভাবে ন্যাটো বা ‘ইইউ’ এই যুদ্ধে জড়িত হয়ে পড়লে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের রূপ নিতে পারে। তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়িয়ে যেতে পারলেও এই অঞ্চলে একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বল্পমাত্রার যুদ্ধ চলবে বলে মনে হয়। কারণ, এরই মধ্যে ‘কিয়েভে’ প্রতিরোধের জন্য সশস্ত্রবাহিনীর পাশাপাশি ইউক্রেনের নাগরিকরাও অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে। সেই সাথে পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত তালিকায় থাকা অস্ত্রগুলোই দীর্ঘ জনযুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত বহন করছে। ইউক্রেনের আবহাওয়া এবং ভূমি ছোট ছোট খণ্ডযুদ্ধেরই উপযোগী বলে মনে হয়। বৃষ্টি আর তুষারপাতে শুধু পাকা রাস্তাই যানবাহন চলাচলের উপযোগী থাকাটা গেরিলা প্রকৃতির যুদ্ধের জন্য খুবই সহায়ক হয়ে থাকে। তবে সবদিক বিবেচনায় পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে হয়। কিন্তু রাশিয়া জীবাণু অস্ত্রের অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে। জীবাণু অস্ত্রের ভয়াবহতা সারা বিশ্ব আজ করোনা মহামারীর মাধ্যমে এখনো দেখছে। এদিকে ইউক্রেন প্রবাসী সরকার গঠনের পরিকল্পনা করে রেখেছে। কিয়েভের পতনের সাথে সাথে তা গঠিত হবে ইউরোপের কোনো একটি দেশে এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিই হবেন সেই সরকারের মাধ্যমে জনযুদ্ধ চালানোর মূল চালিকাশক্তি। কাজেই এমনও হতে পারে, কোনো এক ভয়াবহ আক্রমণের মাধ্যমে রাশিয়া জেলেনস্কিকে হত্যাও করে ফেলতে পারে। কারণ পুতিনের শক্র নিধনের প্রক্রিয়া অত্যন্ত নির্মম ও নৃশংস। ইতোমধ্যেই পুতিন তার উদাহরণ সৃষ্টি করে রেখেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি হত্যা এবং চেচনিয়ায় অভিযানের মাধ্যমে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে লাভবান হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই যুদ্ধে একই সাথে টুর্নামেন্ট আয়োজক, রেফারি ও দর্শকের ভূমিকায় আছে মার্কিনিরা। রাশিয়া দুর্বল হয়ে পড়লে পরবর্তী টার্গেট হবে চীন। অস্ত্রের বিশাল বাজার খুলবে যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন সমর প্রশিক্ষক, ঠিকাদার প্রমুখ। সবাই পাড়ি জমাবে পূর্ব ইউরোপ ও ইউক্রেনে। এসব হয়তো বা আফগানিস্তানের কারণে সৃষ্ট আর্থিক ও ভাবমর্যাদাগত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে বাইডেনের সামনের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কাজে লাগবে। সর্বোপরি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাকবে বিশ্বের একক কর্তৃত্বের আসনে। তাই ন্যাটো জোটের মাধ্যমেই আমেরিকা রাশিয়াকে ফাঁদে আটকে ফেলেছে। অন্য দিকে, তারা ইউক্রেনকে পাশে থাকার কথা দিয়ে এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যুদ্ধবিমান সরবরাহ তো দূরের কথা, সামান্য ‘নো ফ্লাই জোন’ পর্যন্ত ঘোষণা করতে নারাজ। আর ‘ইইউ’ আমেরিকার লেজুড় ধরে ধরে রাশিয়াকে যুদ্ধে জড়িয়ে নিজেরাই এখন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চাপে পড়ে নিজেদের করা গর্তে নিজেরাই পড়ে গেছে। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে রাশিয়ার সীমা লঙ্ঘনের অপরাধ। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে যেকোনো যুক্তিতেই আক্রমণ, দখল বা সেখানে পুতুল সরকার কায়েম করা অপরাধ। অবশ্য এই একই অপকর্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ যাবত ৭২টি দেশে করেছে বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: maksud2648@yahoo.com