ডায়াবেটিসে ভুগলে কি কিডনি নষ্ট হয়?
ডায়াবেটিসে ভুগলে কি কিডনি নষ্ট হয়? - ছবি : সংগ্রহ
যদি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং সত্যিই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না রাখেন তবে অচিরেই মারাত্মক ক্ষতি হতে চলেছে আপনার কিডনির। রক্তে শর্করার পরিমাণ দীর্ঘকাল ধরে বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে আপনার কিডনির রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত পানি ফিল্টার করার কাজ করতে ব্যর্থ হয় কিডনি। ডায়াবেটিস রোগে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে তা গ্লোমেরুলি ব্লক করে সংকুচিত করে। এভাবে রক্ত প্রবাহ কমে গিয়ে কিডনি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও, রক্তনালীগুলো ফুটো হয়ে যায় এবং প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ কম হয়। ডায়াবেটিস মূত্রাশয়ের স্নায়ুগুলোর ক্ষতি করে। এটি মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ায়।
কিভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে ডায়াবেটিক কিডনির রোগ নির্ণয় করা যায়
“ইউরিন-অ্যালবুমিন ক্রিয়েটিনিন অনুপাত নামক একটি সাধারণ মূত্র পরীক্ষা প্রস্রাবে প্রোটিনের (অ্যালবুমিন) উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে৷ রোগ বাড়তে থাকলে আক্রান্তের পা এবং হাতে ফোলাভাব, প্রস্রাবে ফেনা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
কিডনির ক্ষতি করতে ডায়াবেটিসের কতক্ষণ সময় লাগে?
টাইপ ১ ডায়াবেটিস ধরা পড়ার ২-৫ বছরের মধ্যে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগ ধরা পড়ার সময়ই কিডনির ক্ষতি হতে পারে। কিডনির রোগের জন্য তাই প্রতি বছর পরীক্ষা করানো উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির সমস্যার চিকিত্সা কীভাবে করা হয়?
কিডনি কাজ করা বন্ধ করতে থাকলে তার চিকিৎসা করা হয় রেনাল রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি যেমন হেমোডায়ালাইসিস বা পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিসের মাধ্যমে। কিডনির রোগের চিকিৎসার আরেকটি শেষ পর্যায়ের বিকল্প হলো রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশন।
কিডনির রোগ প্রতিরোধ করতে জীবনধারায় স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনুন
* স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অল্প পরিমাণে বারে বারে খাবার খাওয়া উচিত। খাদ্যতালিকায় শাকসবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন এবং চিনিযুক্ত, তৈলাক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার কমিয়ে দিন। লবণ কম খান কারণ বেশি পরিমাণে সোডিয়াম তরল ধরে রাখে।
* ধূমপান বা তামাক খাওয়া ছেড়ে দিন, এগুলো কিডনির ব্যাপক ক্ষতি করে।
* কিডনির যেকোনো ক্ষতি এড়াতে মদ খাওয়া কমিয়ে দিন।
* নিয়মিত ব্যায়াম অত্যাবশ্যক। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ মিনিট ব্যায়াম করুন। শরীর সক্রিয় থাকলে তা ইনসুলিন এবং গ্লুকোজকে আরো ভালোভাবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
* ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
* কিডনির রোগ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে রক্তচাপ এবং কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করুন। নিয়মিত অ্যান্টিহাইপারটেনশন এবং লিপিড ওষুধ খান।
সূত্র : নিউজ ১৮