যেভাবে বাড়াবেন আত্মবিশ্বাস
যেভাবে বাড়াবেন আত্মবিশ্বাস - ছবি : সংগ্রহ
আমরা সবাই রবার্ট ব্রুসের রাজ্য জয়ের গল্প জানি। নিজের হারানো রাজ্য উদ্ধার করতে তিনি একে একে সাতবার যুদ্ধ করেছেন। অবশেষে নিজের হারানো রাজ্য জয় করাতে সক্ষম হন। তার আত্মবিশ্বাসই তাকে নিজের হারানো রাজ্য জয় করতে সহায়তা করে। যেকোনো কাজে সফলতা আপনাআপনি ধরা দেয় না। এ জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
আত্মবিশ্বাস কারো জন্মগত সম্পদ নয়। এটা অর্জন করতে হয়। এজন্য তপস্যা করতে হয়। তবে একবার আত্মবিশ্বাসী হতে পারলে যেকোনো কাজে সফলতা অর্জন করা যায়। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর টিপস নিয়ে এ আলোচনা।
নিজেকে সফল ভাবতে শিখুন : এক ধরনের লোক আছেন যারা নিজেদের তুচ্ছ মনে করেন। জীবনে যত কিছুই অর্জন করুক না কেন তারা তাদের অর্জনগুলোকে ছোট করে দেখেন। এতে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয়। আপনার অর্জন যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন তা অন্যের কাছে বৃহৎ কিছু। দেখা যাবে এ ক্ষুদ্র অর্জনগুলোই আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।
চিন্তু করুন পজেটিভলি : কোনো কিছু পাওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করি। না পেলে ভেঙে পড়ি। নিজেকে তুচ্ছ মনে করি। এটা কিন্তু ভুল। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ইলেকট্রিক বাতি আবিষ্কার করার পর বলেন, আমি সাতশ’ বার চেষ্টা করে এ বাতি আবিষ্কার করেছি। এত বার বিফল হলেও আমি দমে যাইনি। নিজেকে বুঝিয়েছি আমি অন্তত সাতশ’ পদ্ধতি শিখলাম যেটা দিয়ে ইলেকট্রিক বাতি তৈরি করা সম্ভব নয়। কোনো কাজে একবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে আশা ছেড়ে দেবেন না।
জয় করুন মনের ভয় : কোনো কাজ শুরু করতে গেলে শুরুতেই মন থেকে বাধা আসতে পারে। মনে হতে পারে এটা আপনি পারবেন না। একে পাত্তা দেবেন না। মনের ভয় দূর করে কাজে লেগে পড়–ন। নিজেকে বোঝান অন্যরা যা পারে আপনিও তা পারবেন।
এখনই শুরু করুন : পরীক্ষার আগে পড়া কম হয়েছে মনে করে অনেক শিক্ষার্থী দুচিন্তা করে অযথা সময় নষ্ট করে। এতে তো কোনো লাভ হয় না উল্টো সময় নষ্ট করে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরো খারাপ হয়। সাত-পাঁচ ভেবে সময় নষ্ট না করে যা করার এখনই শুরু করুন।
ভাবুন আপনি পারবেন, পারতেই হবে : নিজের একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, গ্রামের একটি স্কুল থেকে এসএসসি শেষ করে নটর ডেম কলেজে ভর্তি হই। গ্রামের স্কুল বলে শহুরে ছাত্ররা আমাদের বেশ অবজ্ঞা করত। একদিন এক শহুরে ছাত্রের আচরণে ভীষণ কষ্ট পাই। প্রতিজ্ঞা করি তার চেয়ে ভালো করতেই হবে। মনে হতো এটা সম্ভব না। প্রথম দুটি পরীক্ষায় না পারলেও হাল ছাড়িনি শেষ পরীক্ষায় তার চেয়ে চল্লিশ নম্বর বেশি পাই। আপনিও ভাবুন আপনি পারবেন। তবে শুধু ভাবলেই হবে না তা অর্জনে পরিশ্রম করতে হবে।
নিজেকে পুরস্কৃত করুন : কোন কিছুতে সফল হলে নিজেকে পুরস্কৃত করুন। অর্জন হোক না কেন ক্ষুদ্র কিছু। নিজে নিজেকে প্রশংসা করুন।
পরিপাটি, হাসিখুশি থাকুন : নিজেকে পরিপাটি রাখলে মন প্রফুল্ল থাকে। বেড়ে যায় আত্মবিশ্বাস। নিজের পরিষ্কার জামা-কাপড় পড়ুন। চুল রাখুন পরিপাটি। অন্যের সামনে হাসিখুশি থাকুন। বিষাদগ্রস্ত হলে নিজের ক্ষমতা সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা জন্মায়। কমে যায় আত্মবিশ্বাস।
পরাজয়ে ডরে না বীর : ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আমরা সবাই জানি ‘ফেইলুর ইজ দা পিলার অব সাকসেস’। এটা মেনে চলুন। কোনো কাজে সফলতা না পেলে নিজেকে তুচ্ছ ভাববেন না। অনেকে পরাজিত হওয়ার ভয়ে নতুন কোনো কিছু শুরু করতে আগ্রহী হন না। এটা না করে ভাবুন যদি কাজ শুরু না করেন তাহলে তো আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই কিন্তু কাজ শুরু করলে এ সম্ভাবনা অর্ধেক।
মা-বাবাকে দায়িত্ব নিতে হবে : আমাদের শিশুদের ছোট থেকেই শেখাই এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। অনেক মা-বাবা শিশুদের প্রতিনিয়ত ভর্ৎসনা করেন। অন্যের সাথে তুলনা করেন। দুর্বল দিকগুলো নিয়ে বেশি আলোচনা করেন। এটা শিশুদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। পরবর্তীতে এরাই বিশ্বাসহীনতায় ভোগেন। সন্তানকে ভর্ৎসনা না করে তাকে উৎসাহিত করুন। তার ভালো দিকগুলোর জন্য পুরস্কৃত করুন। দুর্বল দিকগুলো নিয়ে ভর্ৎসনা না করে এগুলো কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করুন।