ইউক্রেন দখলে 'সিরীয় সৈন্য' নামাবে রাশিয়া!

অন্য এক দিগন্ত | Mar 07, 2022 05:27 pm
ইউক্রেন দখলে 'সিরীয় সৈন্য' নামাবে রাশিয়া!

ইউক্রেন দখলে 'সিরীয় সৈন্য' নামাবে রাশিয়া! - ছবি : সংগ্রহ

 

১২ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। রাজধানী কিয়েভ ও খারকভ দেখলে মনে হয় জাদুবলে যেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ফিরে গিয়েছে শহরগুলো। মূহুর্মূহু গোলবর্ষণ ও যুদ্ধবিমানের কানফাটানো আওয়াজের মধ্যে মরিয়া হয়ে লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। সামরিক শক্তিতে কয়েক আলোকবর্ষ এগিয়ে থাকলেও কিয়েভ দখলে এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ রুশ বাহিনী। তাই এবার নাকি সিরিয়ার সৈন্যদের আনতে চলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনে লড়াই করার জন্য সিরীয় সৈন্যদের মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া।

কেন এই পদক্ষেপ? উত্তর, ‘আরবান ওয়ারফেয়ার’ বা নগরযুদ্ধে রীতিমতো অভিজ্ঞ এবং দুর্ধর্ষ সিরিয়ান জওয়ানরা। দীর্ঘদিন ধরে আলেপ্পো, ইদলিব-সহ অন্যান্য শহরে ইসলামিক স্টেট ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের কৌশল অত্যন্ত মজবুত। সেই তুলনায় রাশিয়ার সৈন্যদের নগরযুদ্ধে প্রশিক্ষণ সেই অর্থে নেই বললেই চলে। তাই কিয়েভ, খারকভ ও মারিওপোলের মতো শহরগুলো দখলে সিরীয় সেনাদের ময়দানে নামতে চলেছে মস্কো বলেই ধারণা। বলে রাখা ভালো, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদের পরম মিত্র পুতিন। ২০১৫ সাল থেকেই মার্কিন মদতপুষ্ট বিদ্রোহী সেনাদল ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’-এর বিরুদ্ধে আসাদ বাহিনীর লড়াইয়ে মদত দিয়েছে মস্কো। এবার তারই প্রতিদান দিচ্ছে দামাসকাস।

এক মার্কিন কর্মকর্তা উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছে, ইউক্রেনে মোতায়েন হতে চলা সিরীয় সৈনিকদের সংখ্যা জানা যায়নি। তবে ইতিমধ্যে বহু সিরিয়ান জওয়ান যুদ্ধের ময়দানের যাওয়ার জন্য রাশিয়া পৌঁছে গিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুদ্ধে সিরীয় সৈনিকদের উপস্থিতি পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলবে। তবে ইউক্রেনের হয়েও বহু বিদেশি লড়াই করছে। সম্প্রতি যুদ্ধজর্জর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যাদের পক্ষে লড়াই চালাচ্ছেন প্রায় ১৬ হাজার বিদেশী যোদ্ধা।

উল্লেখ্য, রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজপ তাইয়িপ এরদোগানের সাথে ফোনালাপ হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে তুরস্ক বারবারই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিল। এমনকি, পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কিকে এক টেবিলে আনার চেষ্টাতেও ছিলেন এরদোগান। এদিন পুতিন ফোনে তাকে আরো বলেন যে, রাশিয়া নির্দিষ্ট সূচি মেনেই শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করছে। রাশিয়াকে থামাতে হলে ইউক্রেনকে শর্ত মানতেই হবে। আর মধ্যস্থতাকারীদের উচিত বিষয়টি ইউক্রেনের প্রশাসনকে বোঝানো।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রুশ বাহিনীর হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলল যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রুশ বাহিনীর হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার একটি সম্ভাব্য ’যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে।

জাপোরিঝিয়ার পারমাণবিক কেন্দ্রে নিশি হামলার পর ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস টুইটার বার্তায় বলেছে, “ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা একটি যুদ্ধাপরাধ।" রুশ অভিযানের কারণে কেন্দ্রটিকে রাজধানী কিয়েভ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। খবর এএফপি’র। জেনেভা কনভেনশনে নিষিদ্ধ যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের জন্য ওয়াশিংটন মস্কোকে প্রকাশ্যে অভিযুক্ত করছে কি না এএফপি’র এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর যথেষ্ট সতর্ক ছিল। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র বলেছেন, "ইচ্ছাকৃতভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বেসামরিক লোক বা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা একটি যুদ্ধাপরাধ এবং আমরা এই হামলার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি। কর্মকর্তা বলেন, তবে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত দায়িত্বহীন এবং ক্রেমলিনকে অবশ্যই পারমাণবিক অবকাঠামোর চারপাশে কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।"

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ দাবি করেছেন যে, জাপোরিঝিয়ার হামলাটি বিদেশী ভাড়াটেদের অংশগ্রহণে ইউক্রেনীয় নাশকতাকারী গোষ্ঠী" দ্বারা সংগঠিত হয়েছে।

ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাশিয়াকে ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানা ও বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে, তবে রুশ সামরিক বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ওগুলোকে তাদের লক্ষ্যবস্তু করছে কিনা সে ব্যপারে স্পষ্টভাবে কিছু না বলার ব্যাপারে বেশ সতর্ক। তারা খোলাখুলিভাবে যুদ্ধাপরাধ নিয়েও কিছু বলছে না। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, "ইউক্রেনের মাটিতে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ভয়ঙ্কর যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের প্রমান নথিভুক্ত এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা" চলছে। তিনি বলেন,"এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সদ্ধিান্তে আসিনি। এটি একটি আইনী পর্যালোচনা ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া।"

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলেছেন। জনসন বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামলে নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যে মারনাস্ত্র ব্যবহার করতে দেখেছি, তা আমার দৃষ্টিতে তা ইতিমধ্যেই সম্পুর্নভাবে যুদ্ধাপরাধের সামিল।"


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us