লাইমলাইটে ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডিও
ওলেনা ও জেলেনস্কি - ছবি : সংগৃহীত
প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। আর এই যুদ্ধের বাজারে সকলেই জানেন বোধ হয় পুতিনের এক নম্বর টার্গেট জেলেনস্কি। তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা বা জেলে পোরা এমনকি হত্যা না করা পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্টের নাওয়া খাওয়ার সময় নেই। কিন্তু ইউক্রেনে পুতিনের টার্গেট নম্বর-টু কে? সেটি হলেন জেলেনস্কির স্ত্রী, অতি সুন্দরী, ওলেনা জেলেনস্কা। রাশিয়ার এক নম্বর টার্গেট প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিজেই বলেছিলেন এ কথা। তবে এখানেই না থেমে তিনি আরো বলেছিলেন যে কেবল তার স্ত্রী নন, পুতিনের লক্ষ্য-দুইয়ের তালিকায় রয়েছে জেলেনস্কি, জেলেনস্কা-র দুই সন্তান আলেকসান্দ্রা এবং কিরিল।
ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি রূপসি জেলেনস্কা সম্পর্কে একটু জেনে নেই আসুন, এই যুদ্ধ-পরিসরে!
ওলেনা জেলেনস্কা। স্ক্রিপ্টরাইটার। এখন অবশ্য তার জীবনের স্ক্রিপ্টটা নিজের হাত থেকে বের হয়ে গেছে অনেকটা। কিন্তু যেটুকু হাতে রয়েছে, তাতেই তার কলমের শক্তির প্রমাণ দিচ্ছেন। তিনি স্বামীর পাশে দাঁত কামড়ে রয়েছেন। বলা যায়, ৪৪ বছরের এই নারী যার গলায় হার-মানা-হার পরিয়েছিলেন, সেই স্বামীর জন্য তিনি হার-না-মানা। ফলে সারা পৃথিবীর চওড়া আলো পড়েছে তার উপর। ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডির জন্য আলাদা কোনো অফিস ছিল না, কিন্তু যুদ্ধের ডাঙ্কা বাজার পর, সেটিই হয়েছে। সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলেনস্কা আর ওলেনা সহায়তা করছেন নানাভাবে। স্বামীর জয় চাইছেন কর্মে ও প্রাণে।
ওলেনার প্রথম জীবন
২০১৯-এর এপ্রিল, জেলেনস্কি একজন কৌতুকাভিনেতা হিসেবে খ্যাতিমান, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে গেলেন, তখন তার স্ত্রী ওলেনা সম্পর্কে বাকি দুনিয়ার ক’জন আর জানতেন? ‘আমি মানুষের সামনে নয়, নেপথ্য-চারণ পছন্দ করি। আমার স্বামী সামনের দিকে থাকেন, আমি তার ছায়া হয়ে থাকি স্বচ্ছন্দে। পার্টির জন্য নই আমি। আমি জোক বলতে পছন্দ করি না।’ ভোগ ম্যাগাজিনকে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন জেলেনস্কা।
জেলেনস্কা ওলেনা কিয়াশকো জন্মেছেন মধ্য ইউক্রেনের শিল্প শহর ক্রিভি রিহ-তে। এখানেই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বড় হয়েছেন, প্রাধান ভাষা যেখানে রুশ। দু’জন ক্রিভি রিহ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনো করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই কমন বন্ধু ছিল বেশ কয়েকজন। জেলেনস্কা স্থাপত্য নিয়ে পড়াশুনো করেন, আর জেলেনস্কি পড়েছেন আইন নিয়ে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে কমেডিয়ান ছিলেন জেলেনস্কি
বিনোদন প্রতিবেদক
রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেন। পশ্চিমা মিত্ররা অন্যান্য উপায়ে সহযোগিতার হাত বাড়ালেও যুদ্ধের ময়দানে একা লড়তে হচ্ছে ইউক্রেনকে। সব মিলিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্ব আলোচনায় পুতিনের পাশাপাশি রয়েছেন ভলোদিমির জেলেনস্কিও। এক সময়ের প্রখ্যাত কমেডিয়ান থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যাত্রাপথ মোটেই সহজ ছিল না জেলেনস্কির।
২০১৯ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লডাই করেছিলেন ৪৪ বছরের জেলেনস্কি। বিপুল ব্যবধানে জয়ের পর বসেন প্রেসিডেন্টের চেয়ারে। তবে তারও আগে গোটা দেশের কাছে জেলেনস্কি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন একজন অভিনেতা হিসেবে। কাকতালীয়ভাবে তিনি যে কমেডি শো এর জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, সেখানেও প্রেসিডেন্টের চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন জেলেনস্কি। ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ টেলিভিশন শোতে তিনি ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক। তারপর সেখানে আচমকাই তিনি হয়ে ওঠেন দেশের প্রেসিডেন্ট। বাস্তবেও জেলেনস্কির যাত্রাপথ অনেক তেমনই। টেলিভিশন শোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ২০১৮ সালে তাকে প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছিল।
এককালের কমেডি অভিনেতা এখন যুদ্ধকবলিত দেশের প্রেসিডেন্টের ভূমিকায়। সেলুলয়েডে অবশ্য যুদ্ধের সৈনিকের চরিত্রে তাকে কখনো দেখা যায়নি। তবে বাস্তবে দেখা গেল। মিলিটারি পোশাকে জেলেনস্কি পৌঁছে গিয়েছিলেন সেনাদের কাছে। ইউক্রেনের সেনাকে পেপটকও দিয়ে এসেছেন তিনি। ইউক্রেনের ক্রিভি শহরে জন্মগ্রহণ করা জেলেনস্কি নিজের দেশের ভাষা শেখার আগেই রপ্ত করে ফেলেছিলেন রুশ ভাষা। দেশে হামলা হতেই সেই রুশ ভাষাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে শোনা গিয়েছে তাকে। আবেগতাড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এই সেই ডনবাস, যেখানে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা দেখেছি। শেরভাকভ পার্কে বন্ধুদের সাথে মদ্যপান করেছি। এই সেই লুহানস্ক, যেখানে আমার প্রিয় বন্ধুর মাকে কবর দেয়া হয়েছিল।’
আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ এরই মধ্যে জেলেনস্কিকে আবেগপ্রবণ, অনভিজ্ঞ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।