ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা বিটকয়েনে!

অন্য এক দিগন্ত | Mar 03, 2022 03:05 pm
ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা বিটকয়েনে!

ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা বিটকয়েনে! - ছবি : সংগ্রহ

 

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এ বার কপালে ভাঁজ ফেলতে চলেছে সভ্যতার? বিষিয়ে দিতে চলেছে পৃথিবীর পরিবেশও? পরোক্ষে অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে চলেছে আরো বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের? আরো দ্রুত হারে পৃথিবীর উষ্ণায়নের?

সেই ইঙ্গিতই মিলল সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। জানাল, ক্রিপ্টোকারেন্সি যুগের প্রধান হাতিয়ার বিটকয়েনই পৃথিবীর পরিবেশ আরো বিষাক্ত হয়ে ওঠার কারণ হয়ে উঠেছে। বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকদের চীনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার পরিণতিতে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির উৎপাদন হয় যে সব দেশে, আমেরিকা-সহ সেই সব দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা। তাদের কাজও চলছে এখন সেই সব দেশে। ফলে, আমেরিকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন। যার জেরে উষ্ণায়নের রথের রশির লাগাম টেনে ধরা আরো মুশকিল হয়ে উঠতে চলেছে।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জুল’-এ। সোমবার।

বিটকয়েন তৈরি করার পদ্ধতির নাম- ‘বিটকয়েন মাইনিং’। খনি থেকে বিটকয়েন উত্তোলন করা হয় না যদিও। নতুন নতুন বিটকয়েন তৈরি হয় ঢাউস ঢাউস কম্পিউটারে। সেই কম্পিউটারগুলোকে অত্যন্ত শক্তিশালী হতে হয়। আর সেই কম্পিউটারগুলো চালাতে প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎশক্তির।

সেই বিদ্যুৎশক্তির প্রয়োজন মেটাতেই বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা গোড়ার দিকে বেছে নিয়েছিলেন চিনকে। বেইজিং-সহ চীনের প্রায় সর্বত্রই বিশাল বিশাল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকায়। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করতে হয় না। সেখান বিদ্যুৎশক্তির উৎপাদন হয় নদীর পানিপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকেই চীন বিটকয়েন রুখতে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে। পরের কয়েক বছরে দেশের ব্যাংকগুলোর ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে বেইজিং। তার পর গোটা চীনেই বিটকয়েন নিষিদ্ধ হয়। এর পরেই যারা বিটকয়েন তৈরি করেন সেই নির্মাতা ও শ্রমিকরা বাঁচার তাগিদে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেন মূলত আমেরিকা, কাজাখস্তানসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। যে দেশগুলোতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির বড় অংশের উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে। এর ফলে, আমেরিকাসহ বিশ্বের বহু দেশে আরো বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কারণ হয়ে উঠেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি- বিটকয়েন।

চীনে কাজকর্ম নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা এখন কোন কোন দেশের কোন কোন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছেন তা জানতে গবেষকরা কেম্ব্রিজ সেন্টার ফর অলটারনেটিভ ফিনান্স-এর মাধ্যমে বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকদের ব্যবহার করা আইপি অ্যাড্রেসগুলি সংগ্রহ করেন। সেগুলো খতিয়ে দেখেন। তাতে দেখা গেছে, বিটকয়েন নির্মাতারা এখন তাদের কাজের ক্ষেত্র হিসাবে মূলত বেছে নিয়েছে আমেরিকা, কাজাখস্তান-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশকে। ওই সব দেশেই প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির বড় অংশেরই উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে। বিটকয়েন নির্মাতাদের এখন পছন্দের জায়গা যেগুলো সেই আমেরিকার টেক্সাস, কেনটাকি ও জর্জিয়াতেও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির সিংহভাগেরই উৎপাদন হয় কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতায়। বিটকয়েন নির্মাতাদের পরবর্তী লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ইউরোপের কয়েকটি দেশও যেখানে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের বড় বল-ভরসা এখনও জীবাশ্ম জ্বালানিই।

এর ফলে, বিটকয়েন উৎপাদন আর কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বে আরো বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস নির্গমনের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us