মিষ্টি বেশি খেলে ৭টি মারাত্মক রোগের শঙ্কা
মিষ্টি বেশি খেলে ৭টি মারাত্মক রোগের শঙ্কা - ছবি : সংগ্রহ
উৎসব বা ভালো খবরে মিষ্টি খাওয়া অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আবার মিষ্টি খাওয়া অনেকের অভ্যাসও। তবে এর কিছু সমস্যাও আছে।
আপনি জানেন কি মিষ্টি খাবার দাবার খেলে ৭টি বড় সমস্যা হতে পারে? বর্তমানে বহু মানুষই অতিরিক্ত চর্বির শিকার হয়ে থাকেন ৷এই সমস্যাই বর্তমানের অন্যতম প্রধান সমস্যা ৷
বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে শরীরে লিপোপ্রোটিন লিপোজ তৈরি করতে থাকে যা শরীরের জন্য খুব একটা ভালো খবর নয় ৷
বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও থাকে ৷ অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি ব্লাডপ্রেশার বা কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে ৷এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয় ৷
ডায়বেটিসের ঝুঁকি বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে ব্লাড সুগার লেবেল বাড়িয়ে দেয় ৷ এটি মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক৷ মস্তিষ্কে গ্লুকোজ পৌঁছয় না ৷ফলে স্মৃতিশক্তির বিভ্রাট হতে পারে ৷
বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে শরীরে আলস্য লক্ষ্য যায় ৷ক্যালোরি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়না ৷ বেশ কিছু সময়ে শক্তি থাকে আবার বেশ কিছু সময়ে দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায় ৷যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। দীর্ঘ সময় ধরে এমন চললে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে ৷
বেশি পরিমাণ মিষ্টি খাবার দাবার খেলে বয়সের আগেই দেখতে বৃদ্ধ লাগে ৷বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে ত্বকে দানাদানা বেরিয়ে থাকে ৷ এছাড়াও শরীরে নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় ৷
মিষ্টি জাতীয় খাবার দাবার ইমিউনিটি বা প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভালো নয় ৷বেশি পরিমাণে মিষ্টি খেলে ইমিউনিটি আস্তে আস্তে কমতে থাকে ৷ ফলত তাড়াতাড়ি শরীর খারাপ হতে থাকে ৷
বেশি পরিমাণে মিষ্টি খাবার খেলে যকৃতকে বেশি পরিমাণে পরিশ্রম করতে হয় ৷এর ফলে লিভারে চাপ পড়ে শরীরে লিপিডের পরিমাণ বেড়ে যায় ৷এর ফলেই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷
সূত্র : নিউজ ১৮
বসন্তে অসুস্থ নয়
ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
এসেছে বসন্ত। হলুদের ছোয়া লেগেছে সবখানে। মনে, প্রকৃতিতে। জেগেছে প্রকৃতি। পাখির কলকালতিতে মুখর চারপাশ। কিন্তু ঋতু পরিবর্তনে শরীর মানিয়ে নিতে সময় লাগে। নতুন ঋতুতে নতুন করে দেহকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। এতে দেখা দিতে পারে নতুন রোগবালাই।
বসন্ত ফুলের ঋতু। ফুলে ফুলে ভরে যায় চারপাশ। ফুল হলেই কিন্তু খুব ভাল নয়। কথায় আছে না ফুলে কাটা থাকে। ফুল বেশি হলে পরাগরেণু বেশি ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। যত বেশি পরাগরেনু তত বেশি হাঁপানি, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট। ফুলের পরাগরেণু অ্যালার্জেন হিসেবে কাজ করে হাঁপনির প্রকোপ বৃদ্ধি করে। তাই এ সময়টাতে হাঁপানি আক্রান্তদের কষ্ট বাড়ে। হাঁপানি আক্রান্ত হলে সাবধান। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়–ন। ওষুধ নিতে ভুলবেন না। বেশি শ্বাসকষ্ট হলে ইনহেলার ঘন ঘন নিতে পারবেন। নাকের অ্যালাজিক রাইনাইটিসও কিন্তু এ সময়টাতে বেশি কষ্ট দিতে পারে। বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নাক পরিষ্কার করুন। নাক বন্ধ থাকলে কুসুম গরম পানির ভাপ টানতে পারেন।
সর্দি-জ্বর যেটাকে আমরা ভাইরাস জ্বর বলি সেটিও দেখা দিতে পারে বসন্তের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে। তাই জ্বর আসলেই এন্টিবায়োটিক নয়। ভাইরাস জ্বরে কিন্তু এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। কুসুম গরম পানিতে গা মোছালে জ্বরের প্রকোপ কমে আসবে। সাথে চলতে পারে প্যারাসিটামল। সর্দি থাকলে এন্টিহিস্টামিন সেবন করা যেতে পারে। তবে জ্বর ৭ দিনের বেশি থাকলে, প্রকোপ অনেক বেশি হলে চিকিৎকের পরামর্শে চলতে পারে এন্টিবায়োটিক।
বসন্তকালে শীতের আবহাওয়ার সময়কার ঘুমন্ত ভাইরাসগুলো একটু গরম পাওয়ায় বাতাসের মাধ্যমে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। জলবসন্ত এবং হাম ভাইরাস জনিত রোগ। এগুলোকে আমরা সংক্রামক ব্যাধি বলে থাকি। কারণ এগুলো খুবই ছোঁয়াচে। জলবসন্ত তেমন মারাত্মক রোগ নয় যদিও যার কোনদিন এ রোগ হয়নি তার জন্য ছোয়াঁচে। সেজন্য এ রোগ হলে যার জীবনে এ রোগ হয়নি তাকে রোগীর কাছ থেকে দূরে রাখা উচিত।
সরাসরি সংস্পর্শে এবং রোগীর হাঁচি-কাশির মধ্য দিয়ে এ রোগ পরিবেশে ছড়িয়ে যায়। জলবসন্ত এবং হাম হলে রোগীকে কখনো ঠান্ডা লাগাতে দিবেন না। কারণ এ দু’টি রোগেই ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া কিংবা ব্রংকো-নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। হাম পরবর্তী শিশুর ব্রংকো-নিউমোনিয়া শিশুর জন্য প্রাণঘাতী সমস্যায় পরিণত হতে পারে। এখনও আমাদের দেশে কুসংস্কার রয়ে গেছে যে, জলবসন্ত এবং হাম হলে তাকে ঠান্ডা খাবার খাওয়াতে হবে। এটা একটা ভয়ংকরধর্মী কুসংস্কার। তাই এ ব্যাপারে সকলের সচেতনতা থাকা প্রয়োজন।
আরেকটি ব্যাপার দেখা যায়, পানি বসন্ত এবং হাম রোগীকে তার আত্মীয়-স্বজন মাছ, মাংস খেতে দেননা। এটাও একটা ভ্রান্ত ধারণা। কারণ এ দু’টি রোগেই শরীরে প্রচন্ড আমিষের ঘাটতি হয়, তার উপর যদি তাকে আমিষ থেকে বঞ্চিত করা হয়, তাহলে তার জন্য হয়ে দাড়াবে অতিরিক্ত বিপদের ঝুঁকি। মনে রাখবেন রোগীকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। রোগীকে মাছ, গোশত, ডিম, দুধ, ফলমূল খেতে দিন। এতে বসন্তের ঘা পাকবে না।