কেন প্রথমেই চেরনোবিল দখল করল রাশিয়া!

অন্য এক দিগন্ত | Feb 25, 2022 06:13 pm
কেন প্রথমেই চেরনোবিল দখল করল রাশিয়া!

কেন প্রথমেই চেরনোবিল দখল করল রাশিয়া! - ছবি : সংগৃহীত

 

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ১০৮ কিলোমিটার দূরে চেরনোবিল। এখানেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটেছিল ১৯৮৬ সালে। যার জেরে ইউক্রেন এবং প্রতিবেশী দেশ বেলারুশেও তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই তেজস্ক্রিয়তার সরাসরি এবং পরোক্ষ প্রভাবে মৃত্যু হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষের।

ইউক্রেনে হামলা চালাতে চেরনোবিলের মতো একটা বিপজ্জনক এবং নিষ্ক্রিয় জায়গাকেই কেন বেছে নিলো রাশিয়া? উত্তর হলো ভৌগোলিক অবস্থান।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ১০৮ কিলোমিটার দূরে চেরনোবিল। এখানেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটেছিল ১৯৮৬ সালে। যার জেরে ইউক্রেন এবং প্রতিবেশী দেশ বেলারুশেও তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই তেজস্ক্রিয়তার সরাসরি এবং পরোক্ষ প্রভাবে মৃত্যু হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষের। যা বিশ্বে সবচেয়ে কুখ্যাত ঘটনা হিসেবে এখনও পরিচিত।

সেই ঘটনার পর চার দশকের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। চেরনোবিলে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা খানিক কমলেও পরমাণু কেন্দ্রটি নিষ্ক্রিয় অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। তবে এখনো মাইলের পর মাইল এলাকা বিপজ্জনক বলেই চিহ্নিত। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যখন টানাপড়েন বাড়তে শুরু করেছিল, যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছিল, তখন থেকেই চেরনোবিলকে নিজেদের কব্জায় নেয়ার লক্ষ্য স্থির করেছিল রাশিয়া।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনে ঢুকতে গেলে চেরনোবিলকে কব্জা করাই ছিল তাদের কাছে সহজ রাস্তা। কেননা, চেরনোবিল থেকে বেলারুশের দূরত্ব বেশি নয়। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ দখল করতে গেলে চেরনোবিলকে আগে কব্জা করা প্রয়োজন ছিল। কারণ রাশিয়া চাইছিল দ্রুত হামলা। আর সেটার জন্য বেলারুশ থেকে কম দূরত্বের রাস্তা চেরনোবিল। রাশিয়ার শরিক দেশ বেলারুশ। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার ঝামেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই বেলারুশে রুশ সেনাদের মোতায়েন করা হচ্ছিল। যাতে যুদ্ধ লাগলেই সেখান থেকে প্রথমে চেরনোবিল কব্জা করা যায়। এবং সেখান থেকে কিভ দখল করা শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই পরিকল্পনা করেই এগিয়েছে রাশিয়া। চেরনোবিল দখল করেছে। ইতিমধ্যেই কিভের আশপাশে পৌঁছে গিয়েছে রুশ সেনারা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 যুদ্ধ মহাকাশেও ছড়িয়ে দিতে পারে পারে রাশিয়া

শুধু বিশেষ একটি দেশে যুদ্ধই নয়। ইউক্রেনে জিততে মরিয়া রাশিয়া এবার দেশ, মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে যুদ্ধটা ছড়িয়ে দিতে চলেছে মহাকাশেও।

আমেরিকার গোয়েন্দা উপগ্রহগুলোর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে যে সংস্থা সেই ‘ন্যাশনাল রিকনাইস্যান্স অফিস’ (এনআরও)-এর অধিকর্তা ক্রিস্টোফার স্কোলেস এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এনআরও অফিসের কর্তারা মনে করছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধটিকে এ বার আরো দূর নিয়ে যেতে পারে রাশিয়া। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানার শিকার হতে পারে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ বিভিন্ন দেশের উপগ্রহগুলো। কক্ষপথে অচল হয়ে পড়া উপগ্রহগুলোকে ধ্বংস করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মহাকাশে আবর্জনার পরিমাণ একলাফে বহু গুণ বাড়িয়ে বিপদে ফেলে দিতে পারে দিনে ১৫ থেকে ১৬ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকেও। ইউক্রেনের কোথায় কোন পথে কত রুশ সেনা ঢুকছে বা ঢুকতে চলেছে তা যাতে কক্ষপথে থাকা বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা উপগ্রহগুলো আগেভাগে জেনে নিতে না পারে তার জন্য সেগুলোকেও ধ্বংস করতে পারে রাশিয়া। তাতে শুধু উপগ্রহগুলিই ধ্বংস হবে না, মহাকাশে আবর্জনার পরিমাণ উদ্বেগজনক ভাবে বাড়িয়ে তুলে বিভিন্ন মহাকাশযানকেও তাদের যাত্রাপথে নানা ধরনের বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারে। তার ফলে, ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে মহাকাশ গবেষণারও।

আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিওরিটি স্পেস অ্যাসোসিয়েশনের মহাকাশের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশে গোয়েন্দামূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সম্মেলনে বুধবার এই সব আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এনআরও-র অধিকর্তা ও কয়েক জন শীর্ষস্তরের কর্তা।

এনআরও-র অধিকর্তা স্কোলেস বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধটাকে যে ভাবে হোক জিততে চাইছে রাশিয়া। তাই যত দূর যাওয়া সম্ভব রাশিয়া তত দূরই যাবে। এমনকি, যুদ্ধটাকে নিয়ে যেতে পারে মহাকাশেও।’’ বৃহস্পতিবারই ইউক্রেনে প্রবল পরাক্রমে ঢুকে পড়ে রুশ সেনা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, রাশিয়া ইতিমধ্যেই ইউক্রেন সীমান্তে দেড় লক্ষ সেনা মোতায়েন করেছে।

তার এই ধারণা যে শুধুই কথার কথা নয় তা বোঝাতে এ ব্যাপারে রাশিয়া কী কী পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে তারও খুঁটিনাটি স্কোলেস জানান ওই সম্মেলনে। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই জিপিএস ব্যবস্থাকে অচল করে দিতে তৎপর হয়েছে মস্কো। তার জন্য আমেরিকা যাতে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য নাসা-সহ আমেরিকার সবক’টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে তাদের পাঠানো উপগ্রহগুলোর নিরাপত্তা আরও আটোসাঁটো করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, প্রয়োজনে আমাদের উপগ্রহগুলির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রগুলোকে কিছু দিনের জন্য বন্ধ করে রাখতে। রুশ হানাদারি থেকে সেগুলোকে যাতে বাঁচানো যেতে পারে। রাশিয়া সাইবার অপরাধীদেরও প্রিয় দেশ। তাই নানা ধরনের সাইবার অপরাধের কবল থেকেও দেশ ও উপগ্রহগুলিকে কিভাবে বাঁচানো যেতে পারে তা নিয়েও জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us