প্রয়োজনের বেশি পানি পান! ৫ লক্ষণে বুঝতে পারবেন
প্রয়োজনের বেশি পানি পান! ৫ লক্ষণে বুঝতে পারবেন - ছবি : সংগ্রহ
শরীরে সার্বিক সুস্থতার জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান হলো পানি। শরীর ভালো রাখতে পানির কোনো বিকল্প নেই। শরীরের সব কোষের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন পানি। চিকিৎসকরা বলেন, একজন প্রাপ্ত বয়স্কের সারা দিনে তিন লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। শরীরে পানির ঘাটতি পড়লে যেমন নানা শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। তেমনই শরীরে পানির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলেও কিন্ত সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলে ‘ওভারহাইড্রেশন’।
তবে শরীরে পানির পরিমাণপ্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে গেলে সাধারণভাবে তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। কিন্তু শরীরে যখন তার প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত পানি যায় তখন বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ প্রকাশ পায়। সেগুলো কী কী?
ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া
দৈনিক গড়ে সঠিক পরিমাণে পানি খেলে ৫ থেকে ৮ বার প্রস্রাব পাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে দিনে এর বেশি বার প্রস্রাব পাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরের পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পিপাসা না পেলেও পানিপানের প্রবণতা
সারা দিনে গড়ে তিন লিটার পানি খাওয়ার লক্ষ্য পূরণ করতে অনেকেই মাঝে মাঝে পিপাসা না পেলেও পানি খেয়ে নেন। এতে শরীরে পানির পরিমাণ প্রয়োজনের বেশি পানি খেয়ে নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। শরীরের কখন পানির প্রয়োজন হয় তা শরীর নিজেই জানান দেয়। তাই পিপাসা পেলে তবেই পানি খাওয়া ভালো।
বমি ভাব
‘ওভার হাইড্রেশন’র অন্যতম লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব। যখন শরীরে খুব বেশি পানি থাকে, তখন পিত্তাশয় অতিরিক্ত তরল শোষণ করতে পারে না। অতিরিক্ত পানি শরীরে জমা হতে থাকে। যার ফলে বমি ভাব, বমি বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
মাথা ব্যথা
পানিশূন্যতা ও অতিরিক্ত পানি— এই দুটিই মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত পানির কারণে লবণের পরিমাণ কমে যায় এবং কোষগুলো ফুলে যায়। এই ফোলা কোষগুলো মস্তিষ্কে চাপ দেয়। এই চাপের ফলে মাথা ব্যথা হয়। শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে।
অত্যধিক ক্লান্তি
অত্যধিক পানি পান করার ফলে পিত্তাশয় পর্যাপ্ত পরিমাণের অতিরিক্ত পানি অপসারণ করতে পারে না। ফলে হরমোনের স্বাভাবিক ক্রিয়াতে বিঘ্ন ঘটে।তাই শরীরে একটা বাড়তি চাপ ও ক্লান্তি বোধ চলে আসে।
কতটা পরিমাণ পানি খাওয়া স্বাভাবিক?
১৯ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে দিনে গড়ে ২.৭ লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৩.৭ লিটার পানি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
পানি কম খেলে ওজন বাড়ে কেন?
সারা দিন কিছু ক্ষণ অন্তর পানি খেতে বলা হয়। তাতে শরীর সতেজ থাকে। ভিতরের বহু দূষিত পদার্থ থেকেও মুক্তি পেতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেকেই তেমন নিয়ম করে পানি খান না। হয়তো পানি নিয়ে বেরোতে ভুলে গেলেন। কিংবা কাজের চাপে পানি খাওয়ার কথা খেয়ালই রইল না। অথবা সময় পেলেন না। কেউ বা বার বার শৌচালয়ে ছুটতে যাওয়ার চিন্তায় পানি খান না। অনেকক্ষণ পর গলা যখন শুকিয়ে একেবারে কাঠ, তখন পানি খেলেন। দিনের পর দিন এমন চললে কী হয়? শরীর তো ভিতর থেকে শুকিয়ে যায়ই। তার সাথে আরো সমস্যা আছে। ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।
কিন্তু পানি কম খেলে ওজন বাড়বে কেন?
পানি যেমন কর্মশক্তি জোগায়, তেমনই শরীরের তাপমাত্রা রাখে নিয়ন্ত্রণে। তবে এর সাথে আরো একটি কাজ করে। তা হল, পেট কিছুটা ভর্তি রাখতে সাহায্য করে পানি। কিন্তু পানি কম খেলে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। বার বার খিদে পায় কম পানি খেলে। এ দিকে, শরীরের যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি খাবার খেলে বাড়ে ওজন। আরো একটু বেশি ক্যালোরিরও প্রয়োজন পড়ে শরীরের। কারণ পানি যে কাজের শক্তি জোগায়, এ ক্ষেত্রে তা-ও খাদ্য থেকে পেতে হয় শরীরের।
তা ছাড়া, কম পানি খেলে শরীর পানি সঞ্চয় করতে থাকে। ফলে অন্য খাবার খেলেও তা হজম হওয়া হয় কঠিন। ফলে ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাও বাড়ায়।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস