এরদোগানের সাবেক উপদেষ্টা এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও, ভারতে তোলপাড়
এরদোগানের সাবেক উপদেষ্টা এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও, ভারতে তোলপাড় - ছবি : সংগৃহীত
বৃত্ত সম্পন্ন করে ভারত সরকারের কাছ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা ফের গেছে দেশটির অন্যতম শিল্পগ্রুপ টাটা গোষ্ঠীর হাতে। এরপরই নতুন করে এয়ার ইন্ডিয়াকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই আবহে এয়ার ইন্ডিয়ার নতুন প্রধান নিয়োগ করেছে টাটা গোষ্ঠী। গত সোমবার টাটা গোষ্ঠী ঘোষণা করে, টার্কিশ এয়ারলাইনসের সাবেক চেয়ারম্যান ইলকার আইসিকে এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে নিযুক্ত করা হবে। আর ওই ঘোষণার পরই ভারতের সরকারি মহলে একটি চাপা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার জানা গেল, দেশটির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্য নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ তার ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখবে।
ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ৫১ বছর বয়স্ক ইলকার এর আগে বিমান সংস্থা সামলেছেন। তাই তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতেই এয়ার ইন্ডিয়ার শীর্ষ পদে বসানোর ঘোষণা করেছে টাটা গোষ্ঠী।
তবে পত্রিকাটির খবরে আরো বলা হয়, কাশ্মির ইস্যুতে ভারত-তুরস্ক সম্পর্ক তলানিতে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়িপ এরদোগান নিজেকে মুসলিম জগতের ত্রাতা হিসেবে তুলে ধরতে ভারতকে আক্রমণ শানিয়েছেন বহুবার। ভারতও সাইপ্রাসের উদাহরণ টেনে তাকে জবাব দিয়েছে। আবার ভারতের সাথে তুরস্কের দূরত্ব তৈরির হওয়ার মধ্যেই পাকিস্তানের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এরদোগানের দেশ। এদিকে কানাঘুষো শোনা যায়, এরদোগানের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের একজন ছিলেন ইলকার। যদিও এসবই সোশ্যাল মিডিয়ার রটনাও হতে পারে। তবে তুরস্কের এক নাগরিক ভারতীয় সংস্থার প্রধান হওয়ার বিষয়টি অনেকেই হজম করতে পারছেন না। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, ইলকারের ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখার নেপথ্যে অন্য কোননো কারণ নেই।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, কেন্দ্রের তরফে জানা গেছে যে ইলকার বা কেন্দ্রীয় অসমারিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের থেকে কোনো বার্তা পেলে তারা এয়ার ইন্ডিয়ার নয়া প্রধানকে ‘সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স’ দেয়ার বিষয়ে অগ্রসর হবে। এদিকে যেকোনো ভারতীয় সংস্থা যদি কোনো বিদেশীকে তাদের প্রধান পদে নিযুক্ত করে, তাহলে ওই বিদেশী নাগরিকের ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখা হয়। সেক্ষেত্রে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাহায্য নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখার কাজে নিযুক্ত থাকে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংস তথা র।
উল্লেখ্য, ইলকার ১৯৭১ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের উপদষ্টা ছিলেন। ওই সময়কালে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন।
ইলকার বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং জনপ্রশাসনে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি ইস্তাম্বুলের মারমারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্নাতকোত্তরও করেছেন। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টার্কিশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। এই বিমান সংস্থার হাল ফেরানোর জন্য তাকে কৃতিত্ব দেয়া হয়। আর ওই সুনামের ফলেই টাটা গোষ্ঠী তাকে এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্ব দিতে আগ্রহী।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস