দেহে কত ধরনের মেদ থাকে!

অন্য এক দিগন্ত | Feb 21, 2022 09:01 am
দেহে কত ধরনের মেদ থাকে!

দেহে কত ধরনের মেদ থাকে! - ছবি : সংগৃহীত

 

মেদ হলো মূলত স্নেহ পদার্থ। প্রোটিন, শর্করা ও স্নেহ পদার্থই হলো শরীর গঠনের মূল উপাদান। অর্থাৎ ফ্যাট শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু এ কথাও সত্য যে অতিরিক্ত মেদ ডেকে আনতে পারে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি। তাই শরীরে যাতে প্রয়োজনের বেশি মেদ না জমে তার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি দিতে বলেন সব বিশেষজ্ঞই। রইল শরীরে জমা কয়েক প্রকার স্নেহ পদার্থের সন্ধান।

১। বেইজ ফ্যাট
বেইজ ফ্যাট হলো সাদা এবং বাদামি চর্বির মিশ্রণ। যখন আমরা ব্যায়াম করি, শরীর সাদা চর্বিকে ইরিসিন হরমোন ব্যবহার করে বেইজ ফ্যাটে রূপান্তরিত করে, এ প্রক্রিয়াটিকে ব্রাউনিং বলা হয়। এটি সাধারণত গলার হাড়ের চারপাশে এবং মেরুদণ্ড বরাবর পাওয়া যায়। আঙ্গুরের মতো খাবার খাওয়া বাদামি হওয়ার প্রক্রিয়াটিকে বেঁধে রাখতে সাহায্য করতে পারে।

২। ব্রাউন ফ্যাট
ব্রাউন ফ্যাট হলো একটি ভালো চর্বি যা ঘাড়ের পিছনে এবং বুকের অঞ্চলে পাওয়া যায়। এটি ব্রাউন অ্যাডিপোজ টিস্যু বা বিএটি নামেও পরিচিত, এই চর্বি শরীরের জন্য ভালো কারণ এটি শরীরের অন্তর্নিহিত তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর খাবার, পরিপূরক গ্রহণ এবং জীবনধারায় ছোট কিন্তু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করে শরীরে এর পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।

৩। ভিসেরাল ফ্যাট
এই নামটি আমরা প্রায়শই শুনে থাকি কারণ এটি শরীরে জমা হওয়ার কারণ গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। ভুঁড়িতে যে চর্বি জমে তার মূল কারণ এটিই। যদিও অঙ্গগুলোর সুরক্ষার জন্য এই ধরনের স্নেহ পদার্থের কিছুটা প্রয়োজন, কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে জমা হলে এই ধরনের মেদ কোলেস্টেরল, ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ এবং টাইপ-২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

৪। সাদা সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট
চর্বিযুক্ত সাদা ফ্যাটের ভাণ্ডার নিয়ন্ত্রণে রেখে, ত্বকের নিচের সাদা চর্বি অ্যাডিপোনেক্টিন উৎপাদনের কারণে শরীরে যে ইনসুলিন নিঃসৃত হয় তা নিয়ন্ত্রণ করে। সাদা সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট শরীরের জন্য ভালো। তবে শরীরে এটির আধিক্যে অ্যাডিপোনেক্টিনের অত্যধিক ক্ষরণ হতে পারে যা বিপাককে ধীর করে দিতে পারে এবং নিতম্ব, উরু এবং পেটের চারপাশে চর্বির পরিমাণ বাড়াতে পারে।

৫। সাবকুটেনিয়াস ফ্যাট
ত্বকের নিচের এই চর্বি সামগ্রিকভাবেই শরীরে, বিশেষ করে নিতম্ব, বাহু এবং পায়ের পিছনে থাকে। পেটে এর অত্যধিক পরিমাণ ডায়াবিটিস, স্থূলতা এবং সংবহনতন্ত্রের সমস্যার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ত্বকনিম্নস্থ চর্বির আধিক্য মানে শরীরে ইস্ট্রোজেনের আধিক্য যা পুরুষ এবং মহিলাদের শরীরে অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।

হৃদয় ভালো রাখতে রোজ খান চকোলেট! কমবে স্ট্রোকের ঝুঁকিও

একঘেয়ে শরীরচর্চা করেও কোনো ফল মিলছে না। রোগা হওয়ার জন্য কতই না স্বার্থত্যাগ! কেউ পছন্দের বিরিয়ানি ছাড়েন, কেউ বা আবার সাধের পিৎজার মায়াও ত্যাগ করেন। কিন্তু চকোলেট? ছোট থেকে বড় চকোলেট পছন্দ করেন না এমন মানুষ হাতে গোনা।

আপনিও কি চকোলেটের ভক্ত? কিন্তু এক টুকরা চকোলেট খেলেই আত্মগ্লানিতে ভুগতে থাকেন, মনে হয় এই বুঝি অপরাধ করে ফেললেন? সুস্থ থাকতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সেরা উপকরণ হলো এই চকোলেট। এমনকি ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে এটি। তাই প্রতিদিন চকোলেট খেলে শরীরে ক্ষতি হয়, এমন ধারণা ভুল।

তবে মিল্ক চকোলেট নয় সুস্বাস্থ্য পেতে ভরসা রাখুন ডার্ক চকোলেটের উপর। আসুন জেনে নিই ডার্ক চকলেট খেলে কোন রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

১) ডার্ক চকোলেটের এমন বৈশিষ্ট রয়েছে যা শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, যার কারণে আপনি ডায়াবিটিসের মতো রোগের শিকার হওয়া থেকেও বাঁচতে পারেন।

২‌) চকোলেটের মধ্যে থাকে কোকো যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। আসলে কোকোর মধ্যে থাকে প্রচুর মাত্রায় ফ্ল্যাভনয়েড যা মস্তিষ্কে রক্তের সঞ্চালনা বাড়িয়ে দেয়। শরীর, মন চনমনে হয়ে ওঠে যার ফলে চিন্তাশক্তি ও কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। অনেক বিজ্ঞানীরা আবার মনে করেন দীর্ঘদিন স্মৃতিশক্তি অটুট রাখতে চকোলেট দারুণ উপকারী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বেশি চকোলেট খান তারা স্ট্রেস মুক্ত থাকেন। তারা বুদ্ধিদীপ্ত, হাসিখুশি সন্তানের জন্ম দেন।

৩) ডার্ক চকোলেটকে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ সবল রাখতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন দু’-তিন টুকরো চকোলেট খেলে তা হৃদযন্ত্রের জন্য খুব ভাল।

৪) বার্ধক্যের প্রভাব কমাতেও ডার্ক চকলেটের বিশেষ গুণ রয়েছে। তাই যারা বয়স বাড়ার প্রভাব কমাতে চান, তাঁরা অবশ্যই ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এটি অ্যান্টি-এজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।

৫) যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে এমন রোগীরাও তারা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

৬) ডার্ক চকোলেট খেলে মিষ্টি, নোনতা, ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক টুকরো ডার্ক চকেলেট ‌খেয়ে ফেলতে পারেন। এতে ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে আর মিষ্টি খাওয়ার সাধও পূরণ হবে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us