ইউক্রেন সীমান্তে গোপনে যুদ্ধের প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাশিয়া!
ইউক্রেন সীমান্তে গোপনে যুদ্ধের প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাশিয়া! - ছবি : সংগ্রহ
ইউক্রেনে হামলা চালানো হবে না- রাশিয়ার এমন প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে নারাজ আমেরিকা। মুখে বাহিনী প্রত্যাহারের কথা বললেও রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনের উপরে হামলা চালাতে পারে বলে বুধবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বার পেন্টাগনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলো, গোপনে ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে রাশিয়া। সেই উদ্দেশ্যে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৭,০০০ অতিরিক্ত সেনাসদস্য।
আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বুধবার রাতে বলেন, ‘রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা ফেরাচ্ছে। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি, সেই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা।’
প্রসঙ্গত, মস্কোর তরফে মঙ্গলবার ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা খারিজ করা হয়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আইগর কোনাশেনকভ জানান, দক্ষিণ ও পশ্চিম প্রদেশের সেনা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট মহড়া শেষ হওয়ায় তারা ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাশিয়ার ওই ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও, ন্যাটো জোটের প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘এই বার্তা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে বাস্তবে রাশিয়া সেনা না সরানো পর্যন্ত ভরসা করা যায় না।’
বস্তুত, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনের উপরে হামলা চালাতে পারে বলে বুধবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বাইডেনও। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া যে সত্যিই সীমান্ত থেকে কিছুটা বাহিনী সরিয়েছে, তার প্রমাণ কিন্তু আমরা পাইনি। উল্টা বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, রুশ সেনা ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া এমন জায়গায় রয়েছে, যা এখনও যথেষ্ট ভয়ের।’
সেই সাথে ভ্লাদিমির পুতিন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা চালায়, তার ফল ভোগার জন্যও তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা এখনও চাই কূটনৈতিক পথেই এর মীমাংসা হোক।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এক বার্তায় বলেন, ‘বাহিনী সরানোর যে প্রতিশ্রুতি রাশিয়া দিয়েছিল, বাস্তবে তার কোনও প্রমাণ এখনও আমরা পাইনি।’ বুধবার ইউক্রেন সীমান্তে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ চাই না : পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ চান না। মূলত, তিনি রাশিয়ার নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা চান। মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট এমন তথ্য দেন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ইয়েনি শাফাক।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কো সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সাথে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রাশিয়া নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে যে প্রস্তাব পেশ করেছে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সাথে একটি চুক্তির কথা বলা হয়েছে। ওই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়াসহ ইউরোপের সকল দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষিত হবে।
ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, রাশিয়ার উদ্বেগকে উপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সামরিক জোট। মূলত, রাশিয়া তিনটি বিষয়ে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়। যেমন : ন্যাটো সামরিক জোটকে পূর্ব ইউরোপে সম্প্রসারিত করা যাবে না। ১৯৯৭ সালে ন্যাটো সামরিক জোটের যে ঘাঁটিগুলো এ অঞ্চলে ছিল তা বহাল থাকবে। কিন্তু, নতুন করে আর কোনো সামরিক অবকাঠামো বা ঘাঁটি নির্মাণ করতে পারবে না এবং দ্রুত ১৯৯৭ সালের সময়কার অবস্থায় ফেরত যেতে হবে। এছাড়া রুশ সীমান্তে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা যাবে না।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা যে সকল নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছি তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সামরিক জোটের সাথে আলোচনা চাই। আমরা কূটনীতিকভাবে সমস্যার সমাধান চাই।
এদিকে চলমান ইউক্রেন সঙ্কট সমাধানের আশায় দফায় দফায় বৈঠক চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেন সফরের পর রাশিয়া যান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। সেখানে তিনি পুতিনের সাথে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সামরিক জোট যেভাবে রাশিয়াকে চেপে ধরতে চাইছে তাতে দেশটির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
সূত্র : ইয়েনি শাফাক