ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়াকে উস্কানি দিচ্ছে চীন!
ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়াকে উস্কানি দিচ্ছে চীন! - ছবি : সংগ্রহ
আলাদাভাবে ইউক্রেনকে আক্রমণ করার বিষয়ে রাশিয়াকে পিছন থেকে মদত জোগানোর অভিযোগ আনল আমেরিকা। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি অভিযোগ করে বলেছেন, চীন যেভাবে রাশিয়াকে পিছন থেকে আক্রমণের ইন্ধন জোগাচ্ছে তা নিন্দনীয়। এর পিছনে চীনের কোনো অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কিরবি আরো জানান, আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন মঙ্গলবারই ইউক্রেন জটিলতা নিয়ে কথা বলতে ইউরোপের পথে পাড়ি দেবেন। ইউরোপ পৌঁছে অস্টিন ব্রাসেলস্-এ ন্যাটো-র মুখ্য কার্যালয়ে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় বসবেন এবং সেখান থেকে পোল্যান্ড যাবেন। পোল্যান্ডে, আমেরিকা আরো তিন হাজার সৈন্য মোতায়েন করার পরিকল্পনা করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
কিরবি আরো বলেন, ‘‘ইউক্রেন আক্রমণ নিয়ে যে রাশিয়া কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আমেরিকা বিশ্বাস করে না। তবে রাশিয়া যদি আক্রমণ করে তা হলে তা যেকোনো দিন হতে পারে।’’
তবে ইউক্রেন নিয়ে জটিলতা কথাবার্তা এবং কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন, বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রিন্স।
চীনের বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চয়ে ফিলিপাইনে জয়শঙ্কর
অস্ট্রেলিয়ায় চার দেশের অক্ষ কোয়াড-এর বৈঠক সেরে এ বার ফিলিপাইনে পৌঁছলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, পাখির চোখ সেই একটিই। চীনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এবং রণকৌশলগত মোকাবিলার জন্য নিজেদের হাত শক্ত করা ও কূটনৈতিক ওজন বাড়ানো— বেজিংয়ের সাথে দর কষাকষির সময় যা কাজে আসবে। সোমবার ফিলিপাইনে পৌঁছে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী টেডি লসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন জয়শঙ্কর।
তার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইট, “আমরা এক নতুন অংশীদারিতে প্রবেশ করছি, পারস্পরিক জাতীয় নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা যার ভিত্তি। এই দু’টি ক্ষেত্র নিয়েই আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।”
ফিলিপাইনে আগামী মে মাসে নির্বাচন। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এ দেশের বর্তমান সরকার গোড়ায় চীনপন্থী রাজনীতি করে নিজেদের হাত পুড়িয়েছে। চীনের কাছে বিপুল ঋণ তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্য বেশ কিছু রাষ্ট্রের পাশাপাশি ফিলিপাএনকেও কোণঠাসা করেছে বেইজিং।
স্বাভাবিকভাবেই এশিয়ার অন্য বড় দেশ ভারতের দিকে ঝুঁকেছে তারা। তারই ফলশ্রুতি গত মাসেই ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপাইনকে বিক্রি করেছে নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে ৩৭.৫ কোটি ডলারের চুক্তি সই হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। ফিলিপাইন নৌবাহিনীর কাছে ভারতের এই প্রথম অস্ত্র রফতানি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিতে চাইছেন যে, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি। ভারত এই ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপিন্সের মতো দেশকে দেয়ার অর্থ, সমুদ্রপথে চীনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি জোরালো সামরিক বার্তা দেয়া। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন অঞ্চলে যখন চীনের সঙ্গে সংঘাত চলছে ভারতের, তখন এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপাইনকে রফতানি করা নিঃসন্দেহে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রশ্নেই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ নিয়ে রাশিয়া এখন পর্যন্ত একটি বাক্যও উচ্চারণ করেনি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি এক বৈঠকের পরে দু’দেশের সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেছেন। অথচ রাশিয়ার সাথে যৌথ ভাবে তৈরি ব্রহ্মোসের চীন-বিরোধী কাজে লাগানোর সম্ভাবনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেনি মস্কো। বিষয়টিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সাউথ ব্লক।
আজ ভারত ফিলিপাইন বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিত এবং এই ক্ষেত্রে সহযোগিতার দিকটি গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকের আগে সে দেশের পররাষ্ট্র দফতর টুইটে জানায়, 'দু’দেশের কর্তারা কথা বলবেন নিরাপত্তা, কোভিড পরিস্থিতি, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে।'
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা