ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ভ্যালেন্টাইনের শুভেচ্ছা
সিমিউ পাখি - ছবি : সংগ্রহ
হঠাৎ প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে এসেছি। জলি, আমার বোন- সে প্রায়ই হাইকিং করে ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা দিয়ে। আমি হুট করে লসএঞ্জেলসে এসেছি, কয়েক দিন থাকব জলির বাড়ি উডহিলে।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জলির বাড়িতে বড় আকারে পার্টি হবে। সে বলল 'আজ হাইকিংয়ে যাব না বরং চলুন আপনাকে নিয়ে ম্যালিবু বিচে ঘুরে আসি।' সাগর পাড় দিয়ে হাঁটাহাটি করা আমার বহু দিনের অভ্যাস। তাছাড়া সাগরের ঢেউ যখন বালুর উপর আঘাত করে ফিরে যায় আবার ফিরে আসে, দেখে মনে হচ্ছে পানি এসেছে বালুর সাথে থাকতে ক্ষণিকের তরে। জলি আর আমি বালুর উপর দিয়ে হাঁটছি সাথে উপভোগ করছি প্যাসিফিক মহসাগরকে।
দেখছি পাহাড়ের উপর গড়ে উঠা বিশাল বিলাসবহুল বসত বাড়ি। দেখতে দেখতে হাজির হলো এক ঝাঁক সামুদ্রিক পাখি, সুইডিশ ভাষায় এ পাখির নাম ‘ফিস্ক মোছ’ (fiskmås), ইংরেজিতে বলে ‘সিমিউ’ (seamew)। সামুদ্রিক এই পাখির জীবনধারা, আচরণে আকর্ষণীয় অভিসারী বিবর্তন প্রদর্শন করে তাদের ভালোবাসার মাঝে।
সাধারণত সামুদ্রিক এই পাখিদের আয়ু অনেক বেশি হয়। এরা প্রজনন করে অনেক পরে। অন্য পাখিদের থেকে কম বংশ বিস্তার করে তবে তারা তাদের বাচ্চার পিছনে অনেক সময় ব্যয় করে থাকে। সামুদ্রিক এই পাখি এবং মানব জাতির মধ্যে অনেক ঐতিহাসিক মিল রয়েছে। যেমন তারা শিকারিদের খাদ্য সরবরাহ করে, জেলেদের মাছ ধরার ভান্ডারে যাবার পথ দেখায়, এবং নাবিকদের স্থলভূমিতে পৌঁছানোর পথও দেখায়।
১৪ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীজুড়ে ভ্যালেন্টাইনসডে বা ভালোবাসার দিবস। সামুদ্রিক এই পাখি আমাকে তার উপর একটি শিক্ষা দিয়েছে। বালুর উপর পড়ে রয়েছে একটি গোলাপ ফুল ডালসহ, ওমা একটি ফিস্ক মোছ দিব্যি ফুলটিকে মুখে নিয়ে কী সুন্দর করে চলে গেল ফুলটি উপহার দিতে তার সঙ্গিনীকে। দৃশ্যটি দেখে আমি তো অবাক এবং মনোমুগ্ধ হয়ে গেলাম।
পাখির জগতে ভালোবাসা আছে নিশ্চিত কিন্তু সাগরের তীরে গোলাপ ফুল উপহার দেয়া সঙ্গিনীকে তাও ১৪ ফেব্রুয়ারি, এ দৃশ্যটি ছিল বিরল। সঙ্গীনি তার সঙ্গীকে, ভাই তার বোনকে, মা তার সন্তানকে ভালোবাসে, কিন্তু প্রেম উপভোগ করার জন্য যে সম্পর্ক সেটা হয়ত কিছুটা ভিন্ন ধরণের ভালোবাসা। তবে ভালোবাসার মধ্যে রয়েছে শুধু ভালোবাসা। আজ বিশ্বজুড়ে ভ্যালেন্টাইনসডে, অনেকেই হয়ত সঙ্গীহীন কিন্তু বাবা-মা, ভাই-বোন বা বন্ধুহীন নয়? তো এই দিনের একটু আলাদা গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে । হতে পারে প্রেমবার্তা, হতে পারে সঙ্গীকে মেসেজ পাঠানো, অনলাইনে খাবারের অর্ডার করা। যেখানে দুজনের প্রথম দেখা হয়েছিল, সেখানে যাওয়া যেতে পারে। সেখানে গিয়ে কে প্রথম ‘ভালোবাসি’ বলেছিলেন—এসব স্মৃতি মনে করে খিলখিল করে হেসে উঠতে পারেন। আসলে ওই স্মৃতির ভেতর দিয়ে দুজনের একসঙ্গে পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া যাবে। নতুন করে আবিষ্কার করা যাবে ফেলে আসা প্রেম প্রীতির শিহরণ।
সঙ্গীর পছন্দের খাবার রান্না করে চমকে দিতে পারেন। রান্না না জানলেও বই বা ইউটিউব দেখে কাজটা আজ করেই দেখুন, কেমন চমকে ওঠেন তিনি! বাসায় যাদের টেবিলে একসঙ্গে বসে খাওয়ার সুযোগ মেলে না, তাদের আজ একসঙ্গে বসে খাওয়ার দিন।
এই দূরত্ব ও বিচ্ছেদ পেরিয়ে অলির কথা শুনে হোক না একটু বকুলের খিলখিল হাসি। অন্য সঙ্গীরাও ফিরে যাক নিজস্ব প্রেমিকের কাছে। তাদের সম্পর্কের ওপর ছড়িয়ে পড়ুক গোলাপ ফুলের মালা। ভালোবাসার মধ্যে রয়েছে শুধু ভালোবাসা, সে ভালোবাসা হতে পারে সবার জন্য। বল না সহজ করে আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই সহজ কথাটি আমরা যত সহজে বলতে পারি বা বলতে শিখেছি বাস্তবে তা প্রমাণ করতে হয়ত সারা জীবন লেগে যেতে পারে তার প্রতিফলন ঘটাতে। ভালোবাসা কি? কেন ভালোবাসি? কখন ভালোবাসা ঘৃণায় পরিনত হয়? এবং কেন হয়? স্বার্থ, সম্পর্ক, কারণ বা উদ্দেশ্য ছাড়া আছে কি ভালোবাসা বা ঘৃণা? বিনা স্বার্থে ভালোবাসার কথা শুনেছি অনেকবার কিন্তু এখনও দেখিনি তার জলন্ত উদাহরণ। আছে নাকি কারো কাছে এমনটি উদাহরণ? আমি ভালোবাসার খোঁজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটেছি তবুও সেই স্বার্থহীন ভালোবাসা কারে বলে তা জানতে বা দেখতে পারিনি আজও। পরোপকার করাকে আমি ভালোবাসার মধ্যে ধরিনি।
দুটি প্রাণের সাধনা এবং দুটি মন যখন কাছাকাছি, হৃদস্পন্দন যখন দ্রুতগতিতে চলতে থাকে ভালোবাসা বা প্রেম এসেছে জীবনে ভাবতে পারি। এমনটি ঘটতে পারে যখন নারীর স্পর্শে নরের সমন্বয় ঘটে। দেনা পাওনা ছাড়া ভালোবাসার স্বীকৃতি আছে কি? মা-বাবার ভালোবাসা সন্তানের প্রতি এটাও কি দেনা পাওনা? নাকি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা? বাবা-মার ভালোবাসা সন্তানের ওপর দায়িত্ব এবং কর্তব্য। শিক্ষার্থীর ওপর রয়েছে শিক্ষকের প্রীতি ও স্নেহ। বন্ধুর প্রতি রয়েছে বন্ধুর বন্ধুত্ব। বন্ধু কি? কিভাবে বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়? কখন বলতে পারি বন্ধুকে সত্যিকারে বন্ধু? বেশ সহজে আমরা বন্ধু হই আবার সেই বন্ধুকে খুব সহজেই ঘৃণা করতে বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করিনা। বন্ধু রয়েছে শত প্রকার যেমন ফেসবুকের বন্ধু, বিদেশী ও দেশী বন্ধু, রাস্তায় চলাকালীন বা ভ্রমণের সময় দেখা বন্ধু, স্কুলে পড়া কালীন বা খেলাধুলার মাঠে বন্ধু, কাজের বন্ধু হতে পারে অনেক রকমের বন্ধু।
মানব জাতির চরিত্রের একটি বিশেষ দিক রয়েছে তা হলো নিজের সুযোগ সুবিধাগুলোর দিকটা। যখন আমরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং নিজের স্বার্থকে উদ্ধার করতে কারো সাথে বন্ধুত্ব করি, আর যদি সফল না হই, তখন হিংস্রাত্মক আচরণ করতে দ্বিধাবোধ করিনা। মানুষ হতে হলে একটি জিনিস জীবনে শেখা দরকার তা হলো “এগ্রী টু ডিজএগ্রী”। পৃথিবীর সব মানুষ একইভাবে ভাবে না। তাই মনে করি আমাদের ভিন্নতা বা এগ্রী টু ডিজএগ্রীও জীবন চলার পথ নিদর্শনের একটি চাবিকাঠি।
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা বা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসা এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি সেই ভালোবাসা ঘৃণায় পরিণত হয়, সেটাকে সমাজে বলা হয় অস্বাভাবিক। এই স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক ঘটনায়ই প্রকৃতপক্ষে “জীবন”। আমরা আমাদের ধ্যানে, জ্ঞানে ও কর্মে মানব জীবন পাবার সন্ধানে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের ধ্যানে, জ্ঞানে ও কর্মে দানবেরও প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনে। যার কারণে আমরা মাঝে মধ্যে দানবের মত আচরণ করে থাকি। মানবের মাঝে দানবের সমন্বয় যখন ঘটে, হোক না সে হাজারও কাছের বা ভালোবাসার মানুষ, তাকে ভুলে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না।
মানব জাতি যেমন ব্যাংকে টাকা রাখে সুদে-মূলে লাভবান হবার জন্য। মানব জাতি ভালোবাসা, প্রেম, প্রীতি বা বন্ধুত্ব করে বিনিময়ে কিছু পাবার জন্য। যদি সেই পাওয়াটা মনঃপুত না হয় ঠিক তখন সেই একই মানব জাতি হয়ে যায় দানব। অনেক শুনেছি, পরিবার থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধবের থেকে। এত ভালোবাসি তোমাকে, জীবন দিয়ে দিব। কিন্তু স্বার্থের ব্যাঘাতে দুরে ফেলে চলে গেছে বিপদের মুহূর্তটি আসার সাথে সাথে এমনটিও দেখেছি। মুখের কথা আর তাকে কাজে পরিণত করা এক নয়।
পাঠক হঠাৎ আজ কেন এসব কথা? আজ এই মধুময় ভ্যালেন্টাইনসডে তে কেন বিরহের কথা আর এ তো তেমন কোন নতুন কথা নয়? না নতুন কথা নয় ঠিকই তবে আজ এসব কথার সাথে তুলে ধরব ১৯৭৫ সালের একটি ঘটনা। একটি ভালোবাসার ফুল ঝরে যাবার ঘটনা। আমার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনার কথা যা হবে অনেকের জন্য নতুন কিছু জানা।
আমার বাবার চাকরি তখন ঢাকা মালিবাগ এসবি অফিসে। তিনি নিরাপত্তা গার্ড (সিকিউরিটি ব্রাঞ্চ) হিসেবে কর্মরত। ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বড় ভাই চলে গেলেন স্কলারশিপে পোল্যান্ডে পড়াশোনা করতে। ১৯৭৫ সালের প্রথমদিকে মেঝোভাই যোগ দিলেন সশস্ত্র বাহিনীতে। বাড়িতে মা আমাদের নিয়ে আছেন। আমার হঠাৎ জন্ডিস হয়েছে, বয়স ১৩-১৪ হবে আর কী। মা আমাকে ঢাকাতে বাবার কাছে পাঠিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। ১৯৭৫ সালের ১২ অগাস্ট সন্ধ্যায় পৌঁছেছি বাবার কাছে। সকালে বাবার ডিউটি ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে এবং পুরো সপ্তাহে বাবার ডিউটি সেখানে। রাতের খাবার খেতে বাবা বললেন, কাল বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আমার ডিউটি আছে তা তুমি বই নিয়ে আমার সাথে যাবে। বসার রুমে একটু পড়াশোনা করবে সময় পার হয়ে যাবে। পরে ডিউটি শেষে আমাদের এসবি অফিসের ডাক্তারের কাছে তোমাকে নিয়ে যাব। বেশ অসুস্থ তবুও বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যাব, তাকে দেখতে পারব কাছ থেকে। সে এক না দেখা, না চেনা, না জানা, মনের গভীরে, মনের অজান্তে ভালোবাসা। জাতির পিতাকে দেখতে পাব। গাড়িতে করে রওনা দিয়েছি বাবার সাথে খুব সকালে। ধানমন্ডির বাড়ির চারপাশে নানা ধরণের লোকে ঘেরা। বাবার কলিগদের সাথে পরিচয় পর্ব শেষ। ঘণ্টা খানেক হয়ে গেছে হঠাৎ বাড়ি থেকে বের হয়ে বাইরে গাড়ির দিকে আসতে নানা ধরণের লোকের ভিড়ে। এত ভিড়ের মাঝে নজর পড়েছে আমার দিকে তার, কারণ সবাই তো চাকরিরত বয়স্ক লোক সেখানে। ছেলেটি কে? ও আমার ছেলে, এসেছে চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে, বাবা উত্তর দিলেন। ওহ, কী হয়েছে? জন্ডিস। তা তুমি ছুটি নিয়ে ওর চিকিৎসার ব্যবস্থা করো? বলে বঙ্গবন্ধু চলে গেলেন অফিসে। আমি মনের রাজ্যে একা একা ভাবছি যুদ্ধের সময়ের কথা, হরতালের কথা।স্লোগানের কথা। বঙ্গবন্ধুর কথা। সময় পার হয়ে গেছে কখন কিছুই মনে নাই, বাবার ডিউটি শেষে চলে এলাম মালিবাগে, ডাক্তার দেখানো হলো।
ওষুধ নিয়ে এলাম বাবার রুমে এবং এসে বিশ্রাম। বাবা অফিসে এসে ছুটি নিয়েছেন। পরের দিন সকালে বাবা-ছেলের একটু ঘোরাঘুরি। শরীরটা বেশ খারাপ, ঘুরতে ভালো লাগছে না তাই ফিরে এলাম মালিবাগে। রাতে একটু খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছি। বাবা নামাজ শেষ করে কখন ঘুমিয়েছেন জানি না। খুব সকালেই আজানের ধ্বনি শুনতে পেলাম। ঘুম থেকে উঠেছি, বাবা বেশ অস্থির এবং কান্নাকাটি করছেন। ভাবছি কী ব্যাপার গ্রামের বাড়িতে কিছু হয়েছে কি? মা একা ছোট ভাই-বোন নিয়ে বাড়িতে। না, ওই দিন রাতে চক্রান্তপূর্ণভাবে সপরিবারে হত্যার একটি ঘটনা ঘটে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল শেখ মুজিবের বাসভবনে গিয়ে একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত করে তাকে হত্যা করে। পরে খন্দকার মোশতাক আহমেদকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। সেদিন কান্নার রোল বয়েছিল সারা দেশে, ভালোবাসার কান্না। জানি না আমি ঢাকাতে না এলে কি হতো আমার বাবার? আর কি হতো আমাদের? কারণ আমরাও হয়ত সেদিন বাবা হারা হতাম! “What is lotted, cannot be blotted”. মনে হয় বাবার ভালোবাসা আরো বড় আকারে গড়ে উঠেছিল জাতির পিতার পরিবারের প্রতি শুধু সেদিনের ছোট্ট একটি প্রশ্নে ছেলেটি কে? এ ঘটনার পরে বাবা আর বেশিদিন চাকরি করেননি। পৃথিবীতে হাজারও প্রমাণ রয়েছে মীর জাফরের থেকে শুরু করে মোসতাক আহমেদের মতো লোকের। যারা গড়ে উঠেছে ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের ছায়াতে, শেষে তারাই অমানুষ হয়েছে বন্ধুত্বের সুযোগ ও ভালোবাসা পাবার পরে।
পাঠক, জীবনে অনেক অপ্রিয় বা প্রিয় ঘটনা যা ঘটে, অনেক কথাই যায় না বলা যা শুধু হৃদয়ে থেকে যায়। আবার কিছু কথা, কিছু ব্যথা হঠাৎ তা ফিরে আসে মনের মাঝে। তাই ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের ওপর কিছু কথা বলতে মনে পড়ে গেল সেদিনের কথা, যেদিন জাতির পিতার জীবনের ইতি টেনেছিল একদল মানুষ নামের দানবেরা।
৩৬ বছর একাকি দূরপরবাস জীবন আমাকে অনেক শিক্ষা ও উপদেশ দিয়েছে। তা হলো ফ্রেন্ড লিস্টের সব বন্ধুই আসল বন্ধু নয়। সেখানে কিছু সুবিধাবাদী বন্ধুও থাকে। ইতিহাস থেকে শেখা “মার চেয়ে যদি কেউ বেশি ভালোবাসে তখন তাকে বলা হয় ডাইনি”। জীবনে চরম আঘাত পাবার আগে নিজেকে সরিয়ে নেয়া শিখতে হবে। বন্ধুর বিপদ দেখলে যখন কেউ দৌড়ে পালাই তাদের খুঁজে খুঁজে আনফ্রেন্ড করা শিখতে হব। মনে বিশ্বাস রাখতে হবে, রিয়েল ফ্রেন্ড কখনো আনফ্রেন্ড হয় না বা হতে পারে না। আরো শিখেছি “বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু”। তাই ভালোবাসার ফ্রেম থেকে কেউ ঝরে যাবে, কেউ নতুন করে আসবে। এটাই জীবন। আমি ভালোবাসি আমার সহধর্মিনী এবং সন্তানের মাকে। আমি ভালোবাসি আমার ছেলে-মেয়েকে। আমি ভালোবাসি আমার পরিবারের অনেককে। আমি ভালোবাসি দেশকে এবং দেশের মানুষকে। আমি ভালোবাসি পৃথিবীকে এবং পৃথিবীর মানুষকে। তবে বিভিন্নভাবে। জীবনে বেঁচে থাকার মাঝে প্রতিদিন নিজেকে জানব আর শিখব- ভালোবাসা কারে বলে। তাই সবাইকে প্রাণঢালা ভালোবাসা আজকের এই মধুময় ভ্যালেন্টাইনস দিবসে।
লেখক : সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।
rahman.mridha@gmail.com