পাকিস্তানের জেএফ-১৭ থান্ডারের মোকাবেলায় ভারতের রাফাল
পাকিস্তানের জেএফ-১৭ থান্ডারের মোকাবেলায় ভারতের রাফাল - ছবি : সংগ্রহ
শেষ দফায় তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতে আসছে আগামী সপ্তাহেই। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, বাকি রাফাল যুদ্ধবিমানকে ভারতীয় প্রয়োজন মোতাবেক উন্নীতকরণের কাজও চলছে ভারতেই। ওই বিমানগুলো আগেই ভারতে এসে পৌঁছেছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই ফ্রান্সে ভারতকে ওই বিমানগুলো হস্তান্তরিত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সেগুলরো ভারতে এসে পৌঁছবে।’ আগের মতোই ওই বিমানগুলিতে ফরাসি বিমান বাহিনী এবং আরব আমিরাতের সহায়তায় জ্বালানি ভরা হবে। ভারতের জন্য তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমানগুলোকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত রাফাল যুদ্ধবিমান বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের জেএফে-১৭ থান্ডার ফাইটার জেটের সাথে রাফালের তুলনা করা যায় না। কারণ এই ফাইটার জেটটি আমাদের দেশীয় লাইট কমব্যাট ফাইটার জেট তেজসের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে। কিন্তু রাফালের ভারতে আসার পর চীন ও পাকিস্তান একে অপরের সাথে ডিল করেছে।
পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর মুখপাত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, পরবর্তী প্রজন্মের জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ৩ চীন আমাদের সহযোগিতায় তৈরি করেছে। এটি ২৩ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক কুচকাওয়াজে অন্তর্ভুক্ত হবে। চীন এই ফাইটার জেটের ট্যাক্সি টেস্ট এবং ফ্লাইট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। মার্চের শেষে প্রথম ব্যাচ পাবে পাকিস্তান।
জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ৩ হলো একটি অত্যাধুনিক, লাইটওয়েট, সর্ব-আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম মাল্টি-রোল ফাইটার এয়ারক্রাফট। এটি এয়ার-টু-এয়ার এবং এয়ার-টু-গ্রাউন্ড যুদ্ধের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি যৌথভাবে পাকিস্তান অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্স এবং চেংডু এয়ারক্রাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন চীন দ্বারা তৈরি।
রাফালের রেঞ্জ কমব্যাট ব্যাসার্ধ ৩৮০০ কিমি। যুদ্ধের পরিসীমা ১৮৫০ কিলোমিটার। যেখানে জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ৩-এর রেঞ্জ ৩৫০০ থেকে ৩৮৪০ কিমি। কিন্তু যুদ্ধের পরিসর ১৫০০ থেকে ১৮০০ কিমি। এখানে রাফালের সম্ভাবনা বেশি। এর বেস স্টেশন থেকে যে দূরত্বে বিমানটি সফলভাবে আক্রমণ করতে পারে এবং ফিরে আসতে পারে তাকে কমব্যাট রেডিয়াস বলে। রাফাল প্রতি সেকেন্ডে ৩০৪.৮ মিটার গতিতে বাতাসে উঠে যায়। যদিও জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ৩-এর আরোহণের হার প্রতি সেকেন্ডে ৩০০ মিটার।
রাফালে তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে। এয়ার টু এয়ার মিটিওর মিসাইল। এয়ার থেকে গ্রাউন্ড স্কাল্প মিসাইল। তৃতীয়টি হ্যামার মিসাইল। রাফালে স্থাপিত ভিটিয়োর মিসাইল ১৫০ কিমি, স্কাল্প মিসাইল ৩০০ কিমি আঘাত হানতে পারে। অন্যদিকে, অল্প দূরত্বের জন্য হ্যামার ব্যবহার করা হয়। আকাশ থেকে মাটিতে আঘাত হানতে এই ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকর প্রমাণিত হয়। যেখানে চীনের জেএফ-১৭ জেটে ৬ মোডের এয়ার টু এয়ার মিসাইল, ৫টি মোড এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল এবং ৫ ধরনের অ্যান্টি-শিপ মিসাইল লাগানো যেতে পারে। অথবা তিনটির সমন্বয় করা যেতে পারে।
ভারতীয় রাফালের গতি ঘণ্টায় ২৪৫০ কিলোমিটার। অর্থাৎ শব্দের দ্বিগুণ গতি। যেখানে পাকিস্তানের জেএফ-১৭ থান্ডার ফাইটার জেটের গতি ঘণ্টায় ২৪৫০ থেকে ২৪৬৯ কিলোমিটার বলা হচ্ছে। রাফালে একটি সর্বজনীন ফাইটার বিমান। এটি পাহাড়ের নিচু স্থানে অবতরণ করতে পারে। সমুদ্রে চলাচলের সময় এটি একটি যুদ্ধজাহাজে অবতরণ করতে পারে। রাফালে চারদিকে নজরদারি রাখতে সক্ষম। অন্যদিকে, পাকিস্তানি জেট একটি বহুমুখী যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান বা চীন এই সুবিধাগুলোতে কতটা শক্তিশালী সে সম্পর্কে কোনো তথ্য ভাগ করেনি।
সূত্র : পুবের কলম