৮৫ রান করে ১০.৭৫ কোটি, ফ্লপ বোলারকে ৯ কোটি

অন্য এক দিগন্ত | Feb 14, 2022 07:29 am
ফ্লপ বোলারকে ৯ কোটি

ফ্লপ বোলারকে ৯ কোটি - ছবি : সংগৃহীত

 

প্রতি বছরই আইপিএলে কয়েকজন ক্রিকেটারের ভাগ্য ফিরে যায়। অনেকে পারফর্ম করেও সুযোগ পান না, আবার অনেকে পারফর্ম না করেও কোটি কোটি টাকা (ভারতীয় রুপি) ঘরে তোলেন। এক নজরে দেখে নিন এ বারের নিলাম এমন তারকাদের যাদের বেশ অদ্ভুতভাবেই চড়া দামে বিক্রি হলেন।

২০১৯ সালে নয় আইপিএল ম্যাচে খলিল আহমেদ ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন বটে, তবে তারপর থেকে তার পারফরম্যান্স, অন্তত আইপিএলে নিম্নমুথী। গত মরশুমে সাত ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন খলিল। তা সত্ত্বেও দলে নিল ৫০ লাখ টাকা বেস প্রাইসেক খলিলকে ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় শেষ পর্যন্ত দলে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস।

২০১৮ সালে ভারতীয় অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ব্যাটিং বোলিং দুই করতে সক্ষম অভিষেক শর্মা। নিলামে এ বছরও পুনরায় তাকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলে। পার্থক্য একটাই গতবার তাঁর জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়েছিল, সেখানে এ বছর খরচ হলো ৬ কোটি ৫০ লক্ষ। আইপিএলে ২২ ম্যাচে ২৪১ রান ও সাত উইকেট নেয়া অভিষেকের এত দাম উঠবে হয়তো অভিষেক তা নিজেও ভাবতে পারেননি।

গত বছর রিয়ান পরাগ ১১ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯৩ রান করেছিলেন। তার সর্বোচ্চ রান ২৫ ও স্ট্রাইকরেট ছিল ১১২.০৪। প্রতিভা রিয়ানের মধ্যে নিঃসন্দেহে রয়েছে। তবে গত বছর যাকে ২০ লক্ষ টাকায় কেনার পর এমন পারফরম্যান্স দিয়েছিল, তার জন্য রাজস্থানের ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করাটা বেশ বিস্ময়কর।

রিয়ান পরাগের মতো রাহুল তেওয়াটিয়াও গত মরশুমে রাজস্থান রয়্যালসের হয়েই খেলেছেন। তবে ১৪ ম্যাচে ১৫.৫০ গড় ও ১০৫.৪৪ স্ট্রাইক রেটে ১৫৫ রানও আট উইকেট, ৯ কোটি টাকায় গুজরাট টাইটানসের তাকে দলে নেয়ার জন্য যথেষ্ট বলে মনে হওয়াটা বেশ কষ্টকর।

লম্বা ছক্কা হাঁকাতে পারদর্শী নিকোলাস পুরান। সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। তবে গত মরশুমে ১২ ম্যাচে মোট ৮৫ রান করার পর ১০ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় তাকে এ মরশুমের জন্য দলে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

১৭৫টি আইপিএল ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা, প্রায় চার হাজার রান, বড় ম্যাচে দলকে জেতানো, আম্বাতি রায়ডুর নামের পাশে সব বিষয়েই টিকমার্ক থাকবে। তবে সালটা ২০১৮ নয়, ২০২২। চার মরশুম আগে ৪৩-র অধিক গড় ও প্রায় ১৫০-র স্ট্রাইক রেটে রান করা রায়াডু যে আর আগের ফর্মে নেই তা গত মরশুমে তার মাত্র ২৫৭ রান করাই প্রমাণ করে দেয়। ৩৬ বছর বয়সী রায়াডুর পিছনে চেন্নাই সুপার কিংসের ৬ কোটি ৭৫ লক্ষ খরচ করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক।

ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট, সৈয়দ মুস্তাক আলিতে এই বছরই কর্ণাটকের হয়ে অভিষেক ঘটিয়েছেন অভিনব সাদারঙ্গানি। খেলেছেন মাত্র চারটি ম্যাচ। তাতেই বেস প্রাইস ২০ লক্ষ টাকার ১৩ গুণ বেশি, ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় গুজরাট টাইটানস তাকে দলে নেন। মিডল অর্ডার ব্যাটার তথা লেগ স্পিনার সাদারাঙ্গানি মুস্তাক আলির চার ম্যাচে ১৬২ রান করেছেন বটে। তবে তাতে ভর করে এত অর্থ ব্যয় করাটা একটু অবাক করবার মতোই।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মোটামুটি খারাপ পারফর্ম করেননি রোমারিও শেফার্ড। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ম্যাচ খেলে ১৬০-র অধিক স্ট্রাইক রেটে রান ও ১২ উইকেট আহামরি কিছু না হলেও, ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের প্রতিভার আভাস দেয়। তবে ৭৫ লক্ষ টাকার বেস প্রাইস থেকে ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি হওয়ার জন্য তা যথেষ্ট কি?

ব্যাট হাতে লম্বা ছক্কা হাঁকানোর প্রতিভা, বল হাতে অফস্পিন, লেগস্পিন দুইই করতে সক্ষম লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে ইংরেজ তারকার আইপিএল নিলামে দাম আর গত মরশুমের পরিসংখ্যানের মধ্যে কোনোরকম সামঞ্জস্য খুঁজে বের করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। গত মরশুমের আইপিএলে ইংল্যান্ড তারকার গড় ছিল ৮.৪,স্ট্রাইক রেট ১০২.৪৪। সেই লিভিংস্টোন বিক্রি হলেন ১১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকায়। দীর্ঘ দর কষাকষির পর পাঞ্জাব কিংস তাকে দলে নেয়।

২১ বছর বয়সী দেবদূত পাডিক্কালের ব্যাপারটা বাকি সকলের থেকে একটু ভিন্ন। তাকে ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার বিশাল অঙ্কে ২১ বছরের পাডিক্কালকে কেনে রাজস্থান রয়্যালস। তবে যে দলে আগে থেকে সঞ্জু স্যামসন, জোস বাটলার, যশস্বী জয়সওয়াল রয়েছেন, সেই দলে ওপেনার পাডিক্কাল খেলবেন কোথায়? সেই কারণেই তাকে এত দামে রাজস্থানের কেনাটা বেশ বিস্ময়কর।

বিজয় হাজারে ট্রফিতে উত্তর প্রদেশের যশ দয়াল এই মরশুমে খুব একটা খারাপ পারফর্ম করেননি। সর্বোচ্চ উইকেট নেয়া বোলারদের তালিকায় প্রথম দশে ছিলেন এই বাঁ-হাতি বোলার। ব্যাটটাও টুকটাক করতে পারেন দয়াল। তবে তাই বলে ২৪ বছর বয়সী, ২০ লক্ষ টাকা বেস প্রাইসের জন্য গুজরাট টাইটানসের ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করার সিদ্ধান্তে কয়েকজনের ভ্রু কুঁচকানোটা স্বাভাবিক। তবে গুজরাট দলে নিলেও কেকেআর ও আরসিবিও কিন্তু যশের পিছনে ছুটেছিল। সুতরাং, আপতত আনকোরা হলেও ভবিষ্যতে যশ দয়াল সকলে চমকে দিলেও দিতে পারেন।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us