কোন কোন রোগে হৃদ্স্পন্দন বাড়ে!
কোন কোন রোগে হৃদ্স্পন্দন বাড়ে! - ছবি : সংগ্রহ
বর্তমানে অনেকেই এমন কিছু যন্ত্র ব্যবহার করেন, যার মাধ্যমে নিয়মিত হৃদ্স্পন্দনের হার মাপা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদ্স্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার হয়। তবে হৃদ্স্পন্দনের হার ব্যক্তি ভেদে প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০-ও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হৃদ্স্পন্দনের হার একাধিক অসুস্থতার উপসর্গ হতে পারে। হৃদ্স্পন্দনের হার কমে যাওয়া ও বেড়ে যাওয়া যথাক্রমে ব্রাডিকার্ডিয়া ও ট্যাকিকার্ডিয়ার লক্ষণ হতে পারে। তবে যারা পেশাগত ভাবে খেলাধুলা কিংবা শরীরচর্চা করেন তাদের হৃদস্পন্দনের হার সাধারণভাবে অপেক্ষাকৃত কম হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে হৃদ্স্পন্দনের হার কম হওয়ায় পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। হৃদ্যন্ত্রের যে অংশটি হৃদ্স্পন্দনের উৎস সেই সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সঠিক ভাবে কাজ না করলে হৃদ্স্পন্দনের হার কমে যেতে পারে। এটি হৃদ্রোগের অন্যতম লক্ষণ। আবার টাইফয়েডের মতো কিছু কিছু রোগের সংক্রমণের ফলেও এই হার কমে যায়। থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ না করলেও এমন ঘটনা ঘটে। রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হৃদ্যন্ত্রে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আবার হৃদ্স্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে গেলেও সেটি ডেকে আনতে পারে বিপদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত যে কোনও ধরনের জ্বর বাড়িয়ে দেয় হৃদ্স্পন্দনের হার। সংবহনতন্ত্রের একাধিক সমস্যাও বাড়িয়ে দিতে পারে হৃদ্স্পন্দনের হার। রক্তাল্পতা ও হাঁপানির মতো সমস্যাও হৃদ্স্পন্দনের হার বাড়িয়ে দিতে পারে। কোভিডের পরেও বেশ কিছু রোগীর মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
হৃদ্স্পন্দনের অস্বাভাবিক হার হৃদ্রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। ক্লান্তি, ঝিমুনি, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট- সবই এর লক্ষণ। আবার বিশ্বে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণই হল হৃদ্রোগ। কাজেই এই ধরনের সমস্যা উপেক্ষা করা একেবারেই অনুচিত। বর্তমানে হৃদ্স্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে দিয়েই এর পরিমাপ সম্ভব। কাজেই যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
খাওয়ার পর একটু হাঁটুন : পাবেন অনেক উপকার
দুপুরবেলা জমিয়ে আহারের পর একটু বিশ্রাম না নিলে কি চলে! যেমন ভাবনা তেমন কাজ। খাওয়াদাওয়ার পর সটান বিছানায় শুয়ে পরলেন আর তার পরেই একচোট ভাতঘুম। এই আলস্য থেকেই কিন্তু হতে পারে বদহজমের মতো সমস্যা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরকে যত সচল রাখবেন, ততই সুস্থ থাকবেন। খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট হাঁটার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস সত্যিই কি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?
১) খাবার খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস থাকলে, হজমশক্তি বাড়ে। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর হয়।
২) অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত? খাওয়ার পরই বিশ্রাম নিলে কিন্তু শরীরে মেদ জমতে পারে। একটু হাঁটাচলা করে নিয়ে সেই সমস্যা দূর হবে। ক্যালোরি খরচ করার জন্য হাঁটার কোনো বিকল্প নেই।
৩) খাওয়ার পর হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যাদের সুগারের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে খাওয়ার পর হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। খাওয়ার পর রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে হেঁটে নিলে রক্তে শর্করা তৈরি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৪) খাওয়ার পর নিয়মিত হাঁটাচলা করলে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে আসে।
৫) যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অভ্যাস খুবই উপকারী।
তবে খাওয়ার পর কখনই খুব জোরে হাঁটবেন না। ধীর গতিতে হাঁটুন। তাতেই উপকার পাবেন। প্রথমেই ১০ মিনিট হাঁটার প্রয়োজন নেই। ৫ থেকে ৬ মিনিট হাঁটতে শুরু করুন। ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা