রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব মানে ডায়াবেটিস না আরো জটিল রোগ
রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব মানে ডায়াবেটিস না আরো জটিল রোগ - ছবি : সংগৃহীত
একাধিকবার প্রস্রাব করতে যাওয়ার ঠেলায় রাতের ঘুমের বারোটা বাজছে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না, তাই সারাদিন থাকছে ক্লান্তি। অল্পেই রেগে যাচ্ছেন। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে ‘নকচুরিয়া’। অর্থাৎ একাধিক বার প্রস্রাবে যাওয়ার জন্য রাতে ঘুম নষ্ট। এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। চল্লিশের কোঠায় অনেক পুরুষই এই সমস্যার সম্মুখীন হন। পঞ্চাশের পর থেকে এই সমস্যা আরো বাড়ে।
এমন অসুখ কী কারণে হয়?
সুস্থ থাকতে বেশি করে পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন সব পুষ্টিদিদই। তবে পিপাসা অনুযায়ী পানি খাওয়া উচিত। দিনে দেড়-দু’লিটার পানি খেলেই অনেক শারীরিক সমস্যা দূরে রাখা যায়। চা, কফি কিংবা অ্যালকোহল বেশি খেলেও রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়তে পারে। কর্মসূত্রে অনেককেই রাত জেগে কাজ করতে হয়। বডি ক্লক পরিবর্তন হলেও নকচুরিয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
তা ছাড়া ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। অ্যান্টি সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ বা কিডনির ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়। রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। হার্টের অসুখ, কিডনিতে স্টোন এবং প্রস্টেটের সমস্যা থেকেও এমনটা হতে পারে। শুধু পুরুষদেরই নয়, মেয়েরাও অনেকে গর্ভাবস্থায় এবং মেনোপজের পর নকচুরিয়া-য় ভোগেন ।
নকচুরিয়া-র সমস্যা এড়াতে হলে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতেই হবে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দু’ঘণ্টা আগে পানি পান কমিয়ে দিন।মদ্যপান যথাসম্ভব কম করাই ভালো। কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার ওষুধ খেলে তা দিনের বেলা খাওয়ার চেষ্টা করুন, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেও রোগীর কোনো উন্নতি না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
দিনে কী পরিমাণ পানি খাচ্ছেন, আর কতবার প্রস্রাব হলো- জানার জন্য একটি ডায়েরিতে তিন দিনের হিসাব লিখে রাখতে পারেন। এই ডায়েরি দেখে রোগের গতিবিধি ধরতে পারেন চিকিৎসক। ইউরিন কালচার করিয়ে দেখে দেখে নিতে পারেন, মূত্রনালিতে কোনো সংক্রমণ রয়েছে কি না। এ ছাড়া অ্যানিমিয়া, থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস পরীক্ষাও করিয়ে নিতে পারেন। এতেও সমস্যা না কমলে মূত্রস্থলী পরীক্ষা করে দেখা হয়।
পিঠের ব্যথা কমছেই না? কী করবেন
করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সব কিছুই এখন ডিজিটাল মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। আধুনিকতার কারণে শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়াটা অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
পড়াশোনা থেকে বাজার দোকান- সব কিছুই সামলানো যাচ্ছে ফোন কিংবা কম্পিউটারের পর্দায়। ফলে কায়িক শ্রম খানিক কম হচ্ছে। অনেকেই আবার সময়ের অভাবে বাড়িতেও শরীরচর্চা করে উঠতে পারেন না। সব কিছুর ফলে পিঠে ব্যথার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। সমস্ত বয়সের মানুষের মধ্যেই এই সমস্যার পরিমাণ বাড়ছে। ৯০ শতাংশ মানুষের পিঠে ব্যথার প্রধান কারণ- এক জায়গায় অনেক ক্ষণ বসে থাকা। তবে এই সমস্যার তাৎক্ষণিক উপশমও হতে পারে, এমন কিছু উপায় আছে। সেগুলো কী কী?
১) চেষ্টা করুন, ঘুমোনোর সময় মাথার নিচে বালিশ না নিতে।
২) নিয়মিত শবাসন, ভুজঙ্গাসন, মকরাসন প্রভৃতি শরীরচর্চা করলে পিঠের ব্যথা কমে।
৩) অফিসের কাজ করার সময়ে একই জায়গায় এবং একই ভঙ্গিতে অনেক ক্ষণ বসে থাকবেন না। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর বিরতি নিতে পারেন। উঠে দাঁড়ান, হাঁটাচলা করুন।
পানি কম খেলে ওজন বাড়ে কেন?
সারা দিন কিছু ক্ষণ অন্তর পানি খেতে বলা হয়। তাতে শরীর সতেজ থাকে। ভিতরের বহু দূষিত পদার্থ থেকেও মুক্তি পেতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেকেই তেমন নিয়ম করে পানি খান না। হয়তো পানি নিয়ে বেরোতে ভুলে গেলেন। কিংবা কাজের চাপে পানি খাওয়ার কথা খেয়ালই রইল না। অথবা সময় পেলেন না। কেউ বা বার বার শৌচালয়ে ছুটতে যাওয়ার চিন্তায় পানি খান না। অনেকক্ষণ পর গলা যখন শুকিয়ে একেবারে কাঠ, তখন পানি খেলেন। দিনের পর দিন এমন চললে কী হয়? শরীর তো ভিতর থেকে শুকিয়ে যায়ই। তার সাথে আরো সমস্যা আছে। ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।
কিন্তু পানি কম খেলে ওজন বাড়বে কেন?
পানি যেমন কর্মশক্তি জোগায়, তেমনই শরীরের তাপমাত্রা রাখে নিয়ন্ত্রণে। তবে এর সাথে আরো একটি কাজ করে। তা হল, পেট কিছুটা ভর্তি রাখতে সাহায্য করে পানি। কিন্তু পানি কম খেলে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। বার বার খিদে পায় কম পানি খেলে। এ দিকে, শরীরের যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি খাবার খেলে বাড়ে ওজন। আরো একটু বেশি ক্যালোরিরও প্রয়োজন পড়ে শরীরের। কারণ পানি যে কাজের শক্তি জোগায়, এ ক্ষেত্রে তা-ও খাদ্য থেকে পেতে হয় শরীরের।
তা ছাড়া, কম পানি খেলে শরীর পানি সঞ্চয় করতে থাকে। ফলে অন্য খাবার খেলেও তা হজম হওয়া হয় কঠিন। ফলে ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাও বাড়ায়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা