সিরাজকে বাবার সাথে অটো চালাতে বলা হয়েছিল!
সিরাজ - ছবি : সংগ্রহ
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষ্মণদের শহর থেকে উঠে এলেও, ব্যাট হাতে নয়, বল হাতে শাসন করা তার কাজ। আজ খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ। বিভিন্ন ফরম্যাটে নিজেকে উপযোগী করে তুলেছেন। তবে তার উত্থানটি এমন মসৃণ ছিল না। আজ পেছন ফিরে তাকালে এখনো কেমন যেন অবিশ্বাস হয়। ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি একবার বলেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ার ভালোবাসা এবং সমালোচনা কোনোটাকেই গুরুত্ব না দিতে।
অর্থাৎ আজ যে ভালোবাসছে, ব্যর্থ হলে কালকে সেই গালাগালি করবে। জীবনের চরম শিক্ষা তখনই পেয়ে গিয়েছিলেন হায়দ্রাবাদের তরুণ পেসার। আগামী মরসুমের আগে যে তিন ক্রিকেটারকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তথা আরসিবি ধরে রেখেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন তিনি। অথচ ২০১৯ মরসুমের পরে তিনি নাকি ভেবেছিলেন তার আইপিএল কেরিয়ার শেষ। কেন এমন ভেবেছিলেন পেস বোলার মোহাম্মদ সিরাজ?
২০১৯ সাল মোটেই ভালো যায়নি আরসিবি-র। বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন দল প্রথম ছ’টি ম্যাচ হেরেছিল। সে বছর মোট ন’টি ম্যাচ খেলেছিলেন সিরাজ। ওভার প্রতি রান দিয়েছিলেন ৯.৫৫। মাত্র সাতটি উইকেট পান। সেই প্রসঙ্গে সিরাজ বলেন, ২০১৯ মরসুম আমার সব থেকে খারাপ গিয়েছিল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ২.২ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়েছিলাম। সবাই সমালোচনা করে বলেছিল, ক্রিকেট ছেড়ে বাবার সাথে অটো চালাতে।
উল্লেখ্য, তার বাবা অটো চালান। ওই দারিদ্র্য থেকেই উত্থান তার।
আমি ভেবেছিলাম আমার আইপিএল কেরিয়ার শেষ। পরের মরসুমে সেই কলকাতার বিরুদ্ধে করা একটি স্পেলে শিরোনামে এসেছিলেন সিরাজ। তার উপর ভরসা রাখার জন্য ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। সিরাজ বলেন, আরসিবি ম্যানেজনেন্ট আমার উপর ভরসা রেখেছিল। আমিও ভেবেছিলাম নিজের শক্তি অনুযায়ী বল করলে সাফল্য পাব। ২০২০ সালে কলকাতার বিরুদ্ধে ম্যাচ আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। সেদিন আইপিএলে জীবনের সেরা স্পেল করেছিলাম।
২০২০ সালে আইপিএল-এ ভালো বল করার সুবাদেই অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দলে সুযোগ পান সিরাজ। বাকিটা ইতিহাস। গাব্বাতে সিরিজের শেষ টেস্টে এক ইনিংসে ৫ উইকেট নেন তিনি। গোটা সিরিজে সিরাজের বোলিং মুগ্ধ করেছিল সবাইকে। তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাননি ভারতের এই ডান হাতি ফার্স্ট বোলার।
সিরাজ বলছেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরার পর বিরাট কোহলি আমাকে জানিয়েছিল আমি যা করেছি বল হাতে, এই পারফরম্যান্স নাকি মানুষের অনেকদিন মনে থাকবে। কারণ একেবারেই নতুন ছিলাম তখন। বলতে গেলে আমাদের তৃতীয় শ্রেণীর দল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস তৈরি করে দিয়েছিল। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময় পিতৃ বিয়োগ ঘটে। ফিরে এসে বিমানবন্দর থেকে সোজা বাবার কবর স্থানে গিয়েছিলেন সিরাজ।
সূত্র : নিউজ ১৮