৩০ বছর তরুণী জানলেন, তিনি তার আসল বাবা নন!
৩০ বছর তরুণী জানলেন, তিনি তার আসল বাবা নন! - ছবি : সংগ্রহ
বাবার জন্য পাগলপারা মেয়ে। বাবার স্বজনদের প্রতি গভীর টান অনুভব করেন। এমনকি তাদের সাথেই তিনি জন্মদিন উদযাপন করার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে একটি ঘটনা সবকিছু উলটপালট করে দিয়েছে। যে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন, তা তার অস্তিত্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে।
মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বাবা-মা জানতে পারলেন সেই 'সন্তান'-এর শরীরের তার 'বাবা'র জিনই নেই! আর এই সত্যি সামনেই আসতেই সংশ্লিষ্ট ফার্টিলিটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন ওই মার্কিন দম্পতি। মাইক হার্ভে এবং তাঁর স্ত্রী জিনি হার্ভে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের 'সন্তান' জেসিকার ইটালি যাওয়ার কথা ছিল। তার আগে ওই তরুণী নিজের ডিএনএ পরীক্ষা করান। জেসিকার বাবা মাইক জন্মসূত্রে ইটালির মানুষ। তাই জেসিকার শরীরেরও সেই জিন থাকার কথা। কিন্তু, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার পরই স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি। জানতে পারেন, তার শরীরে ইটালিয় জিন নেই!
ঘটনায় অভিযুক্ত ফার্টিলিটি ক্লিনিকের তরফে জানানো হয়েছে, তারা গোটা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুতরভাবে দেখছে। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, খতিয়ে দেখছে তারা। অন্যদিকে, হার্ভে পরিবার জানিয়েছে, জেসিকা স্থির করেছিলেন ৩০তম জন্মদিন ইটালিতে পালন করবেন তিনি। সেই কারণেই নিজের ডিএনএ পরীক্ষা করিয়েছিলেন। বস্তুত, ডিএনএ পরীক্ষার এই কিটটি খ্রিস্টমাসের উপহার হিসাবে পেয়েছিলেন তিনি! জেসিকা ও তার স্বামী স্থির করেছিলেন, ইটালিতে গিয়ে জেসিকার দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের খোঁজার চেষ্টা করবেন তারা। সেইসব পরিবারের সদস্যরা কেমন আছেন, তা জানবেন। কয়েকটা দিন সকলে মিলে আনন্দে কাটাবেন। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টে সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যায়।
পরে সংবাদমাধ্যমকে জেসিকা জানিয়েছেন, 'ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট যখন আসে, তখন আমি আমার ডেস্কে বসেই কাজ করছিলাম। আমি দেখলাম, সেখানে ইটালিয় বংশোদ্ভূত হওয়ার কোনো তথ্যই ছিল না!' এরপর আবারো নিজের ডিএনএ পরীক্ষা করান জেসিকা। তা থেকে জানা যায়, তার সাথে তার বাবার আদতেই কোনও সম্পর্ক নেই!
মাইক এবং জিনি জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে তাদের কিছু সমস্যা ছিল। সেই কারণেই ফার্টিলিটি ক্লিনিকের সাহায্য নিয়েছিলেন তারা। জিনির গর্ভে সরাসরি শুক্রাণু কৃত্রিমভাবে প্রতিস্থাপিত করা হয়। সেই শুক্রাণু জিনির স্বামী মাইকের বলেই দাবি করেছিল ফার্টিলিটি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এরপর ১৯৯১ সালে ওহিও-র একটি হাসপাতালে জিনি ও মাইকের মেয়ে জেসিকার জন্ম হয়। সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন জিনি। সন্তানের বেড়ে ওঠার বছরগুলোতেও এই দম্পতির কোনো সমস্যা হয়নি। অথচ, এত বছর তারা জানতে পারলে সেই সন্তানের শরীরে অভিভাবক দম্পতির একজনের জিনই নেই! তাহলে কি জিনির গর্ভে তার স্বামী মাইকের বদলে অন্য কানো শুক্রাণু প্রতিস্থাপিত করা হয়েছিল? প্রাথমিকভাবে তেমনটাই মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : এই সময়