কেন আমেরিকার পাকিস্তানকে খুবই দরকার
জো বাইডেন ও ইমরান খান - ছবি : সংগ্রহ
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ রয়টার্সের এক নিউজ বলছে, আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন তাদের সংসদের শুনানিতে কেন আমেরিকার পাকিস্তানকে জরুরি দরকার তা ব্যাখ্যা করেছেন। তবে তিনি পরিষ্কার করে রাখেন যে, পাকিস্তানের বহুবিধ স্বার্থ আছে যেগুলোর অনেকই আফগানিস্তানে আমেরিকার স্বার্থের সাথে মেলে। যেমন আমেরিকা চাইবে অন্তত তালেবানদের গাইড করা এবং তালেবানের প্রতিদ্বন্দ্বী যেসব আরো রেডিক্যাল ইসলামী সশস্ত্র গ্রুপ আছে তাদের নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদিতে পাকিস্তান তাদের সহায়তা করুক। এ কারণে পাকিস্তান আমেরিকার কাছে প্রয়োজনীয় এবং তাই পার্টনার হতে পারে।
কিন্তু ব্যবহারিক জায়গায় পাকিস্তান-আমেরিকা সম্পর্ক থমকে দাঁড়িয়ে আছে। সেই অক্টোবর ২০২১ সালে আমেরিকান উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের সফরের পর থেকে কিছুই যেন নড়েনি। সেটা গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত না থাকা মানে, সে কাজ এক অস্থায়ী রাষ্ট্রদূত দিয়ে চালানোতেই প্রকাশ পায়- এমন মনোভাব প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের এক থিংকট্যাংক গবেষক।
আসলে সোজাসাপ্টা বললে, বাইডেন প্রশাসন সম্ভবত ইমরানের এই লম্বা চীন সফরে খুবই অস্বস্তি ও বিরূপ অবস্থায় পড়েছেন। যেমন, যদি পাকিস্তানকে তাদের এত দরকারি মনে হয় তবে গত অক্টোবরের পর থেকে আমেরিকার আগ্রহ অগ্রগতির প্রকাশ নাই কেন? আসলে এ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা নেই বাইডেন প্রশাসনের হাতে। তাই খুব সম্ভবত শুভ-ইঙ্গিত বা বন্ধুত্বের ইঙ্গিত করতেই হয়তো নেড প্রাইসের এই ‘আমরা এখনো স্ট্রাটেজিক পার্টনার’ বক্তব্য! তবে প্রাইসের আচরণের এই ব্যাখ্যা আমাদের আরো নিশ্চিত হতে হবে। মানে, এখনো নিশ্চিত বলে ধরে নেয়া ঠিক হবে বা তবে আরো মনিটর করতে হবে।
কিন্তু যেটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, নেড প্রাইস একটা ইঙ্গিতে যেন বলে ফেলেছেন যে, আমাদের মতো দেশ চীনের সাথে বিনিয়োগ পাওয়ার সূত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার পরও সমান্তরালে আমেরিকার সাথেও অন্য ইস্যুতে তবে উভয়ের অভিন্ন স্বার্থে একসাথে কাজের সম্পর্ক করতে পারি।
এমন অনুমানের ভিত্তি হলো, আফগানিস্তান বা অন্য কোনো ইস্যুতে আমেরিকার কাছে এখনো যদি পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক জরুরি হয়ে থাকে তবে আমেরিকা সেই স্বার্থ হাসিল করার একমাত্র উপায় হলো, চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হলেও সমান্তরালে পাকিস্তান-আমেরিকা সম্পর্ক যতটুকু এগিয়ে নেয়ার বা করে নেয়ার সুযোগ আছে তা কাজে লাগানো।
তা না হলে ইসলামাবাদের আমেরিকার সাথেও সম্পর্ক করতে চীনের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে টান টান উত্তেজনা ও চাপ অনুভব করার কিছু নেই। নেড প্রাইসের এই নতুন রাস্তার কোনো কারণ নেই।
এক. প্রাইস বলছেন, আমরা অনেক দিন থেকেই বলছি, ‘যেকোনো একটি দেশের জন্য তারা আমেরিকা না হলে চীনকে বেছে নিতে হবে, ব্যাপারটি একেবারেই এমন প্রয়োজনীয় নয়।’ তবে এর পরেই প্রাইস চীনের চেয়ে আমেরিকা কেন অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে ভালো এবং তাদের অনেক বাড়তি সুবিধা ও সে দেশকে মুক্ত থাকতে দেয় এসব দিক নিয়ে নিজের কিছু বিজ্ঞাপনও প্রচার করে নেন।
দুই. এরপর প্রাইসের সেই উক্তি যে ‘পাকিস্তান আমেরিকার স্ট্রাটেজিক পার্টনার।’ আর এ কথা বলার পরে আরো দুই বাক্য হলো- ইসলামাবাদের সাথে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক সম্পর্ক আছে। আর আমরা এই সম্পর্ককে বিভিন্ন পরিসরে খুবই মূল্য দিয়ে থাকি।’ অর্থাৎ তিনি যেন বলতে চাইছেন আমরা যেন এগুলোকে কথার কথা হিসেবে না, সিরিয়াস কথা বলে দেখি।