প্রিডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিসের মতোই মারাত্মক?
প্রিডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিসের মতোই মারাত্মক? - ছবি : সংগ্রহ
ডায়াবেটিস তো মারাত্মক রোগ। কিন্তু প্রিডায়াবেটিস (Prediabetes)? এতে আক্রান্ত অনেক মানুষই নানা রকম দুশ্চিন্তায় ভোগেন। প্রিডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিসের মতোই মারাত্মক? কিংবা আক্রান্ত হলে আমাদের জীবনে কি রাতারাতি তার প্রভাবে পরিবর্তন আসবে?
তবে প্রিডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমন ভয় পাওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করলে এর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
প্রিডায়াবেটিস নির্ণয়ের পরে যাতে খুব সহজেই নিজের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নেয়া যায় এমন কিছু সহজ উপায় নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করব।
১. স্বাভাবিক রুটিনে ব্যায়ামের অন্তর্ভুক্তি
যাদের প্রিডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস বা কয়েক কিলো ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত হাঁটা খুবই কার্যকরী।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যারা সপ্তাহে তিন থেকে চারবার ৩০ মিনিটের জন্য পরিমিত ব্যায়াম করেন, তারা ব্যায়াম না করা গ্রুপের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় তিন ঘন্টা বেশি সময় ধরে সুস্থ রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখেন।
এটা মনে রাখা দরকার প্রথমবারের জন্য ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুললে ধীরে ধীরে তা ৩০ মিনিটের মতো বাড়াতে হবে। মাঝারি থেকে তীব্র ব্যায়াম, ব্যায়াম পরবর্তী ২৪ ঘন্টার জন্য আমাদের রক্তের গ্লুকোজ হ্রাস করতে পারে।
২. খাদ্যাভাস পরিবর্তন করা
এডিএ অনুসারে, ১০০ থেকে ১২৫ এমপি/ডিএল-এর মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রিডায়াবেটিস হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের ডায়েটে পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস রক্তে শর্করাকে কমাতে এবং সেটিকে স্বাস্থ্যকর স্তরে রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং স্টার্চ ছাড়া শাক-সবজি খাওয়া এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঠিক সুষম খাবার তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য এডিএ একটি সহজ টুল তৈরি করেছে যার নাম Create Your Plate। একটি ৯-ইঞ্চি প্লেটে, ২৫ ভাগ প্রোটিন দিয়ে, ২৫ ভাগ পুরো শস্যদানা ও স্টার্চ দিয়ে এবং বাকি ৫০ ভাগ নন-স্টার্চি শাকস-বজি দিয়ে পূরণ করতে হবে- এটাই এক্ষেত্রে আদর্শ ডায়েট।
৩. স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকিং
স্ন্যাকস বাছাই করার সময়, রক্তে শর্করার স্পাইক এবং ওজন বৃদ্ধি এড়াতে চিনি, সোডিয়াম ও অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবারগুলো বাদ দিতে হবে। প্রোটিন-সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত দ্রব্য, ফল যেমন আপেল বা ব্লুবেরি, শাকসবজি বা সামান্য বাদামের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার এক্ষেত্রে বেছে নিলে সমস্যায় পড়তে হবে না।
৪. প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনা
মানসিক চাপ, ধূমপান রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখা কঠিন করে তুলতে পারে। তাই স্ট্রেস কমাতে নিকোটিন যুক্ত দ্রব্য ব্যবহার না করে কিছু সময় বের করে যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশনের মতো ফিটনেস পদ্ধতির সাহায্য নিলে মন যেমন ভালো থাকবে, তেমনই তা পাশাপাশি ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সাহায্য করবে।
সূত্র : নিউজ১৮