ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বুঝতে পারেন ৫ লক্ষণে
ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বুঝতে পারেন ৫ লক্ষণে - ছবি : সংগৃহীত
যেকোনো রোগের কিছু পূর্ব সঙ্কেত থাকে। বিশেষ করে সে যদি কোনো কঠিন রোগ হয়, তবে তো থাকেই। তবে তা চিনতে পারা হল আসল বিষয়। রোগের সঙ্কেত যত তাড়াতাড়ি চেনা যাবে, ততই দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য চাওয়া যেতে পারে।
ক্যান্সারের মতো রোগের ক্ষেত্রে সঙ্কেত চেনা কিছুটা কঠিন। কারণ, শরীরের কোন অংশে ক্যান্সার বাড়তে শুরু করেছে, তার উপর নির্ভর করে কোন উপসর্গ সবের আগে দেখা দেবে। মস্তিষ্কের ক্যানসারের লক্ষণের সাথে সব সময়ে মিল থাকে না ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাক উপসর্গের। কিন্তু ফুসফুসের ক্যান্সার বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে তার পূর্ব লক্ষণগুলো চিনে নেয়া দরকার। কিভাবে চিনবেন ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ?
১) কাশি : দীর্ঘ দিন ধরে কাশি হয়েই যাচ্ছে? এমন অনেক সময়ে ঠান্ডা লেগে হয়। কিন্তু ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কোনো কারণ ছাড়াই কাশি হতে দেখা যায়। প্রায় বছরভর লেগেই থাকে কাশির সমস্যা।
২) শ্বাসকষ্ট : শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার সমস্যা বাড়ে ফুসফুসে ক্যান্সার বাড়তে থাকলে। কারণ, এই রোগের দাপটে বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে শ্বাস নেয়ার পথটিও।
৩) গলা ভেঙে যাওয়া : অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই সমস্যা। ফুসফুসে ক্যান্সার বাড়তে থাকলে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে নানা স্তরে। যার কারণে গলার স্বর বদলে যায়। সব সময়েই গলা ভাঙা থাকে।
৪) গায়ে ব্যথা : যেকোনো ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই গায়ে ব্যথা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে বুক, পিঠ ও কাঁধের আশপাশে বেশি ব্যথা হতে থাকে।
৫) ক্লান্তি : ক্যান্সারের অন্যতম উপসর্গ হল ক্লান্তি। কিন্তু ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরো বাড়ে। যেহেতু শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা নিচের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর সে কারণেই ক্লান্তিও বাড়ে।
ফুসফুসের কোন সঙ্কেত বলে দেবে বিপদ বাড়ছে? কী দেখলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন
বুকে হালকা ব্যথা। কিংবা মাঝেমধ্যেই ঠান্ডা লেগে যাওয়া। এ তো হয়েই থাকে। ফুসফুসের ক্যান্সার কিংবা গুরুতর ব্রঙ্কাইটিস যেন সকলের হতে পারে না। ধরেই নেয়া হয়, সে সব অসুখ হয় বয়স্কদেরই।
কিন্তু অসুখের কোনো বয়স নেই। ফলে সতর্ক হতে হবে যেকোনো সঙ্কেত পেলেই। যে সব অস্বস্তিকে সাধারণত অবহেলাই করা হয়ে থাকে, সে সব বিষয়েও হতে হবে সাবধান। ধূমপানের অভ্যাস না থাকলেও বুকে ব্যথা হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সব বয়সের নারী-পুরুষের প্রতিই এমন বার্তা দিয়েছে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি।
১) কথায় কথায় সর্দি-কাশি হচ্ছে? এমন কিন্তু স্বাভাবিক নয়। যদি কিছু দিন অন্তর ঠান্ডা লেগে থাকে, তবে বুঝতে হবে শরীরের ভিতরে কোনো সমস্যা আছে। অনেকের আবার কাশি হলে কমতেই চায় না। এমন প্রবণতা দেখলে সাবধান হওয়া জরুরি।
২) ঘুম থেকে উঠলেও কাঁধ-পিঠে ব্যথা হয়? তা হলে বুঝতে হবে, এ সাধারণ ক্লান্তি নয়। অনেক সময়েই শরীরের এক অংশে সমস্যা হলে একেবারে অন্য কোনও অঙ্গে অসুবিধা দেখা দেয়। এই ধরনের ব্যথাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ‘রেফার্ড পেন’।
৩) শ্বাস নিতে গেলেই মনে হচ্ছে খুব খাটনি? এমনও অনেক সময়ে হয়। এই সমস্যাও অবহেলা করার মতো নয়। বুঝতে হবে ফুসফুস জানান দিচ্ছে, ভিতরে কোনো সমস্যা আছে। ফুসফুসের আশপাশে প্রদাহ সৃষ্টি হলে এমন অনেক সময়েই হতে পারে।
৪) সর্বক্ষণ ক্লান্ত লাগলে যেমন উদ্বেগ, অবসাদের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তেমন অন্য অসুখও হতে পারে। ফুসফুস ঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ঢোকে না। তা থেকেই ক্লান্তি আসতে পারে।
৫) গলার আওয়াজ অন্য রকম লাগছে কি? সর্দি-কাশি হলে এমন সমস্যা ঘটেই থাকে। কিন্তু দিনের পর দিন যদি এমনই চলে, তবে সমস্যা গুরুতরও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
৬) বুকে কফ জমার প্রবণতা বেড়ে গিয়ে থাকলেও চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। অল্প সর্দি-কাশি হওয়া এক রকম। কিন্তু একবার বুকে কফ জমলে যদি তা আর না যেতে চায়, তাহলেও ফুসফুসের হাল নিয়ে কিছুটা সতর্ক হওয়া দরকার।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা