রহস্য রোমাঞ্চের কাজী আনোয়ার হোসেন

আবদুল হাই শিকদার | Jan 27, 2022 04:45 pm
 কাজী আনোয়ার হোসেন

কাজী আনোয়ার হোসেন - ছবি : সংগ্রহ

 

এখনো সেগুন বাগিচা দিয়ে গেলে আমার গা ছমছম করে। সেগুন বাগান প্রকাশনী এখনো আমার কাছে রূপকথা। কারণ সেগুন বাগিচা মানেই মাসুদ রানার জন্মস্থান। কী অদ্ভুত এই ঘোর! আর আমার কৈশোরের কুয়াশাও তো এখান থেকেই উত্থিত।

মাসুদ রানা (১৯৬৬) জন্মলগ্নেই ঝড় তুলেছিল। ঝড় তুলেছিল আমাদের মতো লক্ষ তরুণের নায়ক হয়ে। সে এক ভিন্ন রকম প্রভাত।

আমাদের ভুবন আটকে ছিল ‘দস্যু মোহন’, ‘দস্যু বাহরাম’ আর ‘রহস্য লহরী’তে। লেখক বলতেই তখন বুঝতাম হেমেন্দ্রকুমার রায়, দীনেন্দ্রনাথ রায়, কাজী আবুল কাসেম ও রোমেনা আফাজ। সে এক গড্ডলিকা প্রবাহ। সেই সময় বাংলা রহস্য রোমাঞ্চের গতানুগতিক ধারাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলো মাসুদ রানা। অত্যাধুনিক, স্মার্ট, এক সাসপেন্স, থ্রিল, রোমাঞ্চ, অ্যাডভেঞ্চার ভরা দুর্দান্ত দুর্ধর্ষ দেশপ্রেমিক, মানবিক স্পাই। যার হাতের মুঠোয় পুরো বিশ্ব বাদাম খোসার মতো ভেঙে চুরচুর হয়ে যায়। সেই মাসুদ রানাকে নিয়ে আবির্ভূত হলেন কাজী আনোয়ার হোসেন।
বাংলা ভাষাভাষী পাঠককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার ইতিহাসে যে দু’টি নাম চিরকাল নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করবে, তারা হলেন কাজী আনোয়ার হোসেন ও হুমায়ূন আহমেদ। তাদের কাছে আমাদের অশেষ ঋণ।

১৯৬৫ সালের পাকিস্তান ভারত যুদ্ধের পর যখন দেশপ্রেমে দাউ দাউ করে জ্বলছে আমাদের কৈশোর ও তারুণ্য- সেই সময় ‘বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত, দুঃসাহসী স্পাই। গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে, বিচিত্র তার জীবন। অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি। কোমলে কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর সুন্দর এক অন্তর। একা। টানে সবাইকে কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না। কোথাও অন্যায় অবিচার অত্যাচার দেখলেই রুখে দাঁড়ায়। পদে পদে তার বিপদ, শিহরণ, ভয় আর মৃত্যুর হাতছানি।’ ঘোষণা দিয়ে প্রকাশিত হয় ‘ধ্বংস পাহাড়’ (১৯৬৬)।
কুয়াশা (১৯৬৪) সিরিজ পড়তে পড়তে, বড় হতে হতে ঠিক যেমনটি চেয়েছিলাম, সেরকম ভাবেই যেন মাসুদ রানা আমাদের করে তুলল বিশ্ব নাগরিক।

আমার নেশা ও পেশা দু’কারণেই হয়তো কাজী আনোয়ার হোসেন (১৯৩৬-২০২২)-এর সান্নিধ্য লাভের পিপাসা আমাকে দীপ্ত করে তোলে। কিছুটা আমার উপর্যুপরি তাগাদার কারণেই, তখনকার জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘সচিত্র স্বদেশ’ সিদ্ধান্ত নেয় কাজী আনোয়ার হোসেনের উপর প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করার। ভার পড়ল আমার ওপর। ‘বেলা বয়ে যায় মধুমতি গায়’-এর গায়ক, কুয়াশা ও মাসুদ রানা স্রষ্টার মুখোমুখি হলাম ১৯৮৩ সালের নভেম্বরে। তখন মাসুদ রানা পেরিয়ে এসেছে সতেরটি বছর। বেরিয়েছে ১১৭টি সিরিজ। ছেদহীন জনপ্রিয়তা। বাংলা সাহিত্যের এটাও একটা রেকর্ড। এ ক্ষেত্রে মাসুদ রানা একক এবং নজিরবিহীন। যা এখন ৫০০-এর ঘর পেরিয়ে গেছে। মাসুদ রানার এখন বয়স হয়েছে ছাপ্পান্ন বছর। ভাবা যায়!

তিরাশি সালের ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হলো প্রচ্ছদ কাহিনী ‘থ্রিলার সিরিজ মাসুদ রানা’। এক কপি বগলে নিয়ে সকাল বেলায়ই সেবা প্রকাশনীর দরবারে আমি হাজির। চা এলো। সাথে একগাদা বই। হাসলেন, নিয়ে যান। ইতোমধ্যে নজরুলের বন্ধু কাজী মোতাহার হোসেনের এই বিখ্যাত পুত্রটি আমার ‘নবাব’ ভাই হয়ে উঠেছেন। নিভৃতচারী, ধ্যানী মানুষটির নৈকট্য পেয়েছি অনেক। শেষের কুড়ি বছর অবশ্য তার কাছে যাওয়া হয়নি। তা-ও আমার পেশাগত হাঙ্গামার কারণেই।

সেইসব স্মৃতিঘন নিবিড় উচ্চারণের কিছুটা স্বাদ নয়া দিগন্তের পাঠকদের শানে পেশ করছি। আর এর ভেতর দিয়ে এই গায়ক, লেখক, গুণী মানুষটির প্রতি নিবেদন করছি আমার শ্রদ্ধা।

যাত্রা শুরুর লগ্ন
যাত্রা শুরুর লগ্ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘১৯৬৫ সাল। কুয়াশা তিন পর্যন্ত লিখে গল্পের প্লট খুঁজছি। এমন সময় এক বন্ধু একটা ইংরেজি বই পড়তে দিলেন, ইয়ান ফ্লেমিংয়ের ‘ডক্টর নো’। এর আগে কখনো থ্রিলার পড়িনি। কাহিনী, ভাষা ও বর্ণনার মাধ্যমে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এরপর একের পর এক অনেকগুলো লেখকের বই পড়ে ফেললাম। সিদ্ধান্ত নিলাম এই ধরনের কাহিনী পরিবেশন করবো বাংলায়। এই হচ্ছে নেপথ্যের কথা’।

নামের প্রসঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নামটা খুব ভেবেচিন্তে দেইনি। গীতিকার মাসুদ করীম নামটা ভালো লাগত, তার থেকে প্রথম অংশটুকু নিয়ে পরে রানা যোগ করলাম। তখন খেয়ালই করিনি, তখনকার উঠতি এক পাকিস্তানি গায়কের সাথে হুবহু মিল হয়ে গেছে।

কেমন ছিল আপনার মানসিক প্রস্তুতি?
‘মানসিকভাবে মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। সাহিত্যের ছাত্র, লিখতে গিয়ে দেখি সাহিত্য ফলাবার প্রবণতা এসে যাচ্ছে। এধরনের কাহিনী বর্ণনায় যেটা বড্ড বাধা দেয়, এগোতে দেয় না সহজ ভঙ্গিতে। বুঝতে পারছি যা বলতে চাই সেটা প্রকাশ করতে হলে সহজ-সরল সঠিক ভাষা দরকার। অনেক কষ্টে সাহিত্যের ভূত ঘাড় থেকে যদি-বা নামালাম, সঠিক ভাষা আর পাই না। লিখি আর কাটি। কিছুতেই আর মন মতো হয় না। যাই হোক শেষ পর্যন্ত অসন্তুষ্ট অবস্থাতেই সাহিত্যিক বন্ধু রাহাত খানের পরামর্শে প্রকাশ করলাম ‘ধ্বংস পাহাড়’।

‘ধ্বংস পাহাড়’ লিখতে কাজী আনোয়ার হোসেনের সময় লেগেছিল সাত মাস। আর পরের বই ‘ভারত নাট্যম’ লিখতে সময় লেগেছিল দশ মাস। মাসুদ রানা সিরিজের আর কোনো বই লিখতে এত সময় লাগেনি। এ সময় লেখক অনেক জিনিস সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে নিজে সে সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান আহরণ করেছেন। খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন। বিষয় নির্বাচন কেমন হবে, পাঠক সম্পূর্ণ নতুন এই জিনিসটি কিভাবে নেবে এসব নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তো ছিলই।

মূলত কুয়াশা সিরিজিই মাসুদ রানার আবির্ভাবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। কুয়াশা ছিল শিশু-কিশোরদের উপযোগী। কিন্তু এ দেশের অগণিত প্রাপ্তবয়স্ক পাঠক-পাঠিকার মনোরঞ্জনের জন্য সে সময় তেমন কোনো গ্রন্থ ছিল না- সেই ফাঁকটা পূরণ করল মাসুদা রানা।

কাহিনীর মৌলিকত্ব নিয়ে বেশ অসুবিধার মধ্যে ছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন- মাসুদ রানার যাত্রা শুরুর কালে। যে কারণে তার এক দিকে যেমন ক্ষয় হয়েছে সময়ের, অন্য দিকে তেমনি ঝরেছে প্রচুর ঘাম, শ্রম। এ দ্বন্দ্বেরও অবসান তিনি ঘটালেন শিগগিরই, ‘তা যদি না করতাম, তা হলে এই বিপুলসংখ্যক পাঠকও যেমন আমি পেতাম না, তেমনি এত বছর ধরে বইও প্রকাশ করতে পারতাম না। লেখার উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকাটাও হতো অসম্ভব। অচিরেই এই মৌলিকত্বের বাহাদুরি ত্যাগ করলাম। বিদেশী কাহিনী কাঠামো আমি ঠিকই নিচ্ছি, ঠিক ততটুকুই যতটা মাসুদ রানা সিরিজের সাথে খাপ খায়।’

অন্যদের সাথে মাসুদ রানার পার্থক্য?
‘মাসুদ রানার আগে আমাদের দেশে যে থ্রিলার সিরিজ ছিল না তা নয়। ‘দস্যু মোহন’, ‘স্বপন’, ‘দস্যু বাহরাম’ সিরিজও একসময় কম জনপ্রিয় ছিল না। কিন্তু এদের সাথে আজকের মাসুদ রানার কোনো দিক দিয়েই কোনো তুলনা করা যায় না। তার কারণ মোহন, স্বপন, বাহরাম, বনহুর এরা সবাই যেখানে আইনের বাইরের লোক, মাসুদ রানা সেখানে আইনশৃঙ্খলার মধ্যে পরিক্রমশীল। তা ছাড়া কালেরও একটা ব্যাপার আছে। রানা আধুনিক বিশ্বের তুখোড় বুদ্ধিমান মানুষের প্রতিনিধি। আর ওরা রবিন হুডের আদর্শ পুষ্ট ‘ক্রোক অ্যান্ড ড্যাগার’ কাহিনীর হিরো।

আমাদের দেশের বাইরেও বিশ্বব্যাপী প্রচুর জনপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ আছে। ইয়ান ফ্লেমিংয়ের জেমস বন্ড, অ্যালিস্টেয়ার ম্যাকলিনের ম্যালোরি, জেমস হাডলি চেজের ম্যাডম বা মার্ক গার্ল্যান্ড অথবা নিক কার্টার বা সাইমন টেম্পলার- এদের সাথে বরং মাসুদ রানার কিছুটা স্বগোত্রীয়তা আছে। তার কারণ এই যে, এদের কাজের পরিসর যেমন বিশ্বব্যাপী, কাজের পদ্ধতি, অভিযানগুলোর যেমন অভিন্নধর্মী, তেমনি এরা মনে-প্রাণে রক্তে মাংসে আধুনিক মানুষ। তবে সবচেয়ে বড় পার্থক্য যেটা, রানা হলো মনে-প্রাণে বাঙালি। ওর প্রতিটি কাজে, অনুভবে, চিন্তায় ছাপ পড়েছে মধ্যবিত্ত বাঙালি মানসিকতার। অন্যেরা সে রকম নয়।’

মাসুদ রানার পাঠক
আগে রানা সিরিজের প্রতিটি বইয়ের উপরে লেখা থাকত ‘কেবলমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য’। সেই লক্ষ্যে যুক্ত হতো প্রাপ্তবয়স্কদের চিন্তাচেতনার উপযুক্ত বিষয় আশয়। তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান এ সম্পর্কে মন্তব্য করেছিল, ‘বিদ্যুৎ মিত্র (কাজী আনোয়ার হোসেনের এই ছদ্মনামেই প্রথম দিককার বইগুলো বেরিয়েছিল) হত্যাকাণ্ড ও অ্যাডভেঞ্চারের সাথে এই প্রথম নতুন একটি বিষয় যোগ করলেন, সেক্স।’

জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গেল, যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লেখা কথাটা লেখা থাকে তবুও প্রাপ্তবয়স্করাই কেবলমাত্র এই বইগুলো পড়েন না। শিশু-কিশোর, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও পড়ে থাকে এবং এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ পাঠক। এ দিকটা স্পষ্ট হওয়ার সাথে সাথে কাজী আনোয়ার হোসেন সতর্ক হয়ে গেলেন, ‘যখন দেখলাম আমাদের দেশে অপরিণত বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি, যারা সেক্সকে আনন্দ নয়, অন্যায়, পাপ বা কুরুচিপূর্ণ কাজ হিসেবেই ভাবতে অভ্যস্ত, তখন ওসব প্রসঙ্গে কলম সংযত রাখতে অভ্যস্ত রাখলাম নিজেকে।’

আসলে মাসুদ রানা সিরিজ সব বয়সের পাঠকেরই প্রিয়। সমাজের সর্বস্তরেই ছড়িয়ে আছে এর পাঠকপাঠিকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কূটনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, গৃহিণী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সবাইকে নিয়েই মাসুদ রানার পাঠক বাহিনী। সেবা প্রকাশনীর ম্যানেজার ইসরাইল সাহেব পাশে থেকে এই প্রসঙ্গে দু-একটা মজার ঘটনা বললেন, ‘এক দিন এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক এসে হাজির আমাদের অফিসে। সোজা আমার টেবিলে এসে বললেন, দেখুন আজ প্রায় বছর দশের মতো রানা সিরিজ পড়ে আসছি। কিন্তু মূল পাণ্ডুলিপি কখনো পড়ে দেখিনি। এটা আমার দীর্ঘ দিনের শখ। আমাকে সামনের সিরিজের পাণ্ডুলিপি পড়তে দিতে হবে। বিনিময়ে আমি আপনাকে উপযুক্ত আর্থিক সুবিধা দেবো। সেবার অনেক বুঝিয়ে তাকে থামাতে হয়েছে।

একবার এক রাজনৈতিক নেতা, নামটা বলব না, টেলিফোনে বললেন, মাসুদ রানা নামে আসলেই কেউ আছে কি না? যদি থাকে তার সাথে উনি দেখা করবেন।

কোন এক সিরিজে মাসুদ রানা প্রতিপক্ষের হাতে মারটা একটু বেশি খেয়েছিল। আর যায় কোথায়! টেলিফোনে এক মহিলার সে কি কান্না। তাকে বোঝাতে পারছিলাম না। এটা তো একটা কাহিনী মাত্র।

জনপ্রিয়তার কারণ
৫৬ বছর ধরে অব্যাহত জনপ্রিয়তা নিয়ে একটা থ্রিলার সিরিজের টিকে থাকা কম সাফল্যের কথা নয়। সাফল্য ও গৌরবের এই বিশাল সাম্রাজ্য বিস্তারের গোপন কথাটা কি? নিউজপ্রিন্টে ছাপনো সস্তা বাঁধাই (পেপার ব্যাক) ১৫০/২০০ পৃষ্ঠার সিরিজ বইগুলোর মধ্যে কি থাকে?

দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত গল্পকার বলেন, মাসুদ রানার গদ্য এবং ভাবভঙ্গি অনবদ্য, গতিশীল। এর বিষয়বস্তু বিশ্বাসযোগ্য যা বিষয়ানুগ।
নিছক অ্যাডভেঞ্চারের রসাস্বাদনের জন্য মাসুদ রানা পড়েন এমন পাঠকের সংখ্যাই বেশি। সবমিলিয়ে বলা যায়, বিষয়বস্তুর বিশ্বাসযোগ্য বর্ণনা, ঘটনার ঘনঘটা, গতিশীল নিভাজ গদ্য, মনোরম বর্ণনা ভঙ্গি, যুগোপযোগী চরিত্র চিত্রণ, দামে সস্তা- এগুলোই এর জনপ্রিয়তার কারণ।

চলচ্চিত্রে মাসুদ রানা
মাসুদ রানা শুধু তার বিশাল পাঠক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেনি। বিভিন্ন দিকে ছড়িয়েছে নিজের প্রভাব। চলচ্চিত্রের কথাই ধরা যাক, জহির রায়হানের মতো চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বও ছিলেন মাসুদ রানার মুগ্ধ পাঠক। যেমন পাঠক ছিলেন এ দেশের সাংবাদিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবুল কালাম শামসুদ্দিন। জহির রায়হান শুধু পাঠকই ছিলেন না, তিনি জেমস বন্ডের মতো মাসুদ রানাকেও সিরিজ মোতাবেক চিত্রায়িত করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেন ও তার প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা, চুক্তিপত্র সইও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সত্তর, একাত্তরের উন্মাতাল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সে সাধ বাস্তবায়িত হয়নি।

এরপর মাসুদ রানা চিত্রায়িত করতে এগিয়ে আসেন প্রযোজক, পরিচালক মাসুদ পারভেজ। চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হয়। গোল বাধল নায়ক নিয়ে। কে হবে মাসুদ রানা। শেষে প্রয়োজক নিজেই নামলেন ‘মাসুদ রানা’র ভূমিকায়। নায়িকা হয়ে এলেন কবরী। ছবি মুক্তি পেল। নায়ক হিসাবে সোহেল রানা পেলেন প্রতিষ্ঠা। এ ছবির কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ রচয়িতা হিসেবে কাজী আনোয়ার হোসেন পেলেন বাচসাস পুরস্কার।

নবাব ভাই
মাসুদ রানার আড়ালে আসলে আপনিই ছিলেন আমাদের তারুণ্যের এক অন্য রকম নায়ক। সেই আপনার অনেক স্নেহ পরিণত বয়সেও পেয়ে হয়েছি ঋদ্ধ। সে হিসেবে এই রচনা ঠিক রচনা নয়। এ হলো এক সাহিত্যস্রষ্টার প্রতি ভক্ত পাঠকের নৈবেদ্য।
আমি জানি, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, ভালো থাকবেন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us