শীতে শিশুর ডায়রিয়া : যা জানা প্রয়োজন
শীতে শিশুর ডায়রিয়া : যা জানা প্রয়োজন - ছবি : সংগ্রহ
শীতে অসুস্থ শিশুদের তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শিশুরা। হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে সহস্রাধিক অসুস্থ শিশু। অসুস্থ শিশুদের একটি বিরাট অংশ ভর্তি হয় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। প্রতিদিন অনেক শিশু ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ভর্তি হওয়া এ শিশুরা রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। রোটাভাইরাস আক্রমণ করার দুই দিনের মধ্যেই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। এর মধ্যে জ্বর হতে পারে, সাথে পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়। শিশুরা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং পানিশূন্যতায় ভুগে। শিশুকে প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো না হলে সাধারণত তিন থেকে আট দিনের মধ্যে ডায়রিয়া মারাত্মক হতে পারে। এমনকি এতে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। রোটাভাইরাস ডায়রিয়া শীতকালেই বেশি দেখা যায়। যেহেতু ভাইরাসটি কয়েক দিন পর্যন্ত ঘরের মেঝেতে, টেবিলে, খেলনার মধ্যে এবং বিভিন্ন আসবাবপত্রে বেঁচে থাকতে পারে, তাই ভাইরাসটি খুব সহজে একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হতে পারে। কমপক্ষে ৩১ রকমের রোটাভাইরাসের মধ্যে মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে এমন প্রধানত পাঁচ রকমের ভাইরাস আছে।
রোটাভাইরাসের ডায়রিয়া কয়েকদিন পর আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। এ ছাড়া এ ধরনের ডায়রিয়ায় সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। শিশুরা মারা যায় পানিশূন্যতা থেকে। তাই পানিশূন্যতায় শিশুরা যেন আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। যেসব শিশু বুকের দুধ পান করে তাদের বেশি বেশি করে বুকের দুধ পান করাতে হবে। প্রতিবার বমি বা পাতলা পায়খানার পর দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ১০-২০ চামচ ও দুই বছরের বেশি বয়সীদের ২০-৪০ চামচ করে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি ভাতের মাড়, ডাবের পানি, চিড়ার পানি খেতে দিতে পারেন। শিশু বমি করলে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে আবারো স্যালাইন খেতে দিন। ছয় মাস থেকে পাঁচ বছরের শিশুকে প্রতিদিন ২০ মিলিগ্রাম করে জিঙ্ক ট্যাবলেট খেতে দিন। এভাবে ১০ দিন। শিশু যদি স্যালাইন পান করতে না পারে বা বুকের দুধ খেতে না পারে, মলের সাথে রক্ত থাকলে, জ্বর এলে বা অবস্থা বেশি খারাপ হলে দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি করুন।
বাজারে রোটা টেক এবং রোটেক্স নামে দু’টি রোটাভাইরাস ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। ৬-১২ সপ্তাহ বয়সের শিশুকে রোটাটেকের প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দিলে রোটাভাইরাস ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয় চার থেকে ১০ সপ্তাহ পর। শিশুর বয়স যখন ৩২ সপ্তাহ হয় তখন শেষ ডোজটি দিতে হয়। রোটেক্স ভ্যাকসিন দুই ডোজ দিতে হয়। প্রথম ডোজটি শিশুর ৬-১২ সপ্তাহ বয়সে এবং শেষটি ২৪ সপ্তাহ বয়সে দিতে হয়।
ভিটামিন-সি উচ্চ রক্তচাপ কমায়
আজাদুল কবির আজাদ
ভিটামিন-সি দেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এটি দেহকে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে। দেহের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য প্রতিদিন ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি দরকার হয়। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে ভিটামিন-সি খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে আসে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক এ তথ্য জানান।
এজন্য তারা আগের প্রকাশিত ২৯টি গবেষণার ডাটা বিশ্লেষণ করেন। ভিটামিন-সি ও উচ্চ রক্তচাপের মধ্যে সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করেন তারা। তারা দেখতে পান যারা প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি খান তাদের রক্তচাপ ৩.৪ মিলিমিটার মার্কারি কমে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের কমে ৫ মিলিমিটার। এটি কিন্তু বেশ আশাজাগানিয়া। এসিইআই ও ডায়ইউরেটিকস সেবন করে রক্তচাপ কমে মাত্র ১০ মিলিলিটার।
এ পরিমাণ ভিটামিন-সি পাওয়া যাবে ৬ কাপ কমলার জুসে। গবেষণার ফলাফল চমকপ্রদ হলেও গবেষকরা এখনই ভিটামিন-সি সাপ্লিমেন্ট আকারে সেবনে সুপারিশ করেননি। তারা আরো গবেষণা করে এ ব্যাপারে জানাবেন বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক এজার আর মিলার।