আগামী নির্বাচনে মোদির বিজেপি নির্মূল হতে পারে?
নরেন্দ্র মোদি - ছবি : সংগ্রহ
আগামী ২০২৪ সালে নির্বাচনে বিজেপি বা ওর হিন্দুত্ববাদই নির্মূল হয়ে যেতে পারে :
একালের ভারতে বিজেপি-আরএসএস বা মোদি চ্যালেঞ্জ হয়ে যাওয়া মানে হিন্দুত্ববাদ প্রথমবারের মতো উৎখাত হয়ে যাবার মতো অবস্থায় পড়েছিল গত বছর। গত মধ্য মার্চে ভারতে নেমে এসেছিল করোনাভাইরাস আক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় আক্রমণের ঝড়! সারা ভারত তাতে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। অক্সিজেন, বেড আর সৎকার, এসব পাওয়ার পুরাপুরি অনিশ্চয়তা- এটাই হয়ে উঠেছিল ভারতের পরিচয়। আর মোদি যার প্রতীকী এবং এক অসহায় প্রধানমন্ত্রী রূপ। সৌদি আরব অক্সিজেন ভরা ট্যাংকার পাঠিয়েছে কিন্তু তা দেখাতে গিয়েও মোদির ইজ্জত যায় অবস্থা! যেন মুসলমান সৌদি আরব তো নিচা; তার সাহায্য সে নিয়েছে এটা কেমনে দেখায়?
মানুষ মারা যাবার পরে একটু সম্মানজনক সৎকারও যদি নাই জোটে তাহলে আর বেঁচে থাকতে আমি হিন্দু কি না, আমার হিন্দুত্ব শ্রেষ্ঠ কি না এসব গল্পে কাম কি? এসব কোনো কাজে লাগবে? এর কি কোনো জবাব আছে? মূল কারণ, মানুষ যেকোনো মৃতব্যক্তির লাশের মধ্যে নিজেকে দেখে, দেখতে পায়, সে মরলেও তাকে কোনো অশ্রদ্ধা অসম্মান করা হবে কিনা- ব্রিজের উপর থেকে লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হবে কি না! কিংবা নদীর ধারের বালিতে লাশ ফেলে পালিয়ে আসবে কি না কিংবা নদীর পাড়ে কোনোমতে বালিচাপা দিয়ে পালাবে কি না... ইত্যাদি। ভারতের মানুষেরা নিজের এই অপমান অশ্রদ্ধা দেখে ফেলেছে। এসব কাণ্ড যেকোনো মানুষের জন্য নিজের বেলায়ও ঘটতে পারে, এই অনুমান- আর এই অনুমান নিয়েও এর পরে বেঁচে থাকা অর্থহীন! আর এসব ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন মোদি! এটা একা কোনো ভারতীয় মানুষ নয়। সারা ভারতের মানুষের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল এই জীবন, তাদের এই বেঁচে থাকা অর্থহীন, উদ্দেশ্যহীন? হিন্দুত্বের মোদি ভারতের প্রতিটা মানুষকে এমন অভিজ্ঞতা ও অনুভব এনে দিয়েছিলেন!
সেই ঘটনাকাল ছিল মোদির দ্বিতীয় টার্মের মাত্র দ্বিতীয় বছর। তবু মোদি বুঝে যান, আশঙ্কিত হন যে, তার হিন্দুত্ববাদের আয়ু এবার এসব হতাশ মানুষের হাতে শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই তখন থেকে মোদি বিজেপি-আরএসএস এর একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়, ২০২৪ সালের নির্বাচনে হবু বিপর্যয় অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদের সম্ভাব্য নির্মূল হয়ে যাওয়া- এটা যেকোনো উপায়ে ঠেকানোই তাদের বাকি তিন বছরের একমাত্র কাজ!
কিন্তু তাতে কী? ঘুরেফিরে সব কথার শেষে সেই একই কথা। মুসলমান কোপাতে হবে, ইসলামবিদ্বেষ- এটাই একমাত্র ভরসা। হিন্দুত্ববাদের দিকে ভোটার ফিরানোর একমাত্র উপায়। এ কারণেই ব্যাপারটা এখন দাঁড়িয়েছে এমন যে, বাইডেন যতই মোদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অবরোধের ভয় দেখান না কেন মোদিকে আরো বেশি করে এখন মুসলমান কোপাতেই হবে- কাশ্মিরে বা সারা ভারতে। এটাই তার রাজনৈতিক আয়ু লুপ্ত হওয়া ঠেকানোর একমাত্র উপায় যার সোজা মানে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাইডেনের সাথে মোদি ভারতের সম্পর্ক আর ভালো হবার সম্ভাবনা নাই বরং আরো সঙ্ঘাতেরই সম্পর্ক হবে। অন্তত ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত।