মুজাফ্ফরাবাদ-ইয়ারকান্দ সড়ক : পাকিস্তান-চীন নতুন প্রকল্পে চিন্তায় ভারত
চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী - ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তান ও চীনের মধ্যকার নতুন একটি সড়ক প্রকল্প নতুন দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে ভারতের মধ্যে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভারতের জন্য তা কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের মুজাফ্ফরাবাদ থেকে চীনের সিনকিংয়ারে ইয়ারকান্দ পর্যন্ত একটি সড়ক স্থাপনের আলোচনা চলছে। এই সড়ক তৈরি হয়ে গেলে বিভিন্ন কূটনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে ভারতের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। আবার যে উপত্যকার ওপর দিয়ে এই রাস্তা নির্মাণ হবে, সেই সাক্সগাম উপত্যকা ১৯৬৩ সালে অবৈধভাবে পাকিস্তান চীনকে দিয়ে দেয়। আর এই সড়ক তৈরি হলে, সিয়াচেন সীমান্তে ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য বড়সড় চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যে এলাকা দিয়ে পাকিস্তান ও চীনের মধ্যের এই সড়ক যাবে, সেখানে সিয়াচেন ছাড়াও রয়েছে রিমো, তেহরাম হিমবাহ। এই এলাকার সংলগ্ন বাকি হিমবাহের জায়গা দখলে রেখেছে চীনা লালফৌজ। উত্তরে চীনের সাক্সগাম উপত্যাক, পশ্চিমে পাকিস্তানি-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির। একদিকে যখন চীনের লালফৌজ ক্রমাগত ভারতীয় বাহিনীকে রোখার চেষ্টা করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে এই নয়া রাস্তার প্রকল্প ভারতের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সড়ক যোগাযোগে যে পাকিস্তান ও চীনের সেনা কার্যকলাপ বাড়বে তা বলাই বহুল্য। অন্যদিকে, তা ভারতের জন্যও কাঁটা হয়ে উঠছে, কারণ এই রাস্তার ফলে ভারত সীমান্তের দুই দিক কার্যত চ্যালেঞ্জিং হয়ে যেতে পারে।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, সিয়াচেন সীমান্তে ভারতীয় সেনাকে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে এই সড়ক। ফলে এমন অক পরিস্থিতিতে সিয়াচেন সীমান্তে পোক্ত প্রহরা ভারতের কূটনৈতিক দিক থেকে পাখির চোখ হয়ে উঠছে।
ভারতে ঢুকে অরুণাচলের তরুণকে ‘তুলে নিয়ে গেল’ চিনের বাহিনী,উদ্ধারের চেষ্টা পুরোদমে
এবার চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ করেছে ভারতীয় পক্ষ। অভিযোগে বলা হয়েছে, ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং জেলা থেকে ১৭ বছর বয়সী এক তরুণকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পিএলএ। খবর মিলেছে মঙ্গলবার আপার সিয়াংয়ের বাসিন্দা মিরাম তারনকে কার্যত অপহরণ করেছে পিএলএ। এদিকে জেলা প্রশাসনের দাবি, ওই তরুণ মূলত সীমান্ত এলাকায় শিকার করত। স্থানীয় শিকারী দলের সাথেই সে বনে বাদাড়ে যেত। সেই সময়ই তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দলের অন্যান্য সদস্য কোনোরকমে পালিয়ে আসেন। আপার সিয়াংয়ের ডেপুটি কমিশনার শাশ্বত সৌরভ একথা জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি জানার পরেই আমরা গোটা বিষয়টি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে জানাই। এরপর থেকে ওই তরুণকে উদ্ধারের জন্য যাবতীয় চেষ্টা চলছে। অরুণাচল ইস্টের সাংসদ বিজেপির তাপির গাও এনিয়ে টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, চিনের পিএলএ ১৭ বছর বয়সী মিরাম তারনকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। ভারতীয় ভূখন্ডের লুংতা জোর এলাকাতে ঢুকে চীন এই কাজ করেছে। এদিকে এই এলাকায় ২০১৮ সালে চীন ভারতের মধ্যে ঢুকে ৩-৪ কিমি রাস্তা তৈরি করে ফেলেছিল। ওই এমপির দাবি, তার এক বন্ধু কোনো রকমে পালিয়ে এসে খবর দেন। দেশের সমস্ত এজেন্সিকে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনারা সহযোগিতা করুন।
এদিকে ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে সেনার মালপত্র বহন করত এমন পাঁচজন যুবক আচমকাই সীমান্ত থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। এনিয়ে হইচই শুরু হতেই ১০দিন পরে চিন তাদের ফেরৎ দিয়েছিল। এবার ফের সেই একই ধরণের ঘটনা।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস