যে ৪টি অভ্যাস বাড়াতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকি
যে ৪টি অভ্যাস বাড়াতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকি - ছবি : সংগ্রহ
গড়ে প্রতি চারজন ২৫ বছরের বেশি বয়সি মানুষের মধ্যে একজন আক্রান্ত হন স্ট্রোকে। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য প্রাণ কেড়ে নেয় এই মারণ রোগ। তবুও অসচেতনতার অন্ত নেই জনমানসে। দেখে নিন কী কী অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের ঝুঁকি।
১। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আশি শতাংশ কমাতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকি। অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও স্নেহপদার্থ যুক্ত খাবার বাড়ায় স্ট্রোকের আশঙ্কা। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। যারা আগে থেকেই ঝুঁকি সম্পন্ন, তাদের ডিমের কুসুম ও গোশত খাওয়া ছাড়তে হতে পারে।
২। অলসতা
শরীরচর্চার অভাব ও সারাদিন শুয়ে-বসে থাকা ডেকে আনে এই রোগ। অলস জীবনযাপনে বাড়ে ওজন, কমে পেশী ও হাড়ের সক্ষমতা। বিপাকের হারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
৩। ধূমপান
ধূমপানের ফলে শরীরে অসংখ্য ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করে। এমনকি, পরোক্ষ ধূমপানেও প্রবল ক্ষতি হয় শরীরের। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা যায় কমে। ফলে ফুসফুসের পাশাপাশি ক্ষতি হয় সংবহনতন্ত্রেরও।
৪। মদ্যপান
মদ্যপান অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের অন্যতম কারণ। অ্যালকোহল শিরা ও ধমনীর স্থিতিস্থাপকতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যা স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।
তবে এই চারটি কারণ ছাড়াও স্ট্রোকের অন্যতম কারণ হলো সচেতনতার অভাব ও নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা করা। যাদের উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বা ডায়াবিটিসের মতো সমস্যা আছে, বা সংবহনতন্ত্রে রয়েছে কোনো গোলযোগ তাদের নিয়মিত শরীরের খেয়াল রাখা দরকার। অনেক ক্ষেত্রেই এই উপসর্গগুলোকে উপেক্ষা করাই ডেকে আনতে পারে মহা বিপদ।
পিঠের ব্যথা কমছেই না? কী করবেন
করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে সব কিছুই এখন ডিজিটাল মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল। পড়াশোনা থেকে বাজার দোকান- সব কিছুই সামলানো যাচ্ছে ফোন কিংবা কম্পিউটারের পর্দায়। ফলে কায়িক শ্রম খানিক কম হচ্ছে। অনেকেই আবার সময়ের অভাবে বাড়িতেও শরীরচর্চা করে উঠতে পারেন না। সব কিছুর ফলে পিঠে ব্যথার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। সমস্ত বয়সের মানুষের মধ্যেই এই সমস্যার পরিমাণ বাড়ছে। ৯০ শতাংশ মানুষের পিঠে ব্যথার প্রধান কারণ— এক জায়গায় অনেক ক্ষণ বসে থাকা। তবে এই সমস্যার তাৎক্ষণিক উপশমও হতে পারে, এমন কিছু উপায় আছে। সেগুলি কী কী?
১) চেষ্টা করুন, ঘুমোনোর সময় মাথার নিচে বালিশ না নিতে।
২) নিয়মিত শবাসন, ভুজঙ্গাসন, মকরাসন প্রভৃতি শরীরচর্চা করলে পিঠের ব্যথা কমে।
৩) অফিসের কাজ করার সময়ে একই জায়গায় এবং একই ভঙ্গিতে অনেক ক্ষণ বসে থাকবেন না। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর বিরতি নিতে পারেন। উঠে দাঁড়ান, হাঁটাচলা করুন।
চিনি খাওয়া কমালে ঘুম ভালো হয়!
অনেকেই মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন। তাই মাঝেমধ্যে বিভিন্ন খাবারের সাথে চিনি ঢোকে শরীরে। আবার সচেতনভাবে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করেন কেউ কেউ। চিনি দেয়া কোনো খাবার খেতে চান না। বিশেষ করে যে সব পরিবারে ডায়াবেটিসের রোগীরা রয়েছেন, তেমন পরিবারের বাকি সদস্যদের মনেও ভয় ঢুকে যায়। এর সাথে রয়েছে ওজন কমানোর ইচ্ছা। সব মিলে চিনি খাওয়া বন্ধ করার চেষ্টা অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু সকলে পেরে ওঠেন না। বহু সময়ে তো বোঝাই যায় না, কোন খাবারে লুকিয়ে রয়েছে চিনি।
কিন্তু সত্যি যদি চিনি খাওয়া একেবারে বন্ধ করা যায়, তবে কী হতে পারে, তা-ও তো জানা দরকার।
ডায়াবেটিসের আশঙ্কা তো কমেই, তার সাথে আরো একটি বড় সমস্যা কমে। চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে ঘুম ভালো হয়। ফলে যাদের ঘুম না হওয়ার সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই অভ্যাস বেশ কার্যকর হতে পারে।
ঘুম ভালো হলে কাজের ইচ্ছাও বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মক্ষমতা এক বারে অনেকটা বেড়ে যায় শুধু চিনি খাওয়া ছাড়তে পারলে।
সব মিলে শরীর এবং মন দুইয়ের উপরেই প্রভাব ফেলে এই অভ্যাস। ঘুম ভালো হলে এবং কাজের ক্ষমতা বাড়লে শরীর তো ভালো থাকেই, মনও থাকে সতেজ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা