ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনাক হতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!
ঋষি সুনাক - ছবি : সংগ্রহ
করোনাভাইরাস মহামারির নিয়ম ভেঙে বারবার পার্টির আয়োজনের অভিযোগ উঠার পর থেকেই ‘ব্যাকফুটে’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার নিজের কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের একাংশও চাইছেন তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এই পরিস্থিতিতে যার নাম বারবার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উঠে আসছে তিনি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি ঋষি সুনাক। ৪১ বছর বয়সী ঋষি কনজারভেটিভ পার্টির চ্যান্সেলর।
ঋষির মা একজন ফার্মাসিস্ট এবং বাবা চিকিৎসক। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। পরে ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির কন্যা অক্ষতা মূর্তিকে বিয়ে করেন এবং দুই কন্যা কৃষ্ণা এবং অনুষ্কাকে নিয়ে তার সুখের সংসার।
তিনি ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডের আইনসভার সদস্য হিসেবে ২০১৫ সালে প্রথম ব্রিটেন পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। ব্রেক্সিট-এর সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় তিনি দ্রুত সবার নজর কাড়েন। এমনকি জনসনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পিছনেও তার বড় হাত ছিল।
ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের সময় ঋষি বলেন, ‘ব্রিটেনের শক্তিশালী ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে আমাদের উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনকে সমর্থন করা উচিত।’
তিনি নিজে ১০ হাজার কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠা এবং রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ছোট ব্যবসায় বিনিয়োগের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
২০২০ সালে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পরেও তার নাম খবরে উঠে আসে।
তবে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই না। একজন প্রধানমন্ত্রীকে কী মোকাবিলা করতে হয় তা আমি দেখেছি। আমার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী হওয়া যথেষ্ট কঠিন কাজ।’
তবে সব কিছু ঠিক থাকলে ঋষিকেই পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
জনসন লকডাউন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের কেলেঙ্কারির সম্মুখীন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মঙ্গলবার তার সরকারের লকডাউন লঙ্ঘন নিয়ে আরেকটি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। পুলিশ বলেছে, তারা ডাউনিং স্ট্রিটে এক সমাবেশে কয়েক ডজন শীর্ষ কর্মকর্তার যোগদান করার বিষয়টি তদন্ত করছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, জনসন এবং অন্যরা ২০২০ সালের মে মাসে তার সরকারি বাসভবনের বাগানে অনুষ্ঠিত একটি পানীয় উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন। এ সময় সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান নিষিদ্ধ ছিল।
সোমবার রাতে ফাঁস হওয়া এক ইমেইল বার্তা থেকে জানা গেছে, সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা মার্টিন রেনল্ডস ডাউনিং স্ট্রিটে শতাধিক সহকর্মীকে মদ্যপান পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং জনসন ও তার স্ত্রী ক্যারিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০২০ সালে বড়দিনের প্রাক্কালে লকডাউনের মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি আয়োজনের অভিযোগের ধারাবাহিকতায় গত মাসে এ অভিযোগ ওঠে আসে। খবর এএফপি’র।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনসন একজন সিনিয়র কর্মকর্তা স্যু গ্রেকে অভিযোগ তদন্ত করার জন্য নিয়োগ করেন এবং তিনি এখন নতুন অভিযোগও তদন্ত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার এক বিবৃতিতে লন্ডন পুলিশ জানিয়েছে, তারা মে মাসের সমাবেশে লকডাউন আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা ও এএফপি