আউটের বদলে ১ বলে ৭ রান করলেন ইয়ং!
আউটের বদলে ১ বলে ৭ রান করলেন ইয়ং! - ছবি : সংগৃহীত
যে বলে খুব অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচেছিলেন, ওই একটি বলেই ৭ রান করে ফেললেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার উইল ইয়ং। কার্যত তাকে জীবনদান দেয়ার সাথে ৭ রান ফ্রি-তে দেয় বাংলাদেশ।
প্রথমে ক্যাচ ফেলা, তারপর ওভার-থ্রো। সব মিলিয়ে উইল ইয়ং-এর ক্ষেত্রে বলতেই হবে, ‘রাখে আল্লাহ, মারে কে’!
লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই ঘটনাটি ঘটে। তখন নিউজিল্যান্ডের ৯২ রানে কোনো উইকেট পড়েনি। ইবাদত হোসেনের করা সেই ওভারের শেষ ডেলিভারিতে ইয়ং অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি স্লিপের দিকে ঠেলে দেন। দ্বিতীয় স্লিপে থাকা লিটন দাস ক্যাচটি মিস করেন। উল্টা ৩ রান নেন ইয়ং এবং টম লাথাম।
এর পর সেই বলটি ওভার থ্রো করেন নুরুল হাসান। যার ফলে ৪ হয়ে যায়। ইবাদত বলটি ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মোট ৭ রান হয় এই ওভারে। ইবাদতের সেই ওভারের প্রথম ৫টি বলে কিন্তু কোনো রান হয়নি। নিউজিল্যান্ডের প্রথম উইকেট ফেলার বড় সুযোগ পেয়ে, সেটা হেলায় হারায় বাংলাদেশ। আর ক্যাচটি হলে ২৬ রানেই আউট হয়ে যেত পারত উইল ইয়ং। শেষ পর্যন্ত ৫৪ রান করে আউট হন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার।
আর নিউজিল্যান্ডের দিন শেষে সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৪৯ রান।
টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে দারুণভাবে জিতেছিল বাংলাদেশ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
টাইগারদের বিবর্ণ বোলিং, দাপুটে নিউজিল্যান্ড
সবুজ বাউন্সি উইকেট কাজে লাগাতে পারল না বাংলাদেশের পেসাররা। শুরুটা ভালো হলেও ধীরে ধীরে বিবর্ণ হতে থাকলো বোলিং। তার ফায়দা ভালোমতোই নিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিন শেষে আগে ব্যাট করতে নেমে কিউইদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৪৯ রান।
ঝলমলে ব্যাটিংয়ে ডাবল সেঞ্চুরির পথে রয়েছে কিউই অধিনায়ক টম লাথাম। অন্যদিকে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ডেভন কনওয়ে। ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শেষ করেছেন তিনি।
কিউইদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি এমন রান জোয়ারে বড় ভূমিকা আছে বাংলাদেশের বাজে বোলিংয়েরও। আগের টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করা পেস আক্রমণ এবার সহায়ক কন্ডিশনেও ভীষণ বিবর্ণ।
ম্যাচের আগে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় কুঁচকির চোটের মুশফিকুর রহিমকে না পেয়ে। তার জায়গায় দলে ফেরেন কিপার-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। চোট পেয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত ছির আগেই। তার জায়গায় টেস্ট ক্যাপ পান মোহাম্মদ নাঈম শেখ, দেশের শততম টেস্ট ক্রিকেটার তিনি।
টস ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। তা জিতে আগে আগে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়ক মুমিনুল হকের মুখে হাসি ফোটানোর মতো বোলিং করতে পারেননি পেসাররা। শুরুর দিকে তবু উইকেট না পেলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের বোলিংয়ে।
উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে শক্ত ভিত গড়ে দেন ল্যাথাম। যে মাঠে প্রথম ইনিংসে সেরা উদ্বোধনী ছিল ৩৭ রানের, সেখানেই ১৪৮ রানের দারুণ জুটি গড়েন ল্যাথাম ও ইয়াং।
আস্তে আস্তে কমতে থাকে বোলিংয়ের ধার। রান বাড়তে থাকে কিইউদের। লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ইবাদতের বলে ইয়াংয়ের ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় উইেটর পেছনে। প্রথম স্লিপে যা সহজ ক্যাচ হতে পারত নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ডাইভ দিয়ে ধরতে গিয়ে তা ফেলে দেন লিটন দাস।
মেহেদী হাসান মিরাজকে বাউন্ডারি মেরে ইয়াং ফিফটি করে ৯৮ বলে। তাকে ৫৪ রানে থামিয়ে জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। শরীর থেকে দূরে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন ইয়াং। ১১৪ বলের ইনিংসে ইয়াং হাকান ৫টি চার।
নতুন ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ের সঙ্গে জুটি গড়েন ল্যাথাম। কিউেই অধিনায়ককে খুব বেশি বিপাকে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। হ্যাগলি ওভালের সফলতম ব্যাটসম্যান শতরানে পা রাখেন স্রেফ ১১৩ বল খেলেই। পরে দেড়শ ছাড়ান ১৯৯ বলে। ৮৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ডেভন কনওয়ে।
দিনের বাকি সময় এই জুটি আর বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিশতকের পথে হাটছেন টম লাথাম। ১৮৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন তিনি। এক রানের জন্য সেঞ্চুরির অপেক্ষা বেড়েছে ডেভন কনওয়ের। ১৪৮ বলে ৯৯ রানে অপরাজিত তিনি। তার ইনিংসে চিল ১০টি চার ও একটি ছক্কা।
দিন শেষে বল হাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি এক উইকেট। ১৮ ওভারে ৬ মেডেনে ৫০ রানে এক উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। তাসকিন ২২ ওভারে ৫ মেডেনে ৬৮ রানে থাকেন উইকেটশূন্য। প্রথম টেস্টের জয়ের নায়ক ইবাদত হোসেন ২১ ওভারে দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি রান, ১১৪। মেডেন নিয়েছেন মাত্র একটি। ২৫ ওভারে এক মেডেনে ৯৫ রানে উইকেটশূন্য মেহেদী হাসান মিরাজ।