করোনা ঠেকানোর ৬ উপায়
করোনা ঠেকানোর ৬ উপায় - ছবি : সংগৃহীত
করোনা ভাইরাসের স্ফীতির এই পর্যায়ে দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। শহর এবং শহরতলিতেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। তবে করোনা সংক্রমণের এই পর্বে আগের দু'বারের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেশ কম। শারীরিক উপসর্গগুলোও ভয়ঙ্কর কিছু নয়। চিকিৎসকদের মতে, সামনের কয়েকটি দিন যদি সব রকম সুরক্ষাবিধি মেনে চলা যায় তা হলে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা যাবে। অতএব সচেতনতা বজায় রাখা জরুরি।
মাস্ক ব্যবহার করুন
মূলত এই ভাইরাস প্রবেশ করে নাক ও মুখ দিয়েই। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে অতি অবশ্যই ব্যবহার করুন মাস্ক। বাইরে বের হলে কাপড়ের ত্রিস্তরীয় মাস্কের উপরে আরো একটি সার্জিক্যাল মাস্ক পরে নিতে পারেন। শুধু বাইরে নয়, বাড়িতে বাইরে থেকে কেউ এলেও মাস্ক পরে থাকুন।
কাপড়ের নয় সর্জিক্যাল মাস্ক পরুন
বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন কোভিড আটকাতে সবচেয়ে উপযোগী এন৯৫ মাস্ক। কোনো কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মাস্ক পরে না থাকেন তবে তার সামনে এন৯৫ মাস্ক একজন সুস্থ মানুষকে রক্ষা করতে পারে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। আর রোগী এবং একজন সাধারণ মানুষ দু’জনেই যদি মাস্ক পরে থাকেন তবে কোভিড রোগী থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগে প্রায় ২৫ ঘণ্টা।
কিন্তু এন৯৫ মাস্ক দীর্ঘক্ষণ পরে থাকা কষ্টকর বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা যায় সাধারণ কাপড়ের মাস্ক পরে থাকার প্রবণতা। এই ব্যাপারে কিন্তু বারবার সতর্ক করছেন গবেষকরা। তাদের বক্তব্য, ওমিক্রন আটকাতে এই মাস্ক মোটেই খুব একটা কার্যকরী নয়। গবেষণা বলছে, কোনও কোভিড আক্রান্তের সামনে যদি এই ধরনের একস্তরীয় কাপড়ের মাস্ক পরে যাওয়া হয় তাহলে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সুস্থ ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। রোগী এবং সুস্থ ব্যক্তি দুজনেই যদি এই মাস্ক পরে থাকেন তবে সংক্রমণ ছড়াতে সময় নেয় মাত্র ২৭ মিনিট।
এই অবস্থায় কাপড়ের মাস্কের বদলে সার্জিক্যাল মাস্ক পরা বেশি কার্যকরী বলেই মত গবেষকদের। একটি সার্জিক্যাল মাস্ক সংক্রমণ থেকে একজন সুস্থ ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারে প্রায় ৩০ মিনিট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রন করোনার অন্যান্য রূপগুলির থেকে অনেক বেশি সংক্রামক। তাই এর সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করাও অনেক বেশি কঠিন। কাজেই মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে রাখা, নাক থেকে খসে পড়া মাস্ক, বারবার মাস্কে হাত দেওয়া, এই সবই হতে পারে অত্যন্ত বিপজ্জনক। গবেষণা স্পষ্ট বলছে, কোনো রকম মাস্কের প্রতিরোধ না থাকলে একজন রোগীর থেকে একজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট।
হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন
বাইরে থেকে ফিরে সবার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। জামাকাপড় ছাড়ার পর ফের একবার হাত পরিষ্কার করুন। বাইরে বেরোলে অবশ্যই সাথে রাখুন স্যানিটাইজার। বাইরে থাকলেও প্রতি ২ মিনিট অন্তর হাতে স্যানিটাইজার মেখে নিন। বাজার করতে গেলে ব্যবহার করুন গ্লাভস।
সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন
এই পরিস্থিতিতে ভিড় এড়িয়ে চলুন। করোনা স্ফীতির এই ধাপে অনেক রোগীই উপসর্গহীন। ফলে এই সময় বেশি ভিড়ে যাবেন না।
টিকা না নেয়া থাকলে অবশ্যই নিন
করোনার দু’টি টিকা নেয়ার পরও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অনেকেই টিকার উপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলছেন। তবে চিকিৎসকদের ধারণা, টিকা নেওয়া আছে বলেই এই বারে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তাই টিকা নেয়াটা অবশ্যই জরুরি। ইতিমধ্যে বুস্টার টিকা দেয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
উপসর্গ দেখা দিলে নিভৃতবাসে রাখুন নিজেকে
সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে আলাদা রাখুন। উপসর্গ এক দিন স্থায়ী হলে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিন। ফলাফল যদি পজিটিভ হয়, অতি অবশ্যই নিভৃতবাসে থাকুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা