ত্বকের নতুন উপসর্গ হতে পারে ওমিক্রন চেনার উপায়
ত্বকের নতুন উপসর্গ হতে পারে ওমিক্রন চেনার উপায়, মত বিশেষজ্ঞদের - ছবি : সংগৃহীত
বর্ষবরণের উদ্যাপনের মধ্যেই ওমিক্রনকে হাতিয়ার করে গোটা বিশ্বে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কোভিড। শুধু গত এক সপ্তাহেই নতুন করে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। সাধারণ সর্দি কাশির থেকে প্রাথমিকভাবে আলাদা কোনো উপসর্গ না দেখা গেলেও সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ত্বকের সমস্যাও ওমিক্রনের একটি লক্ষণ হতে পারে।
কোভিডের অন্য রূপগুলোর মতো ওমিক্রনের ক্ষেত্রেও রয়েছে মৃদু জ্বর, গলা খুসখুশ করা, নাক থেকে পানি পড়া, হাঁচি, গা ব্যথা, ক্লান্তির মতো একাধিক উপসর্গ। এ ছাড়াও সম্প্রতি রোগীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে গা ঘুলিয়ে ওঠা ও বমির সমস্যা।
এই সব উপসর্গ ছাড়াও ত্বকের র্যাশ কোভিডের এই নতুন রূপটির অন্যতম সঙ্কেত হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ত্বকের এই ধরনের সমস্যাকে কোভিডের এই রূপটি চিহ্নিত করার চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি বলে মনে করা হচ্ছে।
ত্বকের সমস্যা ছাড়াও কোভিড আক্রান্তদের কারো কারো আঙুলে ও পায়ের পাতায় লাল অথবা বেগুনি ফুসকুড়ি দেখা যাচ্ছে। যা থেকে জ্বালা যন্ত্রণা হচ্ছে বলে খবর।
ত্বকের র্যাশ মূলত দুই ধরনের হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। একটি মৌচাকের মতো এবং অপরটি ঘামাচির মতো। প্রথমটি হয়ে আবার মিলিয়ে যায় দ্রুত। কিন্তু দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে চুলকানি ও জ্বালা যন্ত্রণার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের র্যাশে লাল হয়ে ওঠে শরীরের যেকোনো অঙ্গের ত্বক। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই উপসর্গটি দেখা যায় কনুই, হাঁটু কিংবা হাত ও পায়ের পিছন দিকে।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতাই হতে পারে একমাত্র হাতিয়ার। কাজেই শীতকালের ঠান্ডা লাগা ভেবে সর্দি কাশিকে উপেক্ষা করবেন না। সন্দেহ হলেই কোভিড পরীক্ষা করান। আপনার সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে আপনার পরিজনকে।
ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আমেরিকাজুড়ে ফের কোভিড আক্রান্ত হাজার হাজার শিশু
ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আমেরিকায় প্রতি দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। বিপুল সংখ্যক শিশু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। যা দেখে চিকিৎসকরাও আশঙ্কার প্রহর গুনতে শুরু করেছেন। ফিলাডেলফিয়ার চিলড্রেনস হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পল অফিট বলেন, “যে হারে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবেই শিউরে উঠছি।”
রিপোর্ট বলছে, ডিসেম্বরের ২২-২৮ তারিখের মধ্যে আমেরিকায় গড়ে ৩৭৮ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের বয়স ১৭ এবং তার নিচে। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে শিশুদের ভর্তির হার এক লাফে ৬৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে প্রতি দিন গড়ে ৩৪২ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু ওমিক্রনের প্রভাবে এ বার সেই পরিসংখ্যানকেও ছাড়িয়ে যাওয়ায় প্রমাদ গুনছেন চিকিৎসকরা।
আমেরিকায় দৈনিক সংক্রমণ ছয় লাখের কাছাকাছি। ২২-২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি দিন গড়ে ১০ হাজার ২০০ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি যে আরো ভয়াবহ হবে তার সতর্কবার্তা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ভয়াবহ পরিস্থিতি আমেরিকার ১৮টি স্টেটে। ওহায়ো, ওয়াশিংটন ডিসি-তে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এক লাফে ২৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাইকেল ওস্টারহোম বলেন, “নাটকীয় ভাবে দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা।” আগামী মাসের মধ্যে সংক্রমণের বিপুল জোয়ার আসতে চলেছে সেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন ওস্টারহোম।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা