ঘুমের ঘোরে খাট থেকে পড়ে যাবেন মনে হয়?
ঘুমের ঘোরে খাট থেকে পড়ে যাবেন মনে হয়? - ছবি : সংগ্রহ
সারাদিনে প্রবল ব্যস্ততার পরে যখন ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে অনেকেই বিশ্রাম নিতে খানিক ঘুমিয়ে নেন। আপনি যখন বেশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হঠাৎ তখনই বৈদুত্যিক শকের মতো ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে শরীর। এই সমস্যা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। শুধু ঝাঁকুনি নয়, অনেকের আবার মনে হয় যে শূন্যে পড়ে যাচ্ছেন। ঠিক যেমন ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ইনসেপশন’ ছবিতে স্বপ্ন ভাঙার উপায় ছিল শূন্যে পড়ে যাওয়ার আতঙ্ক।
চিকিৎসকরা মনে করেন, প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এবং তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ঘুমের মধ্যে এই ধরনের সমস্যায় ভোগেন।
ঘুমের মধ্যে এই হঠাৎ চমকে বা ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে হিপনিক জার্ক। এর আরো একটি নাম আছে। একে মায়োক্লোনিক জার্ক বা স্লিপ সুইচও বলা হয়ে থাকে।
মূলত তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় হিপনিক জার্ক ঘটে থাকে। মানুষ যখন সবে ঘুমাতে শুরু করেন, অর্থাৎ ঘুমের ঘোর তৈরি হয় যখন সেই সময় স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। কিন্তু মস্তিষ্কে থাকা সেরিব্রাম কর্টেক্স সেটা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারে না। মস্তিষ্কের সঙ্গে নিউরোট্রান্সমিটার এর অস্থিতিশীল অবস্থার কারণে হিপনিক জার্ক হয়ে থাকে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন কারণে এমন হয়ে থাকে—
১) ক্যাফিন বা নিকোটিন সমৃদ্ধ চা, কফি বেশি খেলে।
২) অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের কারণে।
৩) ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় কিছু উপাদানের শরীরে ঘাটতি থাকলে।
সোয়েটার পরেই ঘুমোতে যাচ্ছেন? মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছেন না তো
শীত আর বাঙালির মধ্যে বিশ্ব যুদ্ধ বাধলে নিঃসন্দেহে বাঙালির পরমাণু বোমা হতো মাঙ্কি টুপি আর সোয়েটার। কিন্তু শোয়ার সময় সোয়েটার পরে শুতে গেলে সেই সোয়েটারই হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক বিপদের কারণ। জানুন সোয়েটার পরে শুতে গেলে কী কী বিপত্তি বাধতে পারে।
১। উষ্ণতার পরিবর্তনে সংবহনতন্ত্রের নালীর সংকোচন ও প্রসারণ হয়। ভারী সোয়েটার পরে শুয়ে পড়লে অনেক সময় খুব দ্রুত বেড়ে যায় শরীরের তাপমাত্রা। বাইরের ঠান্ডার পর আচমকা এই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া সংবহনতন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিশেষত হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা থাকলে এই ঘটনা বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
২। রাতে সোয়েটার পরে ঘুমোতে গেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এমনিতেই বাংলার শীত শুষ্ক। ফলে রাতে যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে তা এক্সিমার মতো ত্বকের রোগ ডেকে আনতে পারে।
৩। সাধারণত সোয়েটার যে ধরনের উপাদানে তৈরি হয় তা তাপমাত্রার রোধ হিসেবে কাজ করে, কাজেই সাধারণ সুতির পোশাকের থেকে অনেক বেশি তাপমাত্রা সংরক্ষিত হয় এতে। অতিরিক্ত উষ্ণতা ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
৪। উলের মোজা পরে ঘুমোনোও ভাল অভ্যাস নয়। উল তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য উপযোগী হলেও ঘাম শোষণ করতে পারে না একেবারেই। ফলে পায়ে ঘাম জমে যাওয়ার সমস্যা হয়, এতে পায়ে নানা রকম জীবাণু জন্ম নেয়। তৈরি হতে পারে নানা চর্মরোগ।
৫। শিশুদের ঠান্ডা থেকে বাঁচানোর জন্য অনেকেই ঘুমের সময়ও গরম পোশাক পরিয়ে রাখেন। কিন্তু এতে উপকরের বদলে অপকারই হয় বেশি। গরমে ঘাম হয়ে গেলে বুকে ঠান্ডা বসে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা