তালেবান, গণতন্ত্র ও মডারেটদের ভবিষ্যৎ
তালেবান, গণতন্ত্র ও মডারেটদের ভবিষ্যৎ - ছবি : সংগ্রহ
দুনিয়ার কোথাও ইসলামপন্থীরা জনগণের অমতে তাদের ওপর থিওক্র্যাসি তথা শরিয়া-শাসন চাপিয়ে দিয়েছে এমন নজির নেই। এমনকি ইউরোপে ক্যাথলিক ও প্রটেস্ট্যান্টদের মধ্যকার যে লড়াই ছিল, সে রকম গির্জা বনাম রাষ্ট্রের মেরুকরণগত লড়াইও ইসলামের ইতিহাসে নেই। কিন্তু রাষ্ট্র প্রশ্নে ইউরোপ নিজেদের মধ্যে থিওক্র্যাটিক ফ্যাসাদের মীমাংসা খুঁজে নেয় সেক্যুলারিজমে। তা সত্ত্বেও ইউরোপের বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র এখনো সাংবিধানিকভাবে থিওক্র্যাটিক স্টেট বা ধর্মতাত্ত্বিক রাষ্ট্র: যেমন যুক্তরাজ্যের মধ্যে ইংল্যান্ড এবং নরওয়ে, গ্রিস, ডেনমার্ক, হাঙ্গেরি এবং লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা। এ দেশগুলো সাংবিধানিকভাবে থিওক্র্যাটিক স্টেট; যদিও রাজনৈতিক ও নাগরিক জীবনে তারা সেক্যুলার। অন্যদিকে ইউকে, কানাডা, সুইডেন, জাপান হলো সাংবিধানিক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। যদিও এগুলো পূর্ণ রাজতান্ত্রিক নয়। পূর্ণ রাজতান্ত্রিক তথা এবসোলিউট মনার্কি হলো মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশগুলো, যেগুলো কি না আবার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদেরই নকশাকৃত।
যাই হোক ইউরোপের আধুনিক সাংবিধানিক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো তাদের রাজতন্ত্র ও সরকার ব্যবস্থার মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে ভারসাম্য করেছে। এর মধ্যেই তাদের গণতন্ত্রের চর্চা। আবার ইউরোপের উপর্যুক্ত সাংবিধানিকভাবে ধর্মতাত্ত্বিক রাষ্ট্রগুলোও নির্বাচন ও সরকার ব্যবস্থায় গণতন্ত্র চর্চা করে থাকে। পাশ্চাত্য শক্তি বিদেশে তাদের গণতন্ত্র রফতানি করতে চায়- আরো সরাসরি বলতে গেলে চাপিয়ে দিতে চায় পাশ্চাত্যের মূল্যবোধ। পাশ্চাত্যের কাছে তাদের মূল্যবোধভিত্তিক গণতন্ত্রই বিশ্বজনীন, সর্বজনীন ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত। ফলে বিপ্লব-পরবর্তী ধর্মতাত্ত্বিক রিপাবলিক রাষ্ট্র ইরান নির্বাচনী গণতন্ত্র চর্চা করা সত্ত্বেও তার বিরোধ প্রধানত পাশ্চাত্যের সাথেই (আকিদাগত আঞ্চলিক বিরোধ একপাশে রাখলাম আপাতত; কারণ সেটাও ব্রিটিশ ডিপ স্টেট কর্তৃক প্রোগ্রামড)। পাশ্চাত্যের সাথে ইরানের বিরোধ কি নিছকই ভূ-রাজনৈতিক বিরোধ? না, এটা প্রধানত সেই চিরন্তন আদর্শিক দ্বৈরথ: পাশ্চাত্য বনাম ইসলাম। কারণ থিওক্র্যাটিক রিপাবলিক ইরান তো পাশ্চাত্যের মূল্যবোধসম্পন্ন গণতন্ত্র চর্চা করছে না।
সুতরাং ইসলামী রাষ্ট্র কিংবা ইসলামিক আমিরাত প্রশ্নে গণতন্ত্র শুরুর বিষয় নয় একদমই। আগে তো বিপ্লব। তা ওই বিপ্লব ইরানের মতো গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত হোক কিংবা তালেবানের মতো গণমুখী সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্যদিয়ে অর্জিত হোক, বিপ্লব-পরবর্তী ক্ষমতা হস্তগত করার পর সংবিধান, রাষ্ট্র, সরকার, নির্বাচন, কূটনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি নির্ধারণ খুব একটা কঠিন কাজ নয়। এগুলো খুবই ব্যবহারিক বিষয়। যতক্ষণ প্র্যাকটিকাল সময় না আসছে, ততক্ষণ এগুলোকে বিশাল দুরূহ তাত্ত্বিক ও একাডেমিক বিষয়ই মনে হতে থাকবে। ইরানে বিপ্লব-পরবর্তী এসব বিষয়ে কি মহা সমস্যা দেখা দিয়েছিল? না। তারা নিজেদের মধ্যে বিষয়গুলোর সুরাহা করে নিয়েছিল।
এখন আফগানিস্তানে সশস্ত্র বিপ্লব-পরবর্তী তালেবানের ক্ষেত্রেও কি এসব বিষয় তেমন মহা সমস্যারূপে দেখা দিয়েছে? তাও তো না। পরাজিত শক্তি হওয়ার দরুণ পাশ্চাত্য এখন মাথাই ঘামাচ্ছে না তালেবান কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আর বিগত দুই দশক ধরে আমেরিকার হাতে যেই ক্ষুদ্রসংখ্যক শহুরে এলিট আফগান শ্রেণী তৈরি হয়েছে, তারা বাদে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থন যে তালেবানের প্রতিই, তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। ফলে তালেবান জনগণের অমতে তাদের ওপর থিওক্র্যাসি বা শরিয়া-শাসন চাপিয়ে দিচ্ছে এমন কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু গত বিশ বছর ধরে পাশ্চাত্য মিডিয়ার নেতৃত্বে কথিত ওয়ার অন টেররের এজেন্ডাভিত্তিক বয়ানের মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের জুজু দেখিয়ে দুনিয়াবাসীকে ক্রমাগতভাবে ডেমোক্র্যাসি, সেক্যুলারিজম ও ফেমিনিজম গেলানো হয়েছে। এমনকি কে মডারেট আর কে এক্সট্রিমিস্ট- এই প্রপঞ্চগুলোও পাশ্চাত্যের বানানো।
আমেরিকান থিংক-ট্যাংক জঅঘউ ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃরড়হ-এর মাধ্যমে সেই ওয়ার অন টেররের এজেন্ডার ফসল হলো ইসলামপন্থীদের মডারেট ভার্সন। কিন্তু জঅঘউ-এর প্রজেক্ট আরব বসন্তের মধ্যদিয়ে মডারেট ইসলামপন্থীরা গণতান্ত্রিকভাবে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে দেখা যায়, তারা পশ্চিমা মূল্যবোধগুলো গ্রহণ করছে না। শরিয়া ও কুরআন-হাদিস ছুড়ে ফেলে দিয়ে পুরোপুরি সেক্যুলারও হচ্ছে না। এককথায়, তারা পাশ্চাত্যের গোলামির নজরানা পেশ করছে না। তখন আবার আরব বসন্তের প্রজেক্ট বাদ দেয়া হলো এবং আবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে পাশ্চাত্যের অনুগত স্বৈরাচারী শাসন ফিরিয়ে আনতে শুরু করা হলো (যেমন, মিসরের সিসি)। জঅঘউ-এর ওই প্রজেক্টের পরীক্ষায় পাস করার প্রয়াস হিসেবেই তিউনিসিয়ার আন নাহদা দলীয়ভাবে ইসলামকে বাদ দিয়ে পুরোপুরি সেক্যুলার পার্টি হয়ে গেল। অন্যদিকে আফগানিস্তানে তালেবানবিদ্বেষ বাড়ানোর জন্য ফেমিনিজম তত্ত্বকে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছিল সিআইএ (উইকিলিক্সে ফাঁস হওয়া ক্লাসিফায়েড মার্কিন ডকুমেন্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে)। যাই হোক, জঅঘউ-এর আরব বসন্তের প্রজেক্ট ব্যর্থ হওয়ার পর এখন আর মডারেট ইসলামপন্থীদের ওপর ভরসা পাচ্ছে না আমেরিকা। যদিও শুধু কথিত টেরোরিজম বা সশস্ত্র পন্থার বিরোধী এমন ইসলামপন্থীদের মডারেট হিসেবে সাব্যস্ত করে আমেরিকান থিংক-ট্যাংকটি। এমনকি ওয়ার অন টেররের এজেন্ডা সমর্থনকারী মুসলমানদের ‘গুড মুসলিম’ নামও দিয়েছিল।
কিন্তু এখন আর তারা মডারেটদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। কেন পারছে না সেটা আল্ট্রা-মডারেট কানাডিয়ান শিক্ষাবিদ ইরশাদ মাঞ্জি ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটে ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বরের একটা নিবন্ধে ব্যাখ্যা করেছেন: ঞযব ফরভভবৎবহপব নবঃবিবহ "ৎবভড়ৎসরংঃ" গঁংষরসং ধহফ "সড়ফবৎধঃবং" রং হড়ঃ ংবসধহঃরপ. ঞযব ষধঃঃবৎ ঃবৎস রং সরংষবধফরহম নবপধঁংব সধহু "সড়ফবৎধঃব" গঁংষরসং বীযরনরঃ ধষষ ঃযব ঃৎধরঃং ড়ভ ড়ৎঃযড়ফড়ীু, রহপষঁফরহম ফড়মসধ ধহফ ধ ভবধৎ ড়ভ পযধষষবহমরহম ঃযবরৎ পড়সসঁহরঃরবং' মৎড়ঁঢ়ঃযরহশ. ঞযব য়ঁধষরঃরবং ধংংড়পরধঃবফ রিঃয ৎবষরমরড়ঁং সড়ফবৎধঃরড়হ ধৎব ঢ়ড়ংরঃরাব ধহফ ফবংরৎধনষব ধং ধ মড়ধষ, নঁঃ ঃযবু ধৎব রহধফবয়ঁধঃব ধং ধ সবধহং ঃড় ৎবধষরুব ঢ়ড়ংরঃরাব পযধহমব রহ ওংষধস.
সুতরাং এটা পরিষ্কার যে, তারা এখন আর মডারেটে সন্তুষ্ট নয়। কারণ মডারেট ইসলামপন্থীরা অন্ততপক্ষে ইসলামের মূলনীতিগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না। তাই তাদের দিয়ে ইসলামের মধ্যে পাশ্চাত্যের প্রকল্পিত ‘পজিটিভ চেঞ্জ’ আনা সম্ভব নয়। কিন্তু সেই কথিত পজিটিভ চেঞ্জ আনার জন্য ইরশাদ মাঞ্জি নতুন প্রজন্মের মুসলমানদের মধ্যে একটি শ্রেণীর কথা বলেছেন, যারা হবে রিফর্মিস্ট বা সংস্কারক। এ বিষয়ে মাঞ্জি একই নিবন্ধে লিখেছেন: ঞযব মড়ড়ফ হবংি রং ঃযধঃ ধ হবি মবহবৎধঃরড়হ ড়ভ গঁংষরসং রং রহপৎবধংরহমষু ঁংরহম ঃযব ড়িৎফ "ৎবভড়ৎসরংঃ" ঃড় ফবংপৎরনব ঃযবরৎ ঢ়ষঁৎধষরংঃ ধহফ যঁসধহরংঃ ধংঢ়রৎধঃরড়হং ভড়ৎ ওংষধস. ঞযবরৎ ারংরড়হ ভড়ৎ "ৎবভড়ৎসরংঃ ওংষধস" রং হড়ঃ ড়হব ঃযধঃ সবৎবষু ধনংঃধরহং ভৎড়স ঃবৎৎড়ৎরংস. ওঃ রহপষঁফবং ফরমহরঃু ভড়ৎ মধুং ধহফ ষবংনরধহং, ভঁষষ বয়ঁধষরঃু ভড়ৎ ড়িসবহ, ৎবংঢ়বপঃ ভড়ৎ ৎবষরমরড়ঁং সরহড়ৎরঃরবং, ধহফ ঃড়ষবৎধহপব ভড়ৎ ফরভভবৎবহঃ ঢ়ড়রহঃং ড়ভ ারব.ি ওহ ধষষ ষরশবষরযড়ড়ফ, ধ পৎরঃরপধষ সধংং ড়ভ ঃযরং মবহবৎধঃরড়হ'ং গঁংষরসং রিষষ ঢ়ৎড়ারফব ধঁফরনষব পধষষং ধহফ ারংরনষব বারফবহপব ভড়ৎ বধপয ড়ভ ঃযবংব ঢ়ৎরহপরঢ়ষবং.”
ওই নতুন রিফর্মিস্ট বা সংস্কারক মুসলিম প্রজন্ম শুধু যে ‘উগ্রবাদে’র বিরুদ্ধে থাকবে তা-ই নয়, একই সাথে সমকামীদের অধিকার ও নারী-পুরুষের সমানাধিকারের নীতির পক্ষেও কথা বলবে এবং প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করবে। ফলে পাশ্চাত্যের কাছে আগেকার মডারেটদের গুরুত্ব এখন নেই বললেই চলে।
উল্লেখ্য ইরশাদ মাঞ্জি একজন কানাডিয়ান শিক্ষাবিদ। আল্ট্রা-মডারেট মুসলিম নারী। তিনি এলজিবিটিআই তথা সমকামীদের অধিকারের পক্ষে। সেই সাথে ইরাক ও আফগানিস্তানে আমেরিকার সামরিক আগ্রাসন এবং বুশ-প্রবর্তিত ওয়ার অন টেরর তথা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সমর্থকও। তার বক্তব্য আমেরিকান থিংক-ট্যাংক ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট প্রোমোট করে।
যাই হোক নাইন ইলেভেনের পর আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালানোর মধ্যদিয়ে আমেরিকার নেতৃত্বে যে ক্রুসেড (বুশের ভাষায়) শুরু হয়েছিল, সেটার ফলে দুনিয়ার কোথাও মডারেট ইসলামপন্থীরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের ক্ষমতায় আসতে না দেয়ার পলিসি দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করে এসেছে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন গোটা পাশ্চাত্য শক্তি। তাই মুসলিম হিসেবে আপনি আমি এসময়ে যতই ‘গণতন্ত্র’ ‘গণতন্ত্র’ করি না কেন, তা আসলে ততক্ষণ পর্যন্ত ‘গণতন্ত্র’ না, যতক্ষণ আপনি আমি ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের এনডোর্সড ইরশাদ মাঞ্জির ভাষায় ‘রিফর্মিস্ট মুসলিম’ না হবো। ফলে গণতন্ত্র আসলেই অনেক পরের ঘটনা। এজন্যই সর্বাগ্রে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ ও উপনিবেশজাত বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে পাল্টা বিপ্লব ঘটানোর বিকল্প নেই। আর ঠিক সেটাই দুই দশকের সুদীর্ঘ সশস্ত্র লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় আফগান তালেবান করতে সক্ষম হয়েছে। তারা গণতন্ত্র নয় বরং কাবুলে গত দুই দশকের মার্কিনিদের গড়া ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামো ও সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে শরিয়া-শাসনের ভিত্তিতে একটি স্বকীয় ইসলামিক আমিরাত গঠন করেছে।
দুনিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাশ্চাত্যের দুটি প্রধান অস্ত্র সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ও গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের মাধ্যমে মূলত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ওপর পশ্চিমা মূল্যবোধ ও আধিপত্য চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলোতে মডারেট ইসলামপন্থীদের মাধ্যমে যে তা সম্ভব নয়, তা বুঝে গেছে পাশ্চাত্য শক্তি। ফলে আমেরিকান থিংক-ট্যাংক ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের নতুন এজেন্ডা অ্যা নিউ রিফর্মিস্ট জেনারেশন অব মুসলিমস, যারা কিনা সমকামীদের অধিকারের মতো পশ্চিমা মূল্যবোধগুলোর পক্ষে খোলাখুলি অবস্থান নেবে এবং গ্রহণ করবে। অন্যদিকে মডারেট ইসলামপন্থীরা গণতন্ত্রকে যতই মুখ্যরূপে আঁকড়ে থাকুক, তাদের ওপর আমেরিকার আর ভরসা নেই। ফলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা অনিশ্চিত বলেই আমাদের ধারণা। তারওপর সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালেবানের মতো একটি থিওক্র্যাটিক দল ক্ষমতাসীন হওয়ার কারণে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমর্থন ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সে কারণে ওয়ার অন টেররের প্রপাগান্ডায় প্রভাবিত অনেক মডারেট ইসলামপন্থীই এখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় আছে।
যাই হোক ওয়ার অন টেররের বয়ান ও প্রপাগান্ডা থেকে আমাদের মন, মগজ ও বুদ্ধির সামগ্রিক মুক্তি আবশ্যক। নাহলে নিজেদের সোনালি অতীত ও ইতিহাস ধারণ করে আমরা আবার স্বকীয় জ্ঞান, সভ্যতা ও জাতিসত্তার চেতনা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। পাশ্চাত্যের ওয়ার অন টেররের এজেন্ডা আমাদেরকে স্বীয় ইতিহাসের গতিপথ থেকে বিচ্যুত করেছে। এই সত্য উপলব্ধি করা ছাড়া উপায় নেই।