গ্যাসট্রিকের ওষুধ যেভাবে কিডনি বিকল করে দেয়
গ্যাসট্রিকের ওষুধ যেভাবে কিডনি বিকল করে দেয় - ছবি : সংগ্রহ
কী হয় এই জাতীয় ওষুধ খেলে? পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড থাকলে, তা এই ওষুধগুলো কমিয়ে দেয়। কিন্তু যদি অতিরিক্ত অ্যাসিড না থাকে, তাহলে অ্যান্টাসিডে থাকা ক্ষার এবং এইচ২ ব্লকারের মতো ওষুধ অঙ্গগুলোর ক্ষতি করতে থাকে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। ওষুধের উপাদানগুলো কিডনিতে গিয়ে জমা হয়। এবং কিডনিরও ক্ষতি হয়।
একটু মশলাদার কিছু খাওয়ার পরেই বুকের কাছে অল্প ব্যথা করছে। সাথে সাথে ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধ কিনে খেয়ে ফেললেন। ব্যথাও কিছু ক্ষণে কমে গেল। আপনিও ভাবলেন, অ্যাসিড বা গ্যাসের ব্যথা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে আর লাভ কি? আবার এমন ব্যথা হলে এভাবেই ওষুধ খেয়ে সামলে নেবেন।
এমনটা আপনি একা ভাবেন না। যারা অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন, তাদের বেশির ভাগই এভাবেই ভাবেন। কেউ কেউ সারা বছরই ওই জাতীয় ওষুধ খেয়ে চলেন। এবং ভাবেন, এটাই স্বাভাবিক আর এর ফলে কোনো ক্ষতি তো হচ্ছে না। কিন্তু বিষয়টা একেবারেই তা নয়। অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড কমিয়ে দেয় আয়ু, বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের আশঙ্কা- এমনই বলছে হালের গবেষণা।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুলের মেডিসিন বিভাগের এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড হাড় ভঙ্গুর করে দেয়, কিডনির অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ করতে থাকে, এবং সবচেয়ে বড় কথা হৃদযন্ত্রের অবস্থা এতটাই খারাপ করে দেয় যে হৃদরোগের আশঙ্কা মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়।
বহু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে অনেকে অ্যান্টাসিড খেতে বাধ্য হন। তাছাড়া অ্যাসিড বা গ্যাসের সমস্যা কমাতে এই জাতীয় ওষুধ তো খেতেই হয়। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, এর বাইরেও প্রচুর মানুষ নিত্য এই ধরনের ওষুধ খেয়ে যান। কোনো প্রয়োজন ছাড়াই শুধুমাত্র মনের শান্তির জন্যই তারা এগুলো খেতে থাকেন। ওষুধের দোকান থেকেও সবচেয়ে বেশি মাত্রায় বিক্রি হয় এই ধরনের ওষুধই। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুলের মেডিসিন বিভাগের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই বিপুল পরিমাণে অ্যান্টাসিড খাওয়ার প্রবণতা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে মৃত্যুর হার।
কী হয় এই জাতীয় ওষুধ খেলে? পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড থাকলে, তা এই ওষুধগুলো কমিয়ে দেয়। কিন্তু যদি অতিরিক্ত অ্যাসিড না থাকে, তাহলে অ্যান্টাসিডে থাকা ক্ষার এবং এইচ২ ব্লকারের মতো ওষুধ অঙ্গগুলোর ক্ষতি করতে থাকে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। ওষুধের উপাদানগুলো কিডনিতে গিয়ে জমা হয়। এবং কিডনিরও ক্ষতি হয়।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ব্যাপক ভাবে কমে যায়। তাতে বাড়ে রক্তচাপ। সেটিই হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা এই অভ্যাস ত্যাগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকী ব্যথার ওষুধ খেলেও তার সাথে অ্যান্টাসিড না খাওয়ার কথা বলছেন। পেটে আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে ব্যথার ওষুধের সাথে অ্যান্টাসিড খাওয়ার দরকার আছে। না হলে একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এমনই বলছেন চিকিৎসকরা।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস