ওমিক্রন-ডেল্টা মিলে তৈরি হবে করোনার সুপার স্ট্রেন?
ওমিক্রন-ডেল্টা মিলে তৈরি হবে করোনার সুপার স্ট্রেন? - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। আমেরিকা, ইউরোপসহ একাধিক দেশে ডেল্টাকে পিছনে ফেলে সামনের সারিতে ওঠে এসেছে হানাদার ওমিক্রন। আমেরিকায় বেশির ভাগ করোনা রোগী এখন ওমিক্রনেই সংক্রমিত হচ্ছেন। আর এরই মাঝে নয়া এক আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে মানুষকে। ‘মারাত্মক’ ডেল্টা স্ট্রেনের সাথে মিলে কি সুপার স্ট্রেন তৈরি করতে পারে ‘অতি সংক্রামক’ ওমিক্রন? টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সংস্থা মডার্নার প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. পল বার্টন জানাচ্ছেন, এটা সম্ভব।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন ডা. পল বার্টন। সেখানেই তিনি জানান, যদি একই সময় কোনো রোগী ডেল্টা ও ওমিক্রনে সংক্রমিত হন, তাহলে ওই ব্যক্তির অ্দরেই নয়া এক সুপার স্ট্রেন তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে এই সংক্রান্ত তথ্য আছে। মহামারীর প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় কিছু গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, টিকা না নেয়া ব্যক্তির উফর দুটি স্ট্রেন একসাথে হানা দিতে পারে।’
উল্লেখ্য, ব্রিটেনে বর্তমানে ওমিক্রন ও ডেল্টা সংক্রমণ পাল্লা দিয়ে ছড়াচ্ছে। শুক্রবার ব্রিটেনে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩,২০১ জন। এর জেরে সে দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৯০৯। এই আবহে ডা বার্টনের আশঙ্কা, ওমিক্রন ও ডেল্টা জিন অদলবদল করে এক ভয়ঙ্কর স্ট্রেনের জন্ম দিতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে আলফা স্ট্রেন বি.১.১৭৭-এ সঙ্গে মিলেছিল, কেন্ট স্ট্রেন মিলেছিল বি.১.৪২৯-এর সঙ্গে। যদিও এগুলি খুব বেশি মারাত্মক বা সংক্রামক ছিল না। তবে ওমিক্রনের সংক্রামক শক্তি দেখে আশঙ্কিত বিজ্ঞানীরা।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কে ব্রিটিশ সরকার
করোনাভাইরাসের ডেল্টা বা অন্য স্ট্রেনের তুলনায় এর সংক্রমণ ক্ষমতা প্রায় ৭০ গুণ বেশি। মারণ ক্ষমতা কম, কিন্তু তাতেও যে প্রথম মৃত্যু ঘটে গেছে ব্রিটেনেই। ওমিক্রন নিয়ে তাই আতঙ্কে বরিস জনসনের সরকার।
সামনেই বড়দিনের উৎসব। এ অবস্থায় কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে প্রশাসন। জানানো হয়েছে, উৎসব ও তার পরবর্তী সময়ে নাইটক্লাব বা যেকোনো জমায়েত বন্ধ রাখা হবে। এমনকি, অফিসে গিয়ে কাজ করতে হলে প্রত্যেককে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত, ব্রিটেনে গতকালের দৈনিক সংক্রমণ ছিল সবচেয়ে বেশি। এক দিনে করোনা পজেটিভ ধরা পড়েছে ৮৮ হাজার ৩৭৬ জনের।
বিপদঘণ্টা বাজিয়ে পাঁচটি পরামর্শ দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে : ১) ভ্যাকসিন নিতে হবে সবাইকে। ২) কেনাকাটা করতে বের হলে বা বন্ধু-আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করার আগে করোনা পরীক্ষার (ল্যাটেরাল ফ্লো টেস্ট) রিপোর্ট নেগেটিভ কি না দেখে নেয়া। ৩) কারো সাথে দেখা করতে হলে খোলামেলা জায়গায় সাক্ষাৎ করা। ৪) কিছু দিনের ব্যবধানে লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। ৫) পারস্পরিক দূরত্ববিধি, মাস্ক পরা ও হাত ধোওয়ার নিয়ম বজায় রাখা।
সরকারের বক্তব্য, নিয়মগুলো মানলে সংক্রমণে রাশ টানা যাবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা