কম ঘুম হলে কী করবেন
কম ঘুম হলে কী করবেন - ছবি : সংগৃহীত
বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকমের ঘুমের অভ্যেস থাকে। দিনে আট ঘণ্টা ঘুমোনো প্রয়োজন— এমন একটা প্রচলিত ধারণা আমাদের মাথায় থাকলেও, সকলেরই ঘুমের সময় আলাদা হয়। কেউ কেউ দিনে আট ঘণ্টার অনেক বেশি ঘুমোন, আবার কেউ কেউ সারা রাত জেগে ভোররাতের দিকে খানিকক্ষণ ঘুমিয়েই আবার সকালে উঠে পড়তে পারেন। বহু লোকের দুপুরে ঘুমোনোর অভ্যাসও আছে, যেই ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে তাদের অস্বস্তি হয়। অনেক ঘুমানো বা কম ঘুমানো দুটিই অত্যন্ত সাধারণ অভ্যাস, আর আপাতদৃষ্টিতে তীব্র মাত্রায় অনিদ্রার সম্মুখীন না হলে তা কর্মক্ষমতায় খুব একটা প্রভাব ফেলে না।
তা হলে নির্দিষ্ট ঘুমের পরিমাণের কোনো মাপকাঠি কি হতে পারে? নাকি এটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতেই পারে?
এ রকম অনেক প্রশ্ন আমাদের মাথায় আসা স্বাভাবিক।
প্রথমত, বিভিন্ন বয়েসের ব্যক্তির জন্য ঘুমের প্রয়োজন বিভিন্ন রকম। সদ্যোজাতদের জন্য দিনে ১৭ থেকে ২০ ঘণ্টা ঘুমোনো প্রয়োজন। যত বয়স বাড়বে, তত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কমবে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়েসিদের দরকার ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা। আরেকটু বয়স বাড়লে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কমে ৭ ঘণ্টায় এসে দাঁড়ায়। প্রাপ্তবয়স্করা যদি দিনে অন্তত সাত ঘণ্টা না ঘুমান, তা হলে তার প্রভাব তাদের শরীরের ওপর পড়তে বাধ্য। কম ঘুমালে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা দেখা দেয়— যেমন ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা, ডিমেনশিয়া। এ ছাড়াও নিয়মিত কম ঘুম হলে, তা মানসিকভাবেও মানুষকে ক্লান্ত করে দিতে পারে। অবসাদ, অবসন্নতা ছাড়াও বাইপোলার ডিজর্ডারের প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে।
শরীরের এই ঘুমের প্রয়োজনীয়তাকে খাটো করে দেখা মানে শরীরের একটু একটু করে ক্ষতি করা, যা পরবর্তী কালে চাগাড় দিয়ে উঠতে পারে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি কষ্টকর সমস্যায়। যাদের রাতে ঘুমের সমস্যা হয়, তারা পরবর্তী কালে বড়সড় শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কবলে পড়তে পারে। জেনে নিন এই ঘুমের সমস্যার কবল থেকে বেরিয়ে আসার সহজ উপায়।
অভ্যাসে পরিণত করুন
প্রত্যেক দিন নিয়ম করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। বহু কাজ থাকলেও, আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান, তা হলে সেটি কিছু দিনের মধ্যেই আপনার অভ্যাসে পরিণত হবে।
ফোনের সরিয়ে রাখুন
রাতে শুয়ে শুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন ঘাঁটা শুধু ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় তাই-ই নয়, এ ছাড়াও চোখের সমস্যা আর মানসিক সমস্যার জন্যও এই বদভ্যাস অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
ছোট ছোট অভ্যাস অত্যন্ত জরুরি
অনেক সময় বিভিন্ন অভ্যাস ঘুমের পক্ষে সুবিধেজনক হতে পারে। ধ্যান করা বা ঘুমানোর আগে বই পড়ার অভ্যাসও ঘুমের জন্য ভালো। চাইলে ক্যামোমিল চা খেতে পারেন।
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে তা শুধু শরীরের গঠনের জন্য নয়, ঘুমের জন্যেও অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা