‘সেন্স অফ লস’ কাজ করবে কোহলির মধ্যে!

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Dec 09, 2021 04:18 pm
‘সেন্স অফ লস’ কাজ করবে কোহলির মধ্যে!

‘সেন্স অফ লস’ কাজ করবে কোহলির মধ্যে! - ছবি সংগৃহীত

 

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরপরেই এই ফর্ম্যাটের নেতৃত্ব স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। এই বছর আইপিএলের মরসুম শেষ হওয়ার পরপরেই তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিয়েছেন। এ বার আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য ভারতীয় দল ঘোষণা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে সিরিজে ভারতীয় দলের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে রোহিত শর্মাকে। নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিরাট কোহলিকে। পাশাপাশি টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে রোহিতেরই নাম। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে মনে করেন, বিরাট যত বড় ক্রিকেটার হোন না কেন, বর্তমান সময়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তার সাথে আলাদা করে কথা বলার প্রয়োজন রয়েছে, টিম ম্যানেজমেন্টের।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে হর্ষ ভোগলে একটি টুইটে লিখেছেন, ‘বিরাট যত বড় ক্রিকেটার হোন না কেন, সময় এসেছে ওর কাছে পৌঁছাতে হবে। এটা ধ্রুব সত্য যে এই মুহূর্তে বিরাটের মধ্যে 'সেন্স অফ লস' কাজ করবে। এই পরিস্থিতিতে দুই অধিনায়কের সব ফর্ম্যাটে একসাথে খেলাটা সব সময় একটু জটিল হয়ে দাঁড়ায়। দ্রাবিড়, কোহলি এবং রোহিত তিনজনের একে অপরের সাথে কাজ করার সময় স্বস্তি অনুভব করাটা প্রয়োজন। তিনজনের লক্ষ্যটা এক হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটে বড় রান নেই বিরাটের। ২০১৯ সালের পর থেকে তার ব্যাটে নেই কোন আন্তর্জাতিক শতরান। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে হারের পরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হার এবং তার পরে সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপে অত্যন্ত খারাপ ফলের কারণে অধিনায়ক বিরাটের পাশাপাশি ব্যাটার বিরাটও অত্যধিক চাপের সম্মুখীন। ফলে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ ব্যাটার বিরাটের ক্ষেত্রেও অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে।

বিরাটকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর পিছনে কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। তবে বিরাট কোহলি নিজেই কার্যত নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছেন।
১) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে থেকেই জল্পনা চলছিল, পারফরম্যান্স ভালো না হলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দুই ফরম্যাট থেকেই অধিনায়কত্ব যাবে বিরাটের। ঘটলও সেটা।

২) সাম্প্রতিক কালে সাদা বলের ক্রিকেটে তার নেতৃত্বে ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স আহামরি নয়। বড় কোনো টুর্নামেন্ট বিশেষত আইসিসি-র কোনো টুর্নামেন্টে সাফল্য পাননি কোহলি। তাই এবার রোহিতের উপরই ভরসা রাখতে চলেছে বোর্ড।

৩) বর্তমান বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে কোহলির সম্পর্ক যে তেমন ভালো নয়, সেটা অনেকদিন আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এভাবে যে তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হবে, সেটা হয়তো ভাবতেই পারেননি টিম ইন্ডিয়ার পোস্টার বয়।

৪) কোহলির স্বেচ্ছাচারিতাটাও একটা বড় কারণ। ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠে তাদের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না খেলানোটা মোটেও ভালো ভাবে নেননি বোর্ড কর্তারা। কোহলিকে একেবারে তাই সরিয়ে না দিয়ে, একটু একটু করে তার ক্ষমতা কেড়ে নিলো বোর্ড। দু'টি ফর্ম্যাটের নেতৃত্ব তার থেকে কেড়ে নিয়ে তাকে কিন্তু সতর্ক করল বোর্ড।

৫) ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছিল। কোহলির পছন্দের এবং অপছন্দের কারা, সেই বিভাজনটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। মোদ্দা কথা, কোহলির নেতৃত্বে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে বিভাজন নীতি মাথাচারা দিয়ে উঠেছিল। সবচেয়ে বড় কথা, সব প্লেয়ারের কাছে কোহলির গ্রহণযোগ্যতা সমান ছিল না। এবং তার কাছে কোনো সমস্যা নিয়ে প্রয়োজনে প্লেয়াররা পোঁছতেও পারতেন না। সতীর্থদের সাথে সব সময়ে একটা বড় দূরত্ব রেখে চলতেন কোহলি।

৬) কোহলি'র নেতৃত্বে একাধিক এমন ঘটনা রয়েছে যেখানে ক্রিকেটাররা দু'টি ম্যাচে ব্যর্থ হলেই দলে নিজেদের জায়গা পাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। তারা কার্যত ভয়ে ভয়ে থেকে পারফর্ম করতেন। যার ফলে খোলা মনে না খেলতে পারার ফলে সব সময় সেরাটা দেয়া সম্ভবও হতো না। কোহলির নেতৃত্বে এ রকম বড় উদাহরণ হল কুলদীপ যাদব। দুরন্ত প্রতিভা থাকার পরেও কুলদীপ নিজেও বুঝতে পারেননি, তার ভুলটা কোথায় ছিল। শুধু একা কুলদীপ নন, এ রকম বহু ক্রিকেটার রয়েছেন, যারা জানেনই না তাদের আসলে দলের মধ্যে ভূমিকাটা কী!

৭) বিরাটের স্বেচ্ছাচারিতার পাশেই রোহিত শর্মা আবার জুনিয়রদের পাশে দাঁড়াতেন সব সময়ে। প্রয়োজনে বাইরে ঘুরতে যেতেন বা হোটেলে গিয়ে এক সঙ্গে ডিনার করতেন। ব্যর্থ হলে আশ্বস্ত করতেন। রোহিতকে অধিনায়ক বাছার পিছনে এটা অন্যতম বড় কারণ।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us