৯০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তিহীনও সেরে উঠতে পারে‍

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Dec 08, 2021 01:25 pm
৯০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তিহীনও সেরে উঠতে পারে‍

৯০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তিহীনও সেরে উঠতে পারে‍ - ছবি সংগৃহীত

 

কম্পিউটারের সামনে সারাদিন বসে কাজ করা থেকে মুঠো ফোনে চোখ রাখা, আজকাল চোখের সমস্যা বহু মানুষের। যা দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ চোখের সমস্যায় ভুগছেন। এদেশে প্রতিটা ঘরে প্রায় এমন মানুষ রয়েছেন, যারা চোখে দেখতে পান না বা কম দেখতে পান এবং যার থেকে সেরে ওঠা সম্ভব নয়। ভারতেও রোগী কম নয়। ২০১৫- ১৯-এ ভারতীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এআইআইএমস-এর করা ন্যাশনাল ব্লাইন্ডনেস অ্যান্ড ভিস্যুয়াল ইমপেয়ারমেন্ট সার্ভে ইন্ডিয়া বলছে, ১.৯৯ শতাংশ ভারতীয় ৫০ বছর বয়সের পর থেকেই অন্ধত্বের সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর মতো বিষয়।

এই সমস্যার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিক ম্যাকিউলার এডেমা বা DME। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের এই ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথির সমস্যা হতে পারে। যা চোখের পিছনের অংশ বা রেটিনাতে প্রভাব ফেলে। ভারতে এমন প্রায় ৭ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী এই সমস্যায় ভুগছেন। প্রসঙ্গত, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ডায়াবেটিক রোগী ভারতে রয়েছে।

এবিষয়ে নেত্রালয়ম ও BB আই ফাউন্ডেশনের সিনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসক অনিরুদ্ধ মাইতি বলেন, এর থেকে বাঁচতে বা নিজেকে সচেতন রাখতে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যাদের বাড়িতে ডায়াবেটিসের হিস্টরি রয়েছে, বাবা- মা বা পরিবারে ডায়াবেটিক রোগী রয়েছে, তাদের প্রতি ৬ মাস অন্তর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত এবং যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ৬ মাস অন্তর রেটিনা পরীক্ষা করা উচিত। যদি কোনো উপসর্গ নাও থাকে তা-ও পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যেহেতু ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ তাই এটির প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন।

এবিষয়ে জয়পুর অপথানোলজিক্যাল সোসাইটির সেক্রেটারি, সিনিয়র চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ভিট্রিও রেটিন্যাল সার্জেন, চিকিৎসক বিশাল আগরওয়াল বলেন, বিশ্বে চোখের সমস্যা এবং অন্ধত্বে ভুগছেন এমন মানুষের একটা বড় অংশ আমাদের দেশে রয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ এমন সমস্যা চিকিৎসাযোগ্য এবং আগে থেকে সচেতন থাকলে তা আটকানো সম্ভব। যদি চোখের ছোট ছোট বিষয়েও ছোট্ট বিনিয়োগ করা যায় জীবন অনেক ভালোভাবে কাটতে পারে। জীবনে ভালো থাকার, উন্নতির এবং লক্ষ্যপূরণের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক ভালো দৃষ্টি শক্তি। চোখের সমস্যা সাধারণত হয়, রিফ্র্যাক্টিভ এরর (চশমা ব্যবহার না করলে), ক্যাটারাক্ট, গ্লুকোমা ও বিভিন্ন রেটিনাজনিত রোগ যেমন ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও বয়সজনিত ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন থেকে হয়। এগুলোর জন্য পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন, একজন তাই সমস্যা হলেই চিকিৎসকরে পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিত স্তরে চিকিৎসা হলে এগুলি সেরে যাওয়া সম্ভব।

গ্যালাক্সি স্পেশ্যালিটি সেন্টারের কনসালট্য়ান্ট অপথামোলজিস্ট ও জয় আই কেয়ার সেন্টারের ডিরেক্টর ড. পুনম জৈনের মতে, ছ'মাস অন্তর নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করা উচিত। যদি কারো এই চোখের সমস্যা থাকে তা হলে তো ঘন ঘন পরীক্ষা করা উচিত। DME-র ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই হয়, রোগীরা জানেনই না এই পরীক্ষা করানো উচিত এবং ৬ মাস অন্তর করানোর উচিত। অনেক সময় যতক্ষণ না বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছায় ততক্ষণ পর্যন্ত রোগীরা বুঝতেই পারেন না তারা এই রোগে আক্রান্ত।

খুব সাধারণ কিছু উপসর্গ-

১. চোখে ঝাপসা দেখা বা সব কিছু ঠিকমতো দেখতে না পাওয়া

২. চোখে সমস্ত রঙ ঠিক মতো দেখতে না পাওয়া

৩. রঙ বুঝতে না পারা বা হালকা হয়ে আসা

৪. দেখার সময় কালো স্পট দেখা গেলে

৫. কোনো সোজা লাইন যদি বাঁকা লাগে

৬. দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা

চোখের সমস্যার চিকিৎসা-

যারা ৬ মাস অন্তর চক্ষু পরীক্ষা করাবেন তারা তো বুঝতেই পারবেন চোখে কোনো সমস্যা হলে। যাঁরা পরীক্ষা করান না বা করাবেন না তাঁদের যদি উপসর্গ থাকে তা হলে তড়িঘড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর এটাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। এর পর এই ধরনের রোগের একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। এর জন্য Ophthalmologist-এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে লেজার ফটোকোগুলেশন (Laser Photo-coagulation), অ্যান্টি-ভিইজিএফ (Anti-VEGF- Vascular Endothelial Growth Factor) বা ইনজেকশন, সার্জারি ইত্যাদি।

এ সবের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলও মেনে চলতে হবে।

সূত্র : নিউজ ১৮

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us