ডেল্টা না ওমিক্রন : কে বড় ঘাতক?
ডেল্টা না ওমিক্রন : কে বড় ঘাতক? - ছবি সংগৃহীত
কার জোর বেশি কিংবা কে বেশি শক্তিশালী- ডেল্টা না ওমিক্রন? ডেল্টার সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে যুদ্ধ করা বিশ্ববাসীর মনে গত কয়েক দিন ধরে এই প্রশ্ন ক্রমাগত নানাভাবে ঘোরাফেরা করছে। কারণ একটাই, তথ্যটি জানা থাকলে তার আলোকে প্রস্তুত হওয়া যাবে পরবর্তী যুদ্ধের জন্য। অবশেষে সেই প্রশ্নের কিছুটা আভাস পাওয়া গেল। বর্তমানে সারা দুনিয়া কাঁপছে ওমিক্রনের আতঙ্কে। ফলে এই প্রশ্নের মীমাংসা খুবই জরুরি। করোনা ভাইরাসের আত্মপ্রকাশের পর নতুন করে বড় করে ধাক্কা দিয়েছিল ডেল্টা। এরপর এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ওমিক্রন।
আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসনের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান অ্যান্টনি ফসির মতে, ওমিক্রন তার পূর্বসূরি ডেল্টার মতো অতটা ক্ষতিকর নয়। তবে তার মানে এই নয় ওমিক্রন নিরীহ। বরং করোনাভাইরাসের এই নতুন রূপের এমন কিছু বিরল শক্তি আছে যা ডেল্টার ছিল না। সেই ক্ষমতাগুলোকে মাথায় রেখেই ওমিক্রন সম্পর্কে আগাম সতর্ক থাকার কথা বলেছেন চিকিৎসক ফসি। প্রায় একই কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মঙ্গলবার ফসি জানিয়েছেন, ওমিক্রনের সামগ্রিক চরিত্র বুঝতে হয়তো এখনো অনেকটাই সময় লাগবে। তবে কয়েকটি বিষয় ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। সেগুলো হলো—
ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা : ডেল্টার থেকেও দ্রুত সংক্রমিত হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ওমিক্রনের। ফসি বলেছেন, ‘ওমিক্রনের এই ক্ষমতাটি অন্তত পানির মতো স্বচ্ছ।’
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাঙার শক্তি : ফসির কাছে প্রশ্ন ছিল, ওমিক্রন কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাঙতে ডেল্টার থেকেও বেশি সক্ষম? যদি কেউ সবক’টি টিকা নিয়ে থাকেন বা যদি কারো আগে করোনা হয়ে থাকে, তবে তাদের শরীরে করোনাকে ঠেকানোর একটি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। ওমিক্রন কি সেই প্রতিরোধ ভেদ করতে পারে? আমেরিকার সংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসকের জবাব, ‘‘পারে। এ যাবৎ ওমিক্রন সম্পর্কে যা যা তথ্য হাতে এসেছে, তা বিশ্লেষণ করে এটা বলা যেতেই পারে।’
ফসি জানিয়েছেন, করোনার যে সমস্ত টিকা এখন বাজারে চালু আছে তা থেকে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, তা পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্টও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হাতে এসে যাবে।
ওমিক্রনের মারণক্ষমতা : ফসির কথায়, ‘একটা বিষয় নিশ্চিত যে ওমিক্রন করোনাভাইরাসের পূর্বতন রূপ ডেল্টার মতো মারক নয়।’
এ ব্যাপারে ফসির যুক্তি, ‘ডেল্টার সময় আক্রান্তের সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ছিল কাছাকাছি। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে আক্রান্তদের বেশির ভাগকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। এ ছাড়া গন্ধ চলে যাওয়া শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাতেও ভুগছেন না ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীরা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা