করোনাভাইরাস সংক্রমণের দু-দুটি ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ওমিক্রন আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার বিপজ্জনক এই ভ্যারিয়েন্টটি। প্রতিবেশী ভারতে চলে এসেছে করোনার এই ভ্যারিয়েন্টটি। ভারতের এ মাথা ও মাথা থেকে প্রতিদিনই আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ যে আসতে চলেছেই, এরকমটাও বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। এখন পর্যন্ত কলকাতায় এই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তের খোঁজ না মিললেও শিয়রে যে ওমিক্রন-খাঁড়া ঝুলছেই, তা তো বলাই বাহুল্য। কী করে চিনবেন ওমিক্রনকে? বুঝবেন কী করে শরীরে বাসা বেঁধেছে ওমিক্রন? রোগের লক্ষণগুলো কী কী? শুনে নিন।

প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারতে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২৩। মহারাষ্ট্রের পুনে, রাজস্থানের জয়পুর ও দিল্লিতে মিলেছে ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান। কোনো দেশ থেকেই এখন পর্যন্ত মৃত্যুর খবর না মিললেও, মারাত্মকভাবে সংক্রামক এই ভাইরাসটি। স্পাইক প্রোটিনে বারবার মিউটেশন ঘটিয়ে ঘটিয়ে আরো মারাত্মক হয়ে উঠছে সেটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম থেকেই বিপজ্জনক তকমা দিয়েছে ভ্যারিয়েন্টটিকে। অনেক ক্ষেত্রেই আগে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের অনেকেই ফের এই ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এমন অনেকেই রয়েছেন, যাদের এখন পর্যন্ত টিকার দ্বিতীয় ডোজ পর্যন্ত নেয়া হয়নি। টিকা নেয়া থাকলেও তা আদৌ কাজ করবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। বুস্টার ডোজের প্রয়োজন কিনা তা নিয়েও ধন্দে রয়েছেন তারা।

ফলে ওমিক্রন নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে এই মুহূর্তে অনেক প্রশ্ন। এখন, কী করে বুঝবেন, সেই ভ্যারিয়েন্ট এদিক সেদিক ঘুরে আপনার চৌহদ্দিতেই ঢুকে পড়েছে কিনা! আগে করোনা সংক্রান্ত যে সব লক্ষণের কথা আমরা জানতাম, তার চেয়ে নাকি অনেকটাই আলাদা এই ভ্যারিয়েন্টটিতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

কী কী সেসব লক্ষণ?
মূলত গলা ব্যথা, দুর্বলতা এবং সারা গায়ে ব্যথা। এখন পর্যন্ত যে যতজন ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেরই ছিল একই রকম উপসর্গ। তানজানিয়া থেকে দিল্লিতে ফিরে করোনা আক্রান্ত হন এক ব্যক্তি। তারও শরীরে এমনই কয়েকটি উপসর্গ দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে বহু আক্রান্তই রয়েছেন উপসর্গহীন। ফলে না-বুঝেই রোগ ছড়াচ্ছেন তারা।

ডেল্টা বা অন্য ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে যেমন অন্যতম সমস্যা ছিল শ্বাসকষ্ট এবং ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়া। এক্ষেত্রে তা একেবারেই নেই। সাধারণ জ্বরসর্দির মতোই সামান্য উপসর্গ দেখা যাচ্ছে আক্রান্তের শরীরে। নতুন ধরনের এই উপসর্গের কারণ সম্ভবত ভাইরাসটির মিউটেশন ক্ষমতা। পরবর্তীকালে মানবশরীরের থেকে জেনেটিক কিছু বৈশিষ্ট্য ধার করে অন্য কোনো ভয়াল আকার যে নেবে না এই ভ্যারিয়েন্টটি, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নন চিকিৎসকেরা। আর সাধারণ সর্দিকাশির সঙ্গে উপসর্গগত বিশেষ পার্থক্য না থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাত্তা দিচ্ছেন না মানুষ। ফলে রোগ আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

ফলে সামান্য উপসর্গকেও অবহেলা না করে সতর্ক হোন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে কোয়ারান্টাইনে থাকুন। তবে তারও আগে মেনে চলুন কোভিড বিধি। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন, আর নিরাপদ দূরত্ববিধি মেনে চলুন। কথায় বলে না, সাবধানের মার নেই!
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন