মিষ্টি দইয়ের এত উপকার!
মিষ্টি দই - ছবি সংগৃহীত
মিষ্টি খাব, কিন্তু ওজন বাড়বে না- এ কার্যত সোনার পাথরবাটির মতো অবস্থা৷ কিন্তু মিষ্টির স্বাদ থেকে জিভকে বাঁচিয়ে রাখাও দুষ্কর! কিন্তু সুস্বাদু হলেও আপস করতে হয় স্বাস্থ্যের সঙ্গে৷ তাই আমরা ধরে নিই মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই সবথেকে ভাল৷ কিন্তু আছে বিকল্প পথও৷ মিষ্টিমুখ হবে, আবার স্বাস্থ্যের ক্ষতিও বেশি হবে না-সেই সমাধান আছে মিষ্টি দইয়ে৷ বিশেষ করে সেই স্বাদ যদি বাড়িতে তৈরি হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই!
মিষ্টি দই পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় মিষ্টান্ন। ফুটন্ত দুধ যখন একটু ঘন হয়ে আসে তখন তার মধ্যে চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই মিষ্টি দই এবং এই অবস্থায় সারা রাত রেখে দেয়া হয় যাতে ওই মিশ্রণটি গেঁজিয়ে ওঠে। মাটির ভাঁড়ে সবসময় মিষ্টি দই রাখা হয় তার কারণ হল এই ভাঁড়ের বহুরন্ধ্র ভেদ করে জলীয় বাষ্প যে শুধুমাত্র ওই দই কে ঘন রাখতে সাহায্য করে তা নয়, এছাড়াও দই তৈরি করার জন্য সঠিক তাপমাত্রা প্রদান করে। প্রায়সময়য়েই এই দইয়ের সাথে এক চিমটি এলাচ মিশিয়ে একে রাখা হয় যাতে সুন্দর সুবাস উৎপন্ন হয়।
বাংলা মিষ্টি দইয়ের জনপ্রিয়তা বাইরেও আকাশছোঁয়া৷ মাটির ভাঁড়ে জমানো এই মিষ্টি স্বাদের সঙ্গে মিশে থাকে বৃষ্টিভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ৷ ফার্মান্টেড বলে মিষ্টি দইও প্রোবায়োটিকে ভরপুর৷ পাশাপাশি আছে অ্যান্টি ইনফ্লেম্যাটরি উপাদান৷ তাছাড়া তীব্র গরমে পেটের গণ্ডগোলেও আরামদায়ক মিষ্টি দই৷
প্রোবায়োটিক শরীরের ভিতরে নানা সমস্যার উপশম করে৷ হজমে সহায়ক তো বটেই৷ এ ছাড়া পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অমূল্যো৷ ক্ষুদ্রান্তের সুস্থতা নিশ্চিত করে প্রোবায়োটিক আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বার করে দেয়৷
প্রখ্যাত নিউট্রিশনিস্ট এবং ডায়েটিশিয়ান নমামি আগরওয়াল মনে করেন মিষ্টি দই খুবই ভালো বিকল্প৷ ইনস্টাগ্রামে তিনি ছবি শেয়ার করেছেন জমাট মিষ্টি দইয়ের৷ লিখেছেন, ‘‘দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে তার পর তাতে গুড় মিশিয়ে, তার পর রাতভর জমতে দেয়া হয়৷ এভাবেই তৈরি হয় মিষ্টি দই৷’’ তবে মিষ্টি দই তৈরিতে গুড়ের তুলনায় চিনির ব্যবহার অনেক বেশি৷
টক দই এবং মিষ্টি দইয়ের স্বাদের মতো এদের তৈরির প্রক্রিয়াতেও আছে ফারাক৷ টক দই বাড়িতে তৈরির সময় হালকা গরম দুধে টক দই মেশাতে হয়৷ চলতি কথায় যাকে বলা হয় ‘সাজো’৷ মিষ্টি দই তৈরি করতে চাইলে ‘সাজো’ হিসেবে টকদই বা মিষ্টিদই, যেকোনো একটা, অথবা দু’টি মিশিয়েও দেয়া যায়৷ পুষ্টিসাধন ও সুস্থতার দিক দিয়ে টক দই এগিয়ে থাকলেও মিষ্টি দইও পরিমিত খেলে, ক্ষতি হয় না৷ তবে মিষ্টির কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি দই থেকে দূরেই থাকতে হয়৷
সূত্র : নিউজ ১৮