উরুগুয়ে ও চিলির পরাজয়ে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা
উরুগুয়ে ও চিলির পরাজয়ে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা - ছবি সংগৃহীত
চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের সাথে গোলশুন্য ড্র করেও দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্ব থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে কাতারের টিকিট নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। কার্যত বলিভিয়ার কাছে উরুগুয়ের ৩-০ ও ইকুয়েডরের কাছে চিলির ২-০ গোলের পরাজয়ে আর্জেন্টিনার বিশ্ব মঞ্চে খেলার নিশ্চিত হয়। টানা ২৭ ম্যাচে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনা এই অঞ্চলের বাছাইপর্বে চার ম্যাচ হাতে রেখেই মূল পর্বের টিকিট পেল। এর আগে প্রথম দল হিসেবে ব্রাজিল কাতারে খেলা নিশ্চিত করেছিল। এই অঞ্চল থেকে আর দুটি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে ।
জুলাইয়ে রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলেছিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে দুর্দান্তভাবে এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা এনিয়ে টানা ১৩ বারের মতো বাছাইপর্ব পার করে মূল পর্বে জায়গা করে নিলো। ১৯৭০ সালে তারা একবার শুধুমাত্র বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে পরাজিত করে বাছাইপর্বেও বাধা পার করেছিল ব্রাজিল।
কালকের ম্যাচে চির দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে ছয়বারের ব্যালন ডি অ’র মেসিকে মূল একাদশে পাওয়া গেলেও ইনজুরির কারনে তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারকে দলে পায়নি সেলেসাওরা। যদিও মেসি দলের হয়ে তেমন ভাল কোন সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। এই ড্রয়ে আর্জেন্টিনার থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে এই অঞ্চলের শীর্ষস্থানটা ধরে রাখলো ব্রাজিল।
পুরো ম্যাচেই মেসি, লটারো মার্টিনেজ, ডি মারিয়ারা ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। মূলত ব্রাজিলের রক্ষনভাগ আর্জেন্টিনাকে স্বাভাবিক ম্যাচ খেলতে দেয়নি। বিপরীতে ব্রাজিল কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেছে। ফ্রেডের পাস থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে না গেলে তখনই হয়ত এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিল। দুই দলের থেকে পুরো ম্যাচেই কোনো ধরনের উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়নি। ম্যাথুস কুনহা আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের উপর দিয়ে চিপ করে বল জালে প্রবেশ করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রচেষ্টাটি ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।
প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিটে আর্জেন্টিনা কিছুটা সরব হয়ে ওঠে। রডরিগো ডি পলের শট কোনমতে আটকে দেন এ্যালিসন বেকার। প্রথম ৪৫ মিনিটে ব্রাজিল একটি মাত্র শট করতে পেরেছে, ফ্রেডের ওই দুর্বল শটটি অবশ্য কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মিডফিল্ডার ফ্রেডই নিজের ছন্দ ধরে রেখেছিল। মার্টিনেজকে পরাস্ত করলেও শেষ পর্যন্ত ডেডলক অবশ্য ভাঙ্গতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্দে অবশ্য দুই গোলরক্ষকের কেউই তেমন কোনো কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েননি।
এদিকে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে বলিভিয়ার কাছে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়ে হতাশ করেছে। এনিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা চার ম্যাচে হারলো উরুগুয়ে। টানা পরাজয়ে ১৪ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের সপ্তম স্থানে আছে উরুগুয়ে।
প্লে-অফে সুযোগ পাওয়া নিয়ে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে কলম্বিয়া, পেরু, চিলি, উরুগুয়ে ও বলিভিয়ার মধ্যে। উরুগুয়ের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে কলম্বিয়া আর পেরু। পয়েন্ট তালিকার চার ও পাঁচ নম্বর স্থানে আছে এই দুটি দল। ছয়ে থাকা চিলির পয়েন্ট উরুগুয়ের সমান হলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে আছে লুইস সুয়ারেজরা। আট নম্বরে থাকা বলিভিয়া আছে মাত্র এক পয়েন্ট পেছনে। শেষ দুই রাউন্ডে তাই এখনো অনেক কিছুই হতে পারে।
সূত্র : এএফপি