২০ মিনিট দেরি হলে মারাই যেতেন রিজওয়ান!
২০ মিনিট দেরি হলে মারাই যেতেন রিজওয়ান! - ছবি : সংগৃহীত
সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরেই ছিটকে যেতে হয়েছিল বাবর আজমের পাকিস্তান দলকে। তবে ওই ম্যাচে পাকিস্তানের ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে। কী অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে রিজওয়ান সেদিন সেমিফাইনালে খেলেছিলেন কারো অজানা নয়। সেমিফাইনালের দু'দিন আগেই তাকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়েছিল। এবার ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রিজওয়ানের কথায় ধরা পড়ল এক শিহরণ জাগানো বিবরণ। পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান জানিয়ে দিলেন আর মাত্র ২০ মিনিট দেরি হলেই সেদিন ঘটে যেতে পারত দুর্ঘটনা।
এক সাক্ষাৎকারে রিজওয়ান বলেন, ‘আমাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ ছিল আমার। চিকিৎসকরা আমাকে দেখার পরে বলেন, আমার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে গেছে। প্রথমে বলা হয়েছিল, পরের দিন সকালে আমাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে । পরে জানানো হয় সকালে নয়, সন্ধ্যায় ছাড়া হবে। চিকিৎসকেরা সেই সময় আমাকে জানান, হাসপাতালে নিয়ে যেতে ২০ মিনিট দেরি হলে আমার শ্বাসনালী ও ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারত। আমার শ্বাসনালীর পাইপ দুটি ফেটে যাওয়ারও আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এতে আমার মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারত।'
আইসিইউ-তে কাটিয়ে এসেই মাঠে নেমে পড়েন রিজওয়ান, করেন ৬৭ রান
দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা বোধহয় একেই বলে! অসুস্থ শরীর। তবে দেশের জার্সি পরে যে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাই বোধহয় হাসপাতালের আইসিইউ থেকে বেরিয়ে এসেই মাঠে নেমে পড়েছিলেন তিনি। শুধু মাঠেই নামেননি। ওপেন করতে নেমে ৫২ বলে ৬৭ রানের নির্ভরযোগ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। যে কারণে দল হারলেও, বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমীর মন জয় করলেন রিজওয়ান।
বুধবারই জানা গিয়েছিল, রিজওয়ান ও শোয়েব মালিক ফ্লু-তে আক্রান্ত। যে কারণে তারা বুধবার অনুশীলনও করেননি। তবে দুই ক্রিকেটারই বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলেছেন। যদিও সেমিফাইনালে হেরে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যেতে হয়েছে পাকিস্তানকে। তবে পাকিস্তান টিমের ডাক্তারের এক বিবৃতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেইসাথে রিজওয়ার দায়বদ্ধতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব।
পাকিস্তান দলের ডাক্তার দাবি করেছেন, ‘৯ নভেম্বর বুকে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রিজওয়ান। দু'রাত্রি তিনি আইসিইউ-তে কাটান। এর পরও ফিট হয়ে ম্যাচে নেমে অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছেন তিনি।’
অজিদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে বাবর আজম এবং রিজওয়ান জুটি ৭১ রান করে। বাবর আউট হওয়ার পরও হাল ধরে থাকেন রিজওয়ান। ফখর জামানকে সাথে নিয়ে তিনি দ্রুত পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন। রিজওয়ানের ৬৭ ছাড়া ফখর জামান করেছেন ৩২ বলে ৫৫ রান। ৩৪ বলে ৩৯ করেছেন বাবর আজম।
প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৭৬ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১ ওভার বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস