উল্কার গতিতে উত্থান এবং পতন, কেন এমন হার পাকিস্তানের
উল্কার গতিতে উত্থান এবং পতন, কেন এমন হার পাকিস্তানের - ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বকাপ শুরুর আগে ট্রফির দাবিদার হিসেবে পাকিস্তানের নাম কখনোই শোনা যাচ্ছিল না। কিন্তু ভারতকে হারাতেই চমকে গেল বিশ্ব। শাহিন শাহ আফ্রিদির বল যেভাবে উইকেটের সামনে রোহিত শর্মার পা খুঁজে নিয়েছিল, তাতে ব্যাটারদের রাতের ঘুম উড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। শুধু রোহিত নন, সেই ম্যাচে আফ্রিদির শিকার ছিলেন লোকেশ রাহুল এবং বিরাট কোহলিও। সাড়া জাগিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেন বাবররা।
এর পর একের পর এক ম্যাচে খেলতে নামেন এবং জেতেন। বল হাতে শাহিন আফ্রিদি, হাসান আলি, হারিস রউফ, ইমাদ ওয়াসিমরা ত্রাস হয়ে ওঠেন ব্যাটারদের। সব চেয়ে অবাক করে পাকিস্তানের ফিল্ডিং। চরম ফিট দল নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলতে নেমেছিলেন বাবররা। সেই সাথে দলে ছিলেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক, মোহম্মদ হাফিজের মতো ক্রিকেটাররা। যারা জানেন কঠিন ম্যাচ কিভাবে বার করতে হয়। লিগ পর্বে কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল শুধু ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। সেই দুই দলকেই হেলায় হারিয়ে এগিয়ে চলে বাবরদের অপরাজেয় যাত্রা। নামিবিয়া, আফগানিস্তান বা স্কটল্যান্ডের পক্ষে তাদের আটকানো সম্ভব ছিল না, তা হলোও না।
পাকিস্তান শুধু ম্যাচ জেতেনি, লিগ পর্বে হৃদয় জিতে নিয়েছিল। মরিয়া লড়াই দেখা যাচ্ছিল তাদের মধ্যে। বিশ্বকাপে আসার আগে নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড বাবরদের দেশে ম্যাচ খেলতে অস্বীকার করে। সেই অপমানের শোধ নেয়ার খিদে দেখা যাচ্ছিল ইমরান খানদের দেশের ছেলেদের মধ্যে। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ দলের সাথে তুলনা শুরু হয়ে যায় বাবরের দলের।
কিন্তু সেই সব আশা ভেঙে যায় বৃহস্পতিবার। অস্ট্রেলিয়ার সামনে স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারল না পাকিস্তান। হতাশ পাকিস্তানের ছবি দেখল বিশ্ব। হার না মানা জেদ যেন গ্রুপ পর্বে রেখেই সেমিফাইনাল খেলতে এসেছিলেন তারা। ডেভিড ওয়ার্নার পাল্টা মারতেই লাইন লেংথ হারিয়ে ফেললেন হাসান আলিরা। যে দলের ফিল্ডিং অবাক করেছিল গ্রুপ পর্বে, সেই পাকিস্তানের হাসান আলি ক্যাচ ফেললেন গুরুত্বপূর্ণ সময়। ১৯তম ওভারে আফ্রিদির বলে ক্যাচ তোলেন ম্যাথু ওয়েড। পাল্টে যেতে পারত ম্যাচের রং। কিন্তু জীবন পেয়ে আর অপেক্ষা করেননি অভিজ্ঞ ওয়েড। পর পর তিনটি ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি। সেমিফাইনালেই জয়রথ থেমে যায় বাবরদের।
মাঠের মধ্যে মুখ ঢেকে বসে পড়েন আফ্রিদি। যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা হঠাৎ হ্যাঁচকা টানে তাদের মাটিতে নামিয়ে আনেন ওয়েডরা। বিশ্বকাপ জিততে জানে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে সেরা হতে না পারলেও নক আউট পর্বে সব সময়ই ভয়ঙ্কর তারা। সেটাই বুঝিয়ে দিলেন বৃহস্পতিবার। শেষ বল অবধি স্নায়ুর চাপ ধরে রাখল। লড়াই চালিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ৬ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানের ছুটি করে দিলো তারা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা