পাকিস্তানকে বৃহত্তম ও আধুনিকতম রণতরী 'উপহার' চীনের, চাপে ভারত!
পাকিস্তানকে রণতরী 'উপহার' চীনের - ছবি : সংগৃহীত
'পাকিস্তানের সবসময়ের বন্ধু' চীন দেশটিকে দারুণ এক উপহার দিয়েছে। আর তাতে চিন্তিত হয়ে পড়েছে ভারত। ভারতীয় পত্রিকাগুলোও ঘটনাটি বেশ ফলাও করে প্রচার করছে। বলা হচ্ছে, এই রণতরীর ফলে পাকিস্তানের নৌবাহিনী বেশ শক্তিশালী হবে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জন্য তা উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হবে।
ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসে এ নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এখানে তুলে ধরা হলো।
পাকিস্তানকে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করল চীন। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ভারতকে প্রতিহত করতেই ইসলামাবাদকে এই 'উপহার' দিলো বেইজিং। পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা জোরদার করতে চীন। এই জাহাজ পাঠিয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত যত যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করেছে তার মধ্যে পিএনএস তুঘরিলের এয়ার ডিফেন্সই সবচেয়ে ভালো।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের সরকারি গণমাধ্যমের তরফে জানানো হয়, চীন-পাকিস্তান 'সমস্ত আবহাওয়ায় কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব'কে তুলে ধরে। চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন লিমিটেড এই যুদ্ধজাহাজটি ডিজাইন ও নির্মাণ করেছে। সাংহাইতে একটি কমিশনিং অনুষ্ঠানে পাকিস্তান নৌবাহিনীর কাছে যুদ্ধজাহাজটি হস্তান্তর করে চীন।
গ্লোবাল টাইমসের একটি সাক্ষাৎকারে পিএলএ নেভাল রিসার্চ অ্যাকাডেমির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ঝাং জুনশে বলেন, এর আগে চীন যত রণতরী রফতানি করেছে, সেগুলোর তুলনায় নতুন জাহাজটির আরো ভালো। এতে বিমান প্রতিরক্ষার ক্ষমতা রয়েছে। এটিতে একটি উন্নত রাডার সিস্টেম এবং এটি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সাথে সজ্জিত।
পাকিস্তান নৌবাহিনীতে পিএনএস তুঘরিল নামে এই রণতরীটি সংযুক্ত হবে। এই জাহাজ থেকে ভূমি, আকাশ এবং সাগরের তলদেশেও নির্ভুল নিশানা করা সম্ভব বলে দাবি করা হয়েছে। অত্যাধুনিক যুদ্ধ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম।
তালেবান সংক্রান্ত ভারতের ডাকা মিটিং এড়িয়ে যাচ্ছে চীনে
এদিকে তালেবানের দখলে থাকা আফগানিস্তানের প্রসঙ্গ নিয়ে ভারতের ডাকা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক এবার এড়িয়ে যেতে চাইছে চীন। কার্যত পাকিস্তানের পথেই এবার হাঁটতে চলেছে চীন। তাদের সাফাই, বৈঠকে যোগ দেয়ার মতো সময় তাদের হাতে নেই। ভারতের হিন্দুস্তান পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আসলে ভারত এই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক ডেকেছে। সেখানে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। রাশিয়া, ইরান হ এশিয়ার একাধিক দেশের পদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এই বৈঠকে অংশ নেবেন। এখানে মূলত তালেবানের দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি, সন্ত্রাসবাদের নানা দিক, মাদক পাচারের বিরুদ্ধে কিভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা যায় তা নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে 'Delhi Regional Security Dialogue on Afghanistan' শীর্ষক সেই মিটিংয়ে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি কাজাকিস্তান, কিরঘিজস্তান, তুর্কেমেনিস্তান, উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিরা হাজির থাকবেন।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন সিডিউলের সমস্যার কারণে চীন এই মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারবে না। এখানেই প্রশ্ন উঠছে কেন চীন বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে হাজির থাকতে পারছে না? ওয়াংয়ের দাবি, আমরা আগেই এনিয়ে ভারতকে জানিয়ে দিয়েছি। এদিকে পাকিস্তানও আগেই জানিয়েছে তারা এই মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারবে না।
এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাকিস্তান ও রাশিয়ার সাথে যোগাযোগ রেখে চীন তলায় তলায় তালেবানের সাথে যোগাযোগ রাখছে। এমনকী চীনকে বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হিসাবেও উল্লেখ করেছে তালেবান। এমনকী বেইজিংকে তারা আশ্বাস দিয়েছে যে পূর্ব তুরকেস্তান ইসলামিক আন্দোলন যাতে চীনে বিচ্ছিন্নতাবাদে ইন্ধন না দিতে পারে সেটা তারা দেখবে।