আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারে লাভবান হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র!

মাসুম খলিলী | Sep 22, 2021 06:05 pm
জো বাইডেন

জো বাইডেন - ছবি সংগৃহীত

 

সদ্যপ্রকাশ হওয়া বাইডেন ডকট্রিন এখন বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনোনিবেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই মতবাদে অন্যান্য দেশের সমাজ পুনর্নির্মাণ এবং বিদেশে জাতিগঠনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়/এগারো-পরবর্তী নীতি পরিত্যাগ করা হয়েছে। আমেরিকান বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে বাইডেন ডকট্রিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ল্যান্ডমার্ক।

প্রকৃতপক্ষে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পদক্ষেপগুলো মূলত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক এবং চূড়ান্ত বাস্তবায়ন। বারাক ওবামাই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে ইরাক ও আফগানিস্তানে আমেরিকার যমজ যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে তালেবানের সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছেন। ওবামা এবং ট্রাম্প উভয়েই বাইরে আমেরিকান ঘাঁটি কমিয়ে আনার জন্য ওয়াশিংটনের মনোযোগকে পুনর্নির্দেশিত করতে ভিন্ন ভিন্নভাবে উপায় সন্ধান করেন।

আমেরিকান প্রত্যাহার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনকে সঠিকভাবে অনুধাবন ও মূল্যায়ন করা বাকি বিশ্বের জন্য সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তান ত্যাগ করা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঠিক কৌশলগত সিদ্ধান্ত। যদি তা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে অতিমাত্রায় বিলম্বিত হতো তাহলে এটি আমেরিকান লক্ষ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারত। আবেগবশে আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়াকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সমাপ্তি মনে করা ঠিক হবে না। এটি কেবল আপেক্ষিক এবং ধীরগতির প্রত্যাহারকে অব্যাহত রাখবে। আর এটিকে আমেরিকান জোট এবং অংশীদারিত্বের ধ্বংসের ঘটনাও বলা যাবে না। আফগানিস্তানের ঘটনাবলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন কোনো রাজনৈতিক ভূমিকম্প সৃষ্টির সম্ভাবনা কম যা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় আমেরিকানরা যে ধরনের অভিজ্ঞতা পেয়েছিল সে মাত্রার বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা এখানে নেই। বরং ওয়াশিংটন তার বৈশ্বিক সম্পৃক্ততা নিয়ে নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে ব্যস্ত। এটি একভাবে বলা যায়, আমেরিকান ভিত্তিকে শক্তিশালী করার দিকে আরো বেশি মনোযোগ সৃষ্টি করছে।

নতুন নীতির আওতায় বিদেশে, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের নামে বৈশ্বিক ক্রুসেড থেকে সরে এসে দেশ এবং বিদেশে পশ্চিমা অবস্থানগুলোতে উদার মূল্যবোধের সক্রিয় প্রতিরক্ষার দিকে এখন এগিয়ে যাচ্ছে।

আফগানিস্তান একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক তর্কের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, যা বাইডেনের হোয়াইট হাউজকে উদার গণতন্ত্রের বৈশ্বিক জয় অদূর ভবিষ্যতে অর্জন করা যায় কি না সে বিষয়ে প্ররোচিত করেছিল। নতুন নীতি অনুসারে এইভাবে বুশ প্রশাসনের ভাষায় সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টিকারী ‘জলাভূমি নিষ্কাশন’ এর সমস্যাযুক্ত দেশগুলোকে পুনর্নির্মাণ করার চেষ্টা বৃথা। মার্কিন সামরিক বাহিনী একটি শক্তিশালী অস্ত্র, কিন্তু এটি আর প্রথম অবলম্বনের মাধ্যম নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে নিরাপদ রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিতেছে, গত বিশ বছরে মার্কিন মাটিতে কোনো বড় সন্ত্রাসী হামলা হয়নি। এই সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ভূ-রাজনৈতিক, ভূ -অর্থনৈতিক, আদর্শিক এবং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us