‘ইঞ্জিনিয়ার’ রাম ঐশী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন! পড়ানো হবে কলেজে

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Sep 12, 2021 01:59 pm
‘ইঞ্জিনিয়ার’ রাম ঐশী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন! পড়ানো হবে কলেজে

‘ইঞ্জিনিয়ার’ রাম ঐশী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন! পড়ানো হবে কলেজে - ছবি সংগৃহীত

 

কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনার পাশাপাশি এ বার রামচরিতমানসও পড়তে হবে। এমন নির্দেশ দিয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্য প্রশাসন। নতুন পাঠ্যসূচিতে রামের চরিত্র বিশ্লেষণের সাথে শেখানো হবে রামের মতো ‘একজন ঐশী ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি’র দক্ষতা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়েও। বিজেপি-শাসিত রাজ্যটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২০ সালে রাজ্যে যে নতুন শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছিল, তা মেনেই এই পাঠ্যসূচির বদল।

মধ্যপ্রদেশের সমস্ত কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীকে নতুন এই পাঠ্যসূচি মেনে পড়াশোনা করতে হবে বলে জানিয়েছে সরকার। রামচরিতমানস ছাড়াও পাঠক্রমে থাকছে মহাভারত। এমনকি যোগাভ্যাস, প্রাণায়ামের মতো বিষয়ও জুড়ে দেয়া হয়েছে নতুন পাঠক্রমে। উচ্চশিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, ‘আমরা শুধু ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষিত করব না। তাদের চরিত্রও গড়ে দেব।’
কিন্তু চরিত্র গড়তে একটি বিশেষ ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থের দরকার হলো কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সে রাজ্যের বিরোধীরা। মধ্যপ্রদেশেরই এক কংগ্রেস বিধায়কের প্রশ্ন, ‘তা হলে কেন বাইবেল, কোরআন বা গুরু গ্রন্থসাহিব নতুন সিলেবাসে জায়গা পেল না?’

নতুন পাঠক্রমে চক্রবর্তী রাজাগোপালচারীর লেখা মহাভারতের মুখবন্ধের একটি ইংরেজি অনুবাদ পড়ানো হবে। যোগ এবং প্রাণায়াম শিক্ষায় শেখানো হবে ‘ওঁ ধ্যান’ এবং বিভিন্ন মন্ত্রোচ্চারণ কিভাবে করতে হয়, তা-ও। এর সাথেই স্নাতক পড়ুয়াদের পড়তে হবে ‘শ্রীরামচরিতমানসের ফলিত দর্শন’ নিয়ে।

নতুন বিষয়টির বিভিন্ন অধ্যায়ের কয়েকটি হলো, ‘বেদ, উপনিষদ এবং পুরাণের চার যুগ’, ‘ভারতীয় সংস্কৃতির মূল বা শিকরে আধ্যাত্মিকতার চর্চা’, ‘ভারতে দৈব অবতারের অস্তিত্ব’, ‘ঐশী শক্তি বহন করার চারিত্রিক বৈশিষ্ট’, ‘মানবচরিত্রের সর্বোচ্চ যোগ্যতা: পিতার প্রতি রামের অপার আনুগত্য’, এমনকি রামের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতা নিয়েও একটি আলাদা অধ্যায় থাকবে এই বিষয়ে। নাম, ‘রাম সেতু নির্মাণ : রামের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার নিদর্শন’। মধ্যপ্রদেশের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী মোহন যাদব বলেছেন, ‘এই বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ বাড়াবে। তাদের চারিত্রিক গঠন দৃঢ় করবে। কারণ রামচরিতমানস ও মহাভারত আমাদের জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শেখায়।’

মোট ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ১ হাজার ৪০০ কলেজ রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। শিক্ষার্থী সংখ্যা সাড়ে ১৩ লক্ষ। যার মধ্যে প্রথম বর্ষের ছাত্র সংখ্যা কমপক্ষে দু’লক্ষ। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কলেজ খুলছে রাজ্যে। তবে অর্ধেক ছাত্র–ছাত্রী নিয়ে ক্লাস চলবে। আর নতুন ক্লাসে নতুন পাঠক্রমেই পড়াশোনা হবে বলে ঘোষণা করেছে সরকার।

এর আগে ২০১১ সালে স্কুলে গীতা পড়ানোর প্রস্তাব এনে সমালোচনার মুখে পড়েছিল মধ্যপ্রদেশ সরকার। বিরোধীদের নিন্দায় সেই সময় সরকার ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এবার উচ্চ শিক্ষার এই নতুন নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। ইন্দৌরের দেবী আহল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নরেন্দ্র ধক্কড় বলেছেন, ‘বিষয়টি আসলে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ক্ষমতা প্রদর্শন। কিন্তু শিক্ষা এবং ধর্মকে কখনোই মেলানো উচিত নয়।’

বিরোধীরাও বলেছেন, শিক্ষায় রামচরিতমানস বা মহাভারতকে জোড়ার বিরোধী নন তারা। তবে বিশেষ একটি ধর্মের পুরাণে গুরুত্ব না দিয়ে বাকি ধর্মগ্রন্থগুলোকেও ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনের জন্য ব্যবহার করা হোক।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us