প্রতিমা ভাঙচুরে হিন্দু যুবক; অথচ মিডিয়া নীরব

তারেকুল ইসলাম | Sep 04, 2021 08:35 am
প্রতিমা ভাঙচুরে হিন্দু যুবক

প্রতিমা ভাঙচুরে হিন্দু যুবক - ছবি : সংগৃহীত

 

সম্প্রতি নড়াইলের শোলপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এক হিন্দু যুবক গ্রেফতার হয় এবং সে আদালতে নিজের দোষ স্বীকারও করেছে। কী উদ্দেশ্যে এই অপকর্মটি সে করলো– তা এখনো তদন্তাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ। লক্ষণীয় হলো, এ ঘটনায় মূলধারার মিডিয়াগুলোর কোনো হইচই দেখা যায়নি!

এছাড়া, এ বছরের বিগত মার্চে বগুড়ায় প্রতিমা ভাঙচুরসহ একটি মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পরে জানা যায়, সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যকার ভূমি বিরোধই সে ঘটনার মূল কারণ। তখনো এ বিষয়ে মিডিয়ার মাতামাতি চোখে পড়েনি।

অথচ হরহামেশা দেখা যায়, সংখ্যালঘু-সম্পর্কিত এ ধরনের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে দোষীদের পরিচয় জানার আগপর্যন্ত একশ্রেণীর অতিউৎসাহী মিডিয়া কথিত ‘মৌলবাদ’ আর ‘সাম্প্রদায়িকতা’র জিগির তুলে ইসলামপন্থী ও আলেম-ওলামার ওপর অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গুটিকয়েক ঘটনায় দোষীদের পরিচয় প্রকাশ পেলে যখন দেখা যায়, আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বরং ঘটনা পুরো উল্টো, তখন সেসব মিডিয়া চুপসে যায় এবং নিরবে পাশ কেটে যায়।

চলতি বছরের জুনেই চট্টগ্রামে অবস্থিত প্রবর্তক সংঘ নামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইসকনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ আনে। সংগঠনটি একইসাথে ইসকনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতার পরিকল্পনা করারও অভিযোগ তোলে। অথচ এ বিষয়টি মূলধারার বেশির ভাগ মিডিয়া লক্ষণীয়ভাবে এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবর্তক সংঘ যদি কোনো মুসলিম সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতো, তাহলে নিঃসন্দেহে মিডিয়া যে তোলপাড় করে ফেলতো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

যাই হোক, আমাদের দেশে সময়ে-সময়ে মন্দিরে বা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে রহস্যময় ‘দুর্বৃত্ত’দের হামলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে। এ বছরের জুলাই মাসে কোরবানির ঈদের পর দিন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার একটি গ্রামের কালীমন্দিরের দরজায় কারা যেন দড়ি দিয়ে গরুর ভুঁড়ি বেঁধে রেখে যায়। মিডিয়ায় ‘দুর্বৃত্ত’ শব্দ উল্লেখ করলেও এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের পরিচয় জানা যায়নি। অথচ ঘটনার পরপরই ওই গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা করে। ওই কথিত দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করার আগেই সেখানকার মুসলমানদেরকে ক্ষমা প্রার্থনা করার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে পড়তে হলো!

তাহলে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের ন্যক্কারজনক স্যাবোট্যাজ মুসলমানদের ‘সাম্প্রদায়িক’ হিসেবে চিত্রিত করা এবং তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত কিনা– এমন প্রশ্ন ভাবনার বিষয়। কেননা গুটিকয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া এরকম প্রায় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মিডিয়ায় তথাকথিত ‘সাম্প্রদায়িকতা’র জিগির তোলা হলেও ওই রহস্যময় ‘দুর্বৃত্ত’দের পরিচয় কস্মিনকালেও আর জানা যায় না।

বিগত ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ফেসবুকে মুসলিম নামধারী একটি আইডি থেকে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে সুজন কুমার নামে এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সে ফেসবুকে ‘হাসান রুহানি’ নামে আইডি খুলে ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করতো।

ওই যুবককে তখন দু’দিনের রিমান্ডে নেয়া হলেও তার পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য কী ছিল– সে বিষয়ে কোনো আপডেট আজ পর্যন্ত মিডিয়ায় আসেনি। কিন্তু তার উদ্দেশ্য বুঝতে নিশ্চয়ই কষ্ট হয় না। অথচ হিন্দু হওয়ায় মিডিয়া তাকে ‘জঙ্গি’ বানায়নি, কিন্তু মুসলিম হলে ব্যাপারটা নিশ্চয়ই ভিন্ন হতো।

যাই হোক, মুসলিম ছদ্মবেশ ধারণ করে স্যাবোট্যাজ ঘটিয়ে মুসলমানদের বদনাম করার তরিকা তো ভারতীয় উগ্রবাদী মুসলিমবিদ্বেষী সংগঠন আরএসএস ও বিজেপি'র। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি এলাকায় বোরকা পরে মন্দিরে গরুর গোশত ছুঁড়ে পালানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) এক কর্মী।

এছাড়া, ভারতজুড়ে যখন ‘নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছিল, ঠিক তখন মুসলমানদের বদনাম করার উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় মুসলিম ফেজটুপি পরে ছদ্মবেশে ট্রেনে ভাঙচুর চালানোর সময় আটক হয় ছয় বিজেপি কর্মী।

ওই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এক প্রতিবাদ সমাবেশে বলেছিলেন : 'বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না। ওরা হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট পেয়েছি, বিজেপি তাদের কর্মীদের জন্য ফেজটুপি কিনছে, যাতে সহিংসতার সময় ছবি তুলে মুসলিম সম্প্রদায়ের বদনাম করতে পারে। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করছে।' (২০ ডিসেম্বর ২০১৯, সংবাদ প্রতিদিন)।

সুতরাং, ছদ্মবেশে স্যাবোট্যাজ ঘটিয়ে মুসলমানদের অপবাদ দিয়ে কলঙ্কিত করা এবং হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা বাঁধানো আরএসএস ও বিজেপি’র পুরনো ঘৃণ্য কৌশল। আর ওই একই কৌশল এদেশীয় হিন্দুত্ববাদী শিবসেনাদেরও প্রয়োগ করতে দেখা যায়। ২০১৯ সালের জুলাইতে প্রিয়া সাহা আমেরিকায় গিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে বাংলাদেশে 'মুসলিম মৌলবাদী গোষ্ঠী' তার ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তার জমি কেড়ে নিয়েছে। অথচ তার গ্রামের স্থানীয় হিন্দু নেতারাই সংবাদমাধ্যমে বলেছিল যে জমি বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও হয়রানি করতেই পরিকল্পিতভাবে রাতের বেলায় প্রিয়া সাহা তার ভাইয়ের জমিতে সাজানো অগ্নিসংযোগ ঘটান (২১ জুলাই ২০১৯, দেশ রূপান্তর)।

যাই হোক, সাধারণত এ দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর বা উপাসনালয়ে কোনো ধরনের আক্রমণ বা হামলা হলেই মিডিয়া সেটাকে ব্যাপকভাবে হাইলাইট করে থাকে। হাইলাইট করুক তাতে সমস্যা নেই; কিন্তু সেটার উদ্দেশ্য যদি হয় অনর্থক ‘সাম্প্রদায়িকতা’র ধোয়া তোলা, তাহলে তো সমস্যা বটেই। কারণ এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার নেপথ্য ইস্যু সাম্প্রদায়িকতা নয়, বরং বেশিরভাগ ঘটনায় প্রধানত ভূমিদস্যুতা ও ব্যক্তিগত কায়েমি স্বার্থ জড়িত থাকে। আর সাম্প্রদায়িকতার হুজুগের আড়ালে সেসব অপরাধ প্রকারান্তরে চাপা পড়ে যায়।

সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা যাচাই-বাছাই করার আগেই একতরফাভাবে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলে কখনো আকারে-ইঙ্গিতে আবার কখনো সরাসরি এদেশের আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের অপবাদ দেয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। আর এই বিশেষ অপবাদভিত্তিক বয়ান জারি রাখে এ দেশেরই একশ্রেণীর অসাধু সেকুলার মিডিয়া। যার ফলে সংখ্যালঘু ট্রাম্পকার্ড নিয়ে এপারে রাজনীতি করার সুযোগ পায় তথাকথিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী ও বাম-সেকুলার পক্ষ আর ওপারে মুসলিমবিদ্বেষী এজেন্ডা চরিতার্থ করে হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-বিজেপি-বজরং গোষ্ঠী।

বাংলাদেশী সেসব মিডিয়ার সূত্রে ভারতীয় মিডিয়াতেও অপপ্রচার চালানো হয় যে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে। সেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারছে… ইত্যাদি। আর এ সুযোগে উগ্রবাদী ক্ষমতাসীন বিজেপি ও আরএসএস ভারতীয় মুসলমানদের আরো অত্যাচার করার সুযোগ পায় এবং মুসলিমবিদ্বেষী প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ভোট বাগানোর চেষ্টা করে।

এ বছরের মার্চে সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় কিছু অতিউৎসাহী মিডিয়ার বিতর্কিত ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে হেফাজতে ইসলাম নামে দেশের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন বিবৃতি দেয়।

এখানে প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সেই বিবৃতি থেকে একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরছি : 'হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয় ও বাড়িঘরে যখনই কোনো ধরনের হামলা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তখনই আমাদের দেশের কতিপয় ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া লক্ষণীয়ভাবে হেফাজতে ইসলাম এবং দেশের ওলামায়ে কেরাম ও মাদরাসার ওপর দায় চাপিয়ে বিভ্রান্তিকর ও প্রোপাগান্ডামূলক সাংবাদিকতার চর্চা করে, যা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী। সুনামগঞ্জের শাল্লার ঘটনা নিয়ে কয়েকটি ভারতপন্থী মিডিয়া ঘটনার গভীর অনুসন্ধান ও সংবাদের ভেরিফিকেশন নিশ্চিত না করেই সঙ্ঘবদ্ধভাবে হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। অথচ পরবর্তীতে ঘটনার ভিন্ন বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে। এটিকে আমরা ইসলামবিদ্বেষী হলুদ সাংবাদিকতার ‘টেক্সটবুক এক্সাম্পল’ হিসেবে আখ্যায়িত করছি।' (২১ মার্চ ২০২১, নয়া দিগন্ত)।

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান ও ধর্মপ্রাণ গণমানুষের দেশ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এখানকার ভোটের রাজনীতিতে ইসলামপন্থী ও ইসলামমনা জাতীয়তাবাদীদেরই আধিপত্য বেশি। যে কারণে এদেশে রাজনৈতিকভাবে বাম-সেক্যুলার গোষ্ঠী কার্যত অপাংক্তেয়; ফলে তারা গণবিচ্ছিন্নও। এদেশে ইসলামকে তারা তাদের আদর্শিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে। তাই ইসলামবিদ্বেষ হলো তাদের আদর্শিক হাতিয়ার। আর সেই হাতিয়ার তারা সংখ্যালঘু হিন্দু ইস্যুতেই যথেচ্ছ ব্যবহার করার সুযোগ পায়। ফলে কোনো হিন্দুবাড়ির টিনের চালে নারিকেল গাছ থেকে কোনো ডাব পড়ার শব্দ হলেও তারা মনে করে, এই বুঝি মৌলবাদীরা হামলে পড়েছে!

এছাড়া, আমাদের মূলধারার বেশির ভাগ মিডিয়ায় বাম-সেক্যুলারদের সংখ্যাগত আধিপত্য থাকার কারণে তারা তাদের আদর্শিক এজেন্ডা চরিতার্থ করার সুযোগ পায়। ফলে পেশাগত নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চেয়েও স্বীয় আদর্শিক এজেন্ডাকেই বেশি প্রাধান্য দিতে দেখা যায় মিডিয়ায় কর্মরত এক শ্রেণীর ইসলামবিদ্বেষী বাম-সেক্যুলারদের।

পরিশেষে বলব, উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে। কিন্তু এখানে সুশাসন বা আইনের শাসনের অভাবে দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে দুর্বল-অসহায়রা ফ্যাসিবাদ ও দুঃশাসনের শিকার। দুর্বল সে হিন্দু হোক বা মুসলিম হোক, তার বাড়িঘর ও জানমালের ওপর সবলের হামলা, লুটপাট ও জমি দখল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সুতরাং, মিডিয়ার উচিত আলাদাভাবে ‘সংখ্যালঘু বর্গ’ তৈরি না করে দেশের সবাইকে নাগরিক হিসেবে দেখা এবং দল-মত ও ধর্ম নির্বিশেষে যে কারো নাগরিক ও মানবিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক

Email: tareqislampt@gmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us