দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট, বদলায় দ্বিগুণ গতিতে
করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট - ছবি সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের আরো একটি নতুন রূপ (‘ভেরিয়েন্ট’)-এর সন্ধান মিলল দক্ষিণ আফ্রিকায়। শুঁড়ের মতো দেখতে নিজের স্পাইক প্রোটিনগুলোকে অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে বার বার বদলে ফেলতে পারে করোনাভাইরাসের এই নতুন রূপটি। ডেল্টাসহ অন্য রূপগুলোর এই নিজেকে বদলে ফেলার হারের অন্তত দ্বিগুণ গতি দেখা গেছে এই নতুন রূপে।
ফলে, মানবশরীরে থাকা শত্রু প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিগুলোকে এই নতুন রূপটি ধোঁকা দিতে পারে আরো বেশি দক্ষতার সাথে। তাই আরো দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেব্ল ডিজিজেস (এনআইসিডি)’-এর তরফে সোমবার এ কথা জানানো হয়েছে। এও জানানো হয়েছে, মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই রূপটির সন্ধান মেলার পর গত ৩-৪ মাসে ভাইরাসের এই রূপটি থেকে সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে বাড়তে দেখা গেছে। নতুন রূপটির নাম দেয়া হয়েছে ‘সি.১.২’।
করোনাভাইরাসের এই রূপের চেহারা ও চরিত্রের বিশেষত্ব এবং তার থেকে সংক্রমণের হার কতটা, তার উপর একটি গবেষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যান্ড সিকোয়েন্সিং প্ল্যাটফর্ম। গত সপ্তাহে সেই গবেষণাপত্রটি পৌঁছেছে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকার পিয়ার রিভিউয়ারদের হাতে।
ভারতে করোনাভাইরাসের যে ডেল্টা রূপের প্রথম সন্ধান মিলেছিল এ বছরের গোড়ার দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন ওই রূপের দৌলতেই সংক্রমণ ঘটছে সবচেয়ে বেশি। তবু তারই মধ্যে এই নতুন রূপটির নিজের স্পাইক প্রোটিনকে অস্বাভাবিক দ্রুত হারে বদলে ফেলার ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের নজর কেড়েছে বলে এআইসিডি-র তরফে জানানো হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গত মে মাসে প্রথম সন্ধান মেলার পর থেকে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা রোগীদের যে পরিমাণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে তার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ রোগীকে এই নতুন রূপে আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছে। যদিও আগে এই রূপটি থেকে সংক্রমণের হার যা ছিল (০.২ শতাংশ) তা কিন্তু অগস্টে একলাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। হয়েছে ২ শতাংশ।
এআইসিডি-র গবেষক পেনি মুর সোমবার একটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 'করোনাভাইরাসের এই নতুন রূপটি মানব শরীরের অ্যান্টিবডিগুলোকে কতটা বেশি ধোঁকা দিতে পারে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি, পরীক্ষালব্ধ পর্যাপ্ত তথ্যাদির অভাবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন যে কোভিড টিকাগুলো দেয়া হচ্ছে সেগুলো এই রূপের সংক্রমণকে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছতে দেবে না, রোগীর মৃত্যু ডেকে আনবে না, এমন আস্থা আমাদের রয়েছে এখন পর্যন্ত।'
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা